গাজীপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) প্রতিষ্ঠার ২৭তম বর্ষে উপনীত হচ্ছে ২১শে অক্টোবর। দেশের একমাত্র উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষা নির্ভর এ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সালের ২১শে অক্টোবর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সারা দেশে উন্মুক্ত এবং দূরশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষা মহাসরণী থেকে ঝরে পড়া, সুযোগবঞ্চিত নারী-পুরুষ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দেশের সকল বয়সের সকল মানুষের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার ২৭ বছরে এসে ৫৭টি আনুষ্ঠানিক একাডেমিক প্রোগ্রাম ও ১৯টি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রোগ্রামে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থী দেশজুড়ে ১৫৭৬টি স্টাডি সেন্টারে মাধ্যমিক থেকে পিএইচডি শিক্ষা পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করছে। সারা দেশে ১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্র, ৮০টি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি তাদের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তথ্য প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সুযোগ সবার জন্য অবারিত করেছে। শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসায়, আইন, বিজ্ঞান, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে একাডেমিক প্রোগ্রামে স্নাতক (সম্মান) এবং মাস্টার্সসহ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা এখান থেকে স্বল্প খরচে লেখা পড়া করে পেশাগত ক্ষেত্রে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছে। বেতার ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান, ওয়েব রেডিও, ওয়েব টেলিভিশন বাউবি টিউব, ফেসবুক, ই-বুক, মোবাইল অ্যাপ্স, ইউটিউবভিত্তিক বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীদেরকে অতি সহজেই পঠনপাঠন ও শিক্ষণের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
পাশাপাশি ই-লার্নিং সেন্টার, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র, ওপেন এডুকেশন রিসোর্স, লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং অনলাইন এডুকেশন, অনলাইন ভর্তি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ হাজার টিউটর, ১৫ হাজার পরীক্ষক এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, কর্মকাণ্ড ইত্যাদি সফলভাবে পরিচালনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি ভার্চুয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের দক্ষতা বাড়াতে দক্ষিণ কোরিয়া, কুয়েত, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া অনলাইনে বাউবি’র এইচএসসি ও বিএ প্রোগ্রাম সমপ্রতি চালুর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গাজীপুরে ৩৫ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস নয়নাভিরাম সবুজ বৃক্ষরাজি, প্রকৃতির সজীবতা, মক ভিলেজ (চিরন্তন গ্রাম), স্বাধীনতার চিরন্তন স্মারক ভাস্কর্য বিশ্ববিদ্যালয়কে এক মনোরম সুদৃশ্য ক্যাম্পাসে পরিণত করেছে।