ইয়াবা পাচারে আন্তর্জাতিক নারী চক্র সক্রিয় চট্টগ্রামে। যাদের ৫ জন ধরা পড়েছে চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর সদস্যদের হাতে। এদের মধ্যে রয়েছে এক নারী ভারতীয় নাগরিকও। তাদের কাছ থেকে র্যাব সদস্যরা উদ্ধার করেছে ২০ হাজার ইয়াবা। র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের কর্মকর্তা এএসপি কাজী মো. তারেক আজিজ গতকাল সোমবার সকালে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রোববার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে নগরীর জাকির হোসেন সড়কের চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের সামনে একটি মাইক্রোবাস আটকে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবাসহ ৫ নারী সদস্যকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন-রোজিনা বেগম (৫২), নাইমা বেগম (২৮) শাহনাজ বেগম (৫০), সুমাইয়া ইসলাম (২১) ও ভারতীয় নাগরিক কোমল কর (২৮)। আটক পাঁচজনের মধ্যে দুই পরিবারের চারজন মা-মেয়ে বলে জানিয়েছেন, র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের এই কর্মকর্তা।
তিনি জানান, আটক কোমল করের বাড়ি ভারতের উত্তরাখন্ডের নানকমাথা এলাকায়। আটক রোজিনা বেগমের বোনের মেয়ে কোমল কর। রোজিনাও ভারতের উত্তরাখন্ডের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু এক বাংলাদেশিকে বিয়ে করে তিনি ধর্মান্তরিত হন। পরে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে বসবাসের মাধ্যমে এদেশের নাগরিকত্ব পান। এএসপি তারেক আজিজ বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল, আন্তর্জাতিক ইয়াবা সিন্ডিকেটের পাঁচজন নারী সদস্য একটি মাইক্রোবাসে করে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা নিয়ে রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরী অতিক্রম করবে। এই চক্রকে ধরতে আমরা নগরীর বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু করি। শেষ পর্যন্ত আমরা সন্ধ্যার দিকে নগরীর জাকির হোসেন রোডে এসে মাইক্রোবাসটি আটকাতে সক্ষম হয়েছি। সেখানে দুই নারীর দুটি ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারেক আজিজ বলেন, আটক নারীরা জানিয়েছেন, বিভিন্নসময় তারা কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে, এমনকি ভারতেও বেশ কয়েকবার তারা ইয়াবা নিয়ে গেছেন। এবারের চালানটি তারা ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, ভারতীয় নাগরিক কোমল কর মাঝে মাঝে ঢাকায় আসেন এবং খালা রোজিনার বাসায় ওঠেন। তাদের এই চক্রে আরো ভারতীয় নাগরিকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিক সক্রিয় রয়েছে। আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। গ্রেপ্তারকৃত পাচারচক্রের নারীদের দেওয়া তথ্যমতে, আকাশপথেও এই চক্রের মাধ্যমে ইয়াবা পাচার চলছে। পাচার চক্রের নারী সদস্যরা নানা কৌশলে ইয়াবা মধ্যপ্রাচ্যসহ আমেরিকায় নিয়ে যাচ্ছে। এমন তথ্য পাওয়ার পর সড়ক ও আকাশপথে র্যাবের নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। পাচার চক্রের সদস্যদের অবস্থান নিশ্চিত করে তাদের গ্রেপ্তারের চেস্টা চলছে।
সূত্রমতে, পাচার চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন কৌশলে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা চট্টগ্রামে নিয়ে আসছে। যেখান থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হয়ে আকাশ পথে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনী, কুমিল্লা সীমান্তপথে ইয়াবা পাচার করছে। এছাড়া ঢাকা শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ভারতে ইয়াবা পাচার চলছে।