অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ও যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ সংস্থাটির জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা দুটি দায়ের করা হয়। এতে শামীমের মাকেও আসামি করা হয়েছে ।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা এবং খালেদের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। এ বিষয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত বলেন, দুদকের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত আরো করো নাম যুক্ত হলে চার্জশিটে আসামি করা হবে।
শামীমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তিনি ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
এছাড়া শামীমের বাসা থেকে উদ্ধারকৃত নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ও ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশী মুদ্রা, শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরো ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদার এবং জিকেবি এন্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআরবাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
দুদকের অনুসন্ধানে জি কে শামীমের মা আয়েশা আক্তারের কোনো বৈধ আয়ের উৎস খুজেঁ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ মোট ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে ২৭ (১) ধারা ও দন্ডবিধি ১০৯ ধারায় দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মা ও ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে, বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৯০ লাখ ১৬ হাজার ৭০৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া জায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া গত ১৮ই সেপ্টেম্বরে র্যাবের অভিযানে তার গুলশানের বাসা থেকে ১৭ লাখ ৯৯ হাজার ১৫০ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে কিংবা জিজ্ঞাসাবাদে এর কোনো উৎস দেখাতে পারেনি খালেদ মাহমুদ। অর্থাৎ তার বিরুদ্ধে মোট ৫ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগে উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে দুদক আইনে ২৭ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য গত ১৮ই সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। অভিযানে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশ কয়েকজন নেতার ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এর পরপরই গত ৩০শে সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করে সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের টিম। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সালাউদ্দিন আহমেদ, সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী।