গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ও সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমি সিং। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ও সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির স্যার আমাদের কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের ক্লাস নিতেন। ক্লাস শেষে তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে দেখা করতে বলতেন। পরে তিনি আমার সঙ্গে ফ্রিভাবে কথা বলা ও আমার সঙ্গে বন্ধুসুলভ আলোচনা করার জন্য অনুরোধ করেন এবং আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে একসেপ্ট করার জন্য অনুরোধ করেন। আমি তার আবেদন গ্রহণসহ স্যারের সঙ্গে ফেসবুক বন্ধুত্ব করি। তারপর তিনি আমার ফেসবুক মেসেঞ্জারে আপত্তিকর ম্যাসেজ পাঠান। এতে আমি খুব বিব্রতবোধ করি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আমাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দেয়ার পাশাপাশি আপত্তিকর ম্যাসেজ পাঠাতে থাকেন। তিনি আমার পেটে বাচ্চা দেয়ার প্রস্তাবও দেন। আমি এসব আপত্তিকর ম্যাসেজ অন্য শিক্ষকদের কাছে জানানোর কথা বললে তিনি আমাকে হত্যার হুমকি দেন। হুমায়ুন কবির স্যারের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী শিক্ষক আছেন তাদের দিয়েও আমাকে দেখিয়ে নেবে এমন হুমকিও দেন। তিনি আরও হুমকি দেন, আমার কথায় রাজি না হলে বাংলাদেশ থেকে কোনদিন আমার জন্মভূমি নেপালে যেতে দেবে না। বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে অধিকাংশ শিক্ষকদের জানিয়েও কোন ফলাফল পাইনি। সর্বশেষ সদ্য পদত্যাগকারী উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির স্যারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত করতে ইউজিসির একটি তদন্ত টিম বিশ্ববিদ্যালয় এলে আমি তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় , ইউজিসি কমিটির সদস্যরা গত ২ মাসেও হুমায়ুন স্যারের বিরুদ্ধে আমার আনিত অভিযোগের কোন তদন্ত করেননি এবং আমাকে আশানুরূপ কোন ফলাফলও দিতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে আজ আমি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে সংবাদ সম্মেলন করছি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে স্যারের অপকর্মের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি বাঁচতে চাই। ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চেয়ে শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের সাথে কথা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসার ড. সাজাহান বলেছেন, শিক্ষক কর্তৃক যৌন নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ এখনও আমার কাছে পৌছায়নি। তবে, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর এমন ঘটনা প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।