কাঠমাণ্ডু সফররত প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘সুখী নেপাল, সমৃদ্ধ নেপাল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতায় দেশটির পাশে থাকবে বাংলাদেশ। স্থানীয় ফেয়ারফিল্ড ম্যারিয়ট হোটেলে নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কো চেয়ার পুষ্প কমল দহল (প্রচণ্ড)-এর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, সাক্ষাৎ-বৈঠকে প্রেসিডেন্ট দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে চমৎকার উল্লেখ করে গণতন্ত্রের পথে দেশটির অভিযাত্রার জন্য অভিনন্দন জানান। ‘সুখী নেপাল, সমৃদ্ধ নেপাল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশও দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা ভিশন ২০২১ এবং ২০৪১ গ্রহণ করেছে। এ ব্যাপারে দু’দেশই পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে লাভবান হতে পারে। প্রেসিডেন্ট হামিদ বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল সব সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে একই মনোভাব পোষণ করে এবং একে অপরকে সমর্থন করে। ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রেসিডেন্ট। জবাবে দহল বলেন, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক চমৎকার।
এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বহুপাক্ষিক পর্যায়ে উন্নীত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্পর্ক সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে এটি কয়েকগুণে বাড়ানো সম্ভব। এসময় তিনি সড়ক, রেল, আকাশ পথে দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন বলে জানান প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন। ওই বৈঠকের কাছাকাছি সময়ে অভিন্ন ভেন্যুতে নেপাল পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ারপারসন (স্পিকার) গনেশ প্রসাদ তিমিলসিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেপালের জনগণ বিশেষ করে বুদ্ধিজীবীদের সমর্থন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ইতিবাচক অবদান রেখেছে। এজন্য তিনি নেপালের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা পূনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৭০ মিলিয়ন মানুষের একটি বড় বাজার। বাণিজ্য ভারসাম্যে আনতে চাইলে বাংলাদেশ নেপালকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে আলোচনা করলে দু’দেশের বাণিজ্য বাড়ার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট।
তিমিলসিনা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক পুরনো ও আন্তরিক। দু’দেশের সংস্কৃতির মধ্যে মিল রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল উভয় দেশই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করছে অথচ দুটি দেশের কেউই এর জন্য দায়ী নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দু’দেশ একত্রে কাজ করতে পারে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে। বৈঠকে সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস, প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম শামীম-উজ-জামান উপস্থিত ছিলেন।