জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রিজিয়া পারভীন। নিজের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। চলচ্চিত্রে যেমন তার গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে তেমনি একক অ্যালবামের গানগুলোও হয়েছে প্রশংসিত। তবে এখন বছরের বেশিরভাগ সময়ই আমেরিকায় থাকেন এ শিল্পী। দীর্ঘদিন পর দুই সপ্তাহ হলো দেশে ফিরেছেন। এদিকে আমেরিকায় থাকলেও সেখানে গান নিয়েই ব্যস্ত থাকেন তিনি। বিশেষ করে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে তিনি প্রবাসী বাঙালিদের আয়োজনে নিয়মিত শো করে থাকেন। গত কয়েকমাস শো নিয়েই ব্যস্ততায় কেটেছে তার।
দেশে এসে দিন কয়েক বিশ্রামে ছিলেন তিনি। এরপরই ফের ব্যস্ততায় ডুব দিয়েছেন। গানের পাশাপাশি বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গেও সুন্দর সময় কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে রিজিয়া পারভীন বলেন, অনেক দিন পর দেশে ফিরলাম। খুবই ভালো লাগছে। সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, আড্ডা হচ্ছে। বিশেষ করে কাছের বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ভালো সময় কাটছে। এর বাইরে টিভি অনুষ্ঠান ও স্টেজ শোরও প্রস্তাব রয়েছে। সামনে হয়তো সেগুলোতে অংশ নেব। গতবার দেশে এসে রিজিয়া পারভীন নিজের নতুন একক অ্যালবামের কাজ শুরু করেছিলেন। ওপার বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী-সুরকার নচিকেতার সুরে এ অ্যালবামটির কাজ চলছিল। তবে দেশের বাইরে ব্যস্ত থাকায় সেটির কাজে কিছুটা বিরতি ছিল। এবার এ অ্যালবামের কাজ ভালোভাবে শেষ করতে চান রিজিয়া। কয়েকটি গানের ট্র্যাক তৈরি হয়ে আছে। সেগুলোতে কন্ঠ দেবেন। আর নতুন গান নিয়েও বসবেন। এ বিষয়ে রিজিয়া পারভীন বলেন, এখন তো সিঙ্গেল করছে সবাই। একটি গান প্রকাশ করছে ভিডিওসহ। কিন্তু অ্যালবামের আবেদন অন্য কিছুতে নেই। তাই পূর্ণ অ্যালবামটি করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এর কাজ অনেকখানিই এগিয়েছে। নচিকেতা দাদা এর সুর ও সংগীত করছেন। কিছুদিন হলো দেশে ফিরেছি। স্টেজ শো, টিভি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এ অ্যালবামের কাজ এগিয়ে নেয়ার ইচ্ছে রয়েছে। বাকি গানের কাজ দ্রুতই শেষ করতে চাই। আশা করছি খুব ভালো কিছু গান শ্রোতারা এর মাধ্যমে পাবেন। সিনেমার গান করার ইচ্ছে কি আছে? রিজিয়া বলেন, আমি এক সময় নিয়মিত প্লেব্যাক করেছি। আমার গাওয়া অনেক গানই শ্রোতারা পছন্দ করেছেন। তাই প্লেব্যাকের প্রতি আলাদা একটা টান রয়েছে আমার। কিন্তু এখন ভালো গান ছাড়া আসলে গাইতে চাই না। যদি ভালো প্রস্তাব পাই তবে অবশ্যই সিনেমার গান করার ইচ্ছে আছে। তবে সেটা মনের মতো হতে হবে। এখন মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কেমন মনে হয় আপনার কাছে? রিজিয়া বলেন, এখন আগের মতো কিছুই নেই। সময় বদলেছে, অবস্থা বদলেছে। একটা সময় মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি যে কতটা জমজমাট ছিলো সেটা যারা কাজ করেছেন তখন তারাই বলতে পারবেন। প্রতিটি উৎসবে নতুন অ্যালবামের পরিকল্পনা হতো। বছর জুড়েই কাজ হতো। নতুন গানের রেকর্ডিং করারও সময় মিলতো না। শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক, অডিও কোম্পানি সবাই ব্যস্ত থাকতেন নতুন গানে। একটা পরিবার হয়ে কাজ করতাম আমরা। কিন্তু এখন অ্যালবাম নেই। আগের সেই উৎসবমুখর পরিবেশও নেই। সব কিছু ডিজিটাল হয়ে গেছে। গান প্রকাশ ও শোনার মাধ্যম পাল্টেছে। এর ফলে সহজ হয়েছে অনেক কিছু। কিন্তু গানকে ঘিরে যে মুখরতা ছিল সেটা মিস করি খুব। আমি মনে করি সিঙ্গেলের পাশাপাশি কিছু হলেও অ্যালবাম প্রকাশ করা উচিত। এর আবেদন অন্যরকম। এখনকার শিল্পীদের গান কি শোনা হয়? কেমন লাগে? রিজিয়া বলেন, মাঝেমধ্যে শোনা হয়। অনেকে ভালো গাইছে, সুর করছে, লিখছে। তবে ভালো কথা, সুর ও সংগীতের প্রতি আরো মনোযোগ দেয়া উচিত। এখন অডিওর চেয়ে ভিডিওকে গুরুত্ব বেশি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু গানে অডিওকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। কারণ ভালো কথা-সুরের গানই কেবল টিকে থাকে।