× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলাদেশের আরেকটি হতাশার দিন

শেষের পাতা

ইশতিয়াক পারভেজ, ইন্দোর (ভারত) থেকে
১৬ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার

হতাশায় খেলা ছেড়ে দিয়ে ইংল্যান্ড চলে গিয়েছিলেন সিলেটের আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু ক্রিকেট থেকে বেশিদিন দূরে থাকতে পারেননি। আবার সংকল্প নিয়ে ফিরে এসেছেন। অবশেষে জাতীয় দলে জায়গাও হয়েছে তার। ক্রিকেটপ্রেমীদের হতাশ করেননি তিনি নিজেও। ইন্দোরে ভারতের প্রথম ইনিংসে একাই নিয়েছেন চার উইকেট। এমনকি ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকেও শূন্য রানে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তিনি। তাতে কী! থামানো যায়নি ভারতের রানচাকা।
কারণ দলের অন্য কোনো বোলার সঙ্গ দিতে পারেননি রাহীকে। আরেক সিলেটি পেসার ইবাদত হোসেন চৌধুরীর টেস্ট বোলিং সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। আর টাইগার স্পিনাররাও ছিলেন একেবারেই ছন্দহীন। মুমিনুল হকের দলের করা ১৫০ রানের ইনিংসের জবাবে ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৯৩ রান। ইন্দোর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে তাদের লিড ৩৪৩ রানের।

আজ তৃতীয় দিনও তারা ব্যাটিং করবে অন্তত মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত। যদি না তার আগে বাকি ৪ উইকেট তুলে নিতে পারে বাংলাদেশ। রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে সামনে ইনিংস হারের শঙ্কা। ৩২ রানে জীবন পাওয়া মায়াঙ্ক আগারওয়াল আর কোনো সুযোগ দেননি। আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত ৩৩০ বলে ২৪৩ রানের চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস। তাকে সঙ্গ দিতে এসে পুজারা রাহানের পর জাদেজা ফিফটি পেরিয়ে আছেন অপরাজিত। সিরিজের এই টেস্ট যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো দুই দলের পার্থক্য। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে টাইগারদের কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও তা স্বীকার করে নিলেন। তিনি বলেন, ‘বাজে দিন ছিল। ভারতকে কৃতিত্ব দিতে হয়। তারাই শাসন করেছে।’

ডমিঙ্গোর কণ্ঠে হতাশার সুরও। মাত্র দুটি টেস্টে তিনি টাইগারদের সঙ্গে আছেন। প্রথমটিতে আফগানদের বিপক্ষে দেখেছেন হারের লজ্জা। আর ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের দু’দিনেই হারের আগাম বার্তা পেয়ে গেছেন। কেন এমন বেহাল দশা দলের? কোচ বলেন, ‘গোটা দলের কাঠামোরই পরিবর্তন দরকার। বিশেষ করে আমাদের একজন এমন তৃতীয় পেসার দলের জন্য বের করতে হবে যার ব্যাট করারও ক্ষমতা আছে। সাইফুদ্দিন ছিল কিন্তু ও ইনজুরিতে ভুগেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রায় অনেকগুলো দলই এমন উইকেট তৈরি করবে যেখানে স্পিনাররা সাহায্য পাবে না।’

দলের পাঁচ বোলারের মধ্যে রাহী ২৫ ওভার বল করে নিয়েছেন ৪ উইকেট খরচ করেছেন ১০৮ রান। আগের দিন তার শিকার রোহিত শর্মা।সেদিন তার বলে আউট হতে হতে ইমরুলের ভুলে বেঁচে যান মায়াঙ্ক। সুযোগ পেয়ে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। ত্রিপল সেঞ্চুরিও হয়ে যেতো। শেষ পর্যন্ত রাহীর দুর্দান্ত ক্যাচে থামেন তিনি। রাহানের সেঞ্চুরি পথেও বাঁধা হন টাইগারদের এই পেসার। ৮৬ রানে তাকে দেখান সাজঘরের পথ। কিন্তু ইবাদত ৩১ ওভার বল করে ১১৫ রান খরচ করে উইকেট তুলেছেন মাত্র একটি। স্পিনার তাইজুল ইসলাম ২৮ ওভার বল করে উইকেটহীন। তার চেয়ে এক ওভার কম বল করে মেহেদী হাসান ১২৫ রান খরচ করে ১ উইকেট পেয়েছেন। আর মাহমুদুল্লাহ ৩ ওভার খরচ করেছেন ২৪ রান। এক কথায় রাহী ছাড়া আর কোন বোলারই চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি ভারতকে। রাহীর মত বোলার না থাকার আক্ষেপ টাইগার কোচের কন্ঠে। ডমিঙ্গো বলেন,‘ও (রাহী) দারুণ একজন টেস্ট বোলার। সে ধারাবাহিকভাবে লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বল করতে পারে। সে এমন একজন যাকে অবশ্যই আমাদের ধরে রাখতে হবে।’

ব্যবধান পরিষ্কার বোলিং ব্যর্থতাতে। ভারত দেখছে ইনিংস জয়ের স্বপ্ন। ৪৯৩ করেও ইনিংস ঘোষণা করেনি। আজ শেষ চার উইকেটে চেষ্টা করবে নিরাপদ জায়গা থেকে ইনিংস ঘোষণা করতে। পরের ইনিংসে যাতে আর ব্যাট করতে না হয়। এখানেই দুই দলের টেস্ট খেলার সামর্থ্য ও শক্তির পার্থক্য স্পষ্ট। বাংলাদেশের কোচ বলেন, ‘ভারত তাদের পেস বোলিংয়ে অসাধারণ উন্নতি করেছে। একটা সময় তারাও দেশের বাইরে এমন ভুগতো। কিন্তু সেই জায়গা থেকে বের হয়ে এসেছে তারা। যা এখন বাংলাদেশকেও করতে হবে। এটাই করা উচিত। আরেকটা বিষয় অভিজ্ঞতাও অনেক পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। দেখেন গেল ৬ মাসে বাংলাদেশ খেলেছে মাত্র ২ টি টেস্ট ম্যাচ। আর ভারত সেখানে হয়তো ৩ মাসে তার তিনগুণ ম্যাচ খেলেছে। এখানেই দুই দলের অভিজ্ঞতার বড় পার্থক্য।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর