১লা ডিসেম্বর নেপালে শুরু হবে সাউথ এশিয়ান গেমসের (এসএ) ১৩তম আসর। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অন্যতম আকর্ষণ ফুটবল। যে ফুটবলে বাংলাদেশের হাতে প্রথম স্বর্ণ ধরা দিয়েছিল ১৯৯৯ সালে, এই নেপালেই। দ্বিতীয়বার ২০১০ সালে ঢাকায়। কিন্তু ২০১৬ সালে ভারতের গুয়াহাটিতে সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ৩-০ গোলে হেরে স্বর্ণ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। এবার সেই স্বর্ণ পুনরুদ্ধারের মিশন বাংলাদেশের।
বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ ফুটবল বাছাইয়ের মাঝপথে রয়েছে বাংলাদেশ। ৮ ম্যাচের চারটি শেষ হয়েছে ইতিমধ্যে।
মাঝে লম্বা বিরতি-চার মাসেরও বেশি। আগামী বছর ২৬ মার্চ ঢাকায় পঞ্চম ম্যাচটি খেলবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। বাছাই পর্বের এই লম্বা বিরতিতে এসএ গেমস নিয়ে ভাবতে চান জেমি ডে। বিশ্বকাপের খেলায় চার মাস গ্যাপ থাকলেও এসএ গেমসের জন্যই ওমান থেকে দলের সঙ্গে ঢাকায় ফিরেছেন জেমি ডে।
ওমান থেকে ঢাকায় ফেরার পর জেমি ডে বলেন, ‘আগে বলেছিলাম। এখনো বলছি-এখন আমাদের লক্ষ্য এসএ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’ এরইমধ্যে এসএ গেমসের দলও গুছিয়েছেন এই বৃটিশ কোচ। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি। এসএ গেমস ফুটবলে খেলবে অনূর্ধ্ব-২৩ দল। নিয়ম অনুযায়ী সিনিয়র কোটায় ৩ জন নিতে পারবেন কোচ। সিনিয়র কোটায় জেমি ডে’র প্রথম পছন্দ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। এর বাইরে আছেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান ও আক্রমণভাগের নাবিব নেওয়াজ জীবন। সময় বেশি না থাকায় আভাস দিলেন ৩ গোলরক্ষকসহ ২০ জনকে ডাকার। যে ২৩ ফুটবলার নিয়ে ওমান গিয়েছিলেন কোচ জেমি ডে তাদের মধ্যে ৯ জনের বয়স ২৩ বছরের বেশি। এর মধ্যে ইয়াসিন, জামাল ও জীবনকে রাখলে বাদ পড়বেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা, শহিদুল আলম সোহেল, ডিফেন্ডার রায়হান হাসান, মিডফিল্ডার সোহেল রানা, মামুনুল ইসলাম ও ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ। বয়স থাকলেও এসএ গেমসের দলে দেখা যাবে না ফরোয়ার্ড মতিন মিয়াকে। ২১শে নভেম্বর তার বিয়ে। কোচ জেমি ডে জানিয়েছেন, ‘মতিনকে রাখা হচ্ছে না। তার পরিবর্তে একজন মিডফিল্ডারকে নেবো আমি।’ বাকি ১৬ জনের সঙ্গে আরো ৪ যোগ করে এসএ গেমসের স্কোয়াড ঘোষণা করবেন জেমি ডে। তাদের মধ্যে দুইজন গোলরক্ষক। ওমান সফরে যাওয়া গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু থাকছেন এসএ গেমসের ক্যাম্পে। যোগ হওয়ার সম্ভাবনায় এগিয়ে দুই গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন ও মাহফুজ হাসান প্রীতম। ১৯ ও ২০ নম্বর খেলোয়াড় হবেন একজন ডিফেন্ডার ও একজন মিডফিল্ডার। ডিফেন্সে মঞ্জুরুর রহমান মানিক এবং সুশান্ত ত্রিপুরার মধ্যে একজনকে রাখবেন জেমি ডে। মিডফিল্ডার নেবেন জুয়েল রানা ও ফজলে রাব্বির একজনকে। এসএ গেমসে স্বর্ণ উদ্ধারে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ ভারত। যদিও ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজ এসএ গেমসের পর দেশটি আর স্বর্ণ পায়নি। জেমি ডে অবশ্য ভারতকেই প্রধান প্রতিপক্ষ ভাবছেন না, ‘হ্যাঁ, ভারত ফেভারিট। কিন্তু এখানে মালদ্বীপ আছে। নেপাল স্বাগতিক দল। ওরাও শক্তিশালী।’ নিজে স্বর্ণ ফিরিয়ে আনার কথা বললেও খেলোয়াড়দের কোনো চাপ দিতে চান না জেমি ডে, ‘আমি খেলোয়াড়দের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করতে চাই না। কিন্তু আমরা গেমসে ভালো কিছু করতে চাই। আর যে কোনো আসরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়া কঠিন কাজ। আমি বাস্তবতা বুঝি। মানুষ চায় চ্যাম্পিয়ন হই। আর আমি চাই সবসময় নিজেদের সেরাটা খেলা।’ সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২১ নভেম্বর শিষ্যদের নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করবেন এই বৃটিশ কোচ।