× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

৮ বছর পর সম্মেলন /পদ পেতে মরিয়া সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৭ নভেম্বর ২০১৯, রবিবার

সিলেট আওয়ামী লীগের কামরান এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তার সঙ্গে লড়াইয়ে নেই কেউ। সিলেট মহানগর সভাপতির পদে তিনি একাই প্রার্থী। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীর অভাব নেই। এই পদকে ঘিরে ইতিমধ্যে অর্ধডজন প্রার্থী আলোচনায় এসেছেন। চলছে জোর লবিং। পাশাপাশি জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ডজনখানেক। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।
৮ বছর নেতৃত্ব দিয়েও নিজের অবস্থান শক্ত করতে পারেননি শফিকুর রহমান চৌধুরী। এ কারণে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে তাকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। দীর্ঘ ৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট  জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। আগামী ৪ঠা ও ৫ই ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এই সম্মেলন।

এর মধ্যে ৪ঠা ডিসেম্বর মহানগর ও ৫ই ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এই সম্মেলনকে ঘিরে সিলেট আওয়ামী লীগের ভেতরে লবিং আর গ্রুপিংয়ের অন্ত নেই। পুরাতনদের পাশাপাশি এবার আলোচনায় এসেছেন নতুনরাও। তারাও এবার দুটি ইউনিটেরই সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইয়ে নেমেছেন। সম্মেলনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের বাকি থাকা ৬টি ইউনিটের সম্মেলন শেষ করেছে। এরপর তারা বর্ধিত সভা করে সম্মেলনের পুরোপুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সম্মেলনের জন্য গঠন করা হয়েছে উপ-কমিটিও। মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সিলেটের একাধিক বারের মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যও। কামরানের নেতৃত্বে থাকা সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা সুসংহত রয়েছে।

ওয়ার্ড পর্যায়ে দলের কার্যক্রমে তেমন কোন্দল নেই। পাশাপাশি বহিরাগত কিংবা লুটপাটকারীর সংখ্যাও কম। কামরান দীর্ঘদিন সভাপতির পদে থাকায় তিনি মহানগরের কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এবারো তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী। গতকাল পর্যন্ত তার সঙ্গে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেননি। বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মানবজমিনকে জানিয়েছেন, তিনি কর্মী। নেত্রী যেখানে তাকে দায়িত্ব দেবেন সেই দায়িত্ব তিনি পালন করবেন। দলের প্রয়োজনে তিনি যেকোনো স্থানে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।’ এদিকে এবার কামরান কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার দৌড়েও এগিয়ে রয়েছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে এবার প্রার্থী অর্ধ ডজন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদও এবার এ পদে প্রার্থী। তার সঙ্গে এবার এ পদে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার ও বিজিত চৌধুরী। দুইজনই শক্তভাবে লবিং চালাচ্ছেন। তরুণদের মধ্যে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিসিবি’র পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। গতবারও তিনি ছিলেন আলোচনায়।

এ ছাড়া এ পদে অধ্যাপক জাকির হোসেন, আজাদুর রহমান আজাদ, এটিএম হাসান জেবুল ও সালেহ আহমদও প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন। ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার জানিয়েছেন, ‘মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম শৃঙ্খলাপূর্ণ। আমাদের ভেতরে একতা থাকার কারণেই এমনটি হয়েছে। ভবিষ্যতেও সেটি বিরাজমান থাকবে।’ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে এবার মহারণ অবস্থা তৈরি হচ্ছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ইতিমধ্যে ডজনখানেক প্রার্থীর নাম আলোচনায় এসেছে। কেউ কেউ গণমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। জেলায় সভাপতি পদে ৫ প্রার্থীর নাম আলোচনায় এসেছে। এদের মধ্যে জেলার সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এবার সভাপতির পদে শক্তিশালী প্রার্থী।

শফিকুর রহমান চৌধুরী তার অবস্থান তৈরি করে রেখেছেন। তবে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, মন্ত্রী পরিবারের ঘনিষ্ঠজন ড. আহমদ কবির সভাপতির জন্য লবিং চালাচ্ছেন। সভাপতি পদে শফিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিয়েছেন। আর আসাদ উদ্দিন আহমদ মহানগরের বর্তমান পদে টিকে গেলে জেলায় কপাল পুড়তে পারে তার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের। দলের নেতারা জানিয়েছেন, এক পরিবার থেকে দুইজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদে না রাখার পক্ষে দলের হাইকমান্ড। এ জন্য মাসুক উদ্দিন আহমদের অপেক্ষা বাড়তে পারে। জেলা সাধারণ সম্পাদক নিয়ে এবারের লড়াই সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। কারণ সাধারণ সম্পাদক পদে যারাই ইতিমধ্যে প্রার্থী হওয়ার আভাস দিয়েছেন তারা অনেকেই যোগ্য নেতা। তবে এবারের উপজেলা সম্মেলনে চমক দেখাচ্ছেন তরুণ নেতা নাসির উদ্দিন খান। উপজেলা ইউনিটের প্রায় প্রতিটিতেই তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।

নিজ এলাকা বিয়ানীবাজারে সমঝোতার কমিটি না হওয়ায় ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেন। আর এতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন তিনি। উপ-দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী একই ভাবে ভূমিকা পালন করছেন। তবে জেলার সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই গড়ে তুলেছেন বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, সৈয়দ সুজাত আলী রফিক, শাহ ফরিদ, জগলু চৌধুরী ও সাইফুল ইসলাম দুলাল। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে একই কমিটির অধীনে চলার কারণে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কমিটিতে বিভক্তি ও কোন্দল জমাট বেঁধেছে। এ কারণে বর্তমানে সম্মেলন হওয়া ৮ কমিটি গঠনের পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় কোন্দল মিটমাট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে কেবল গোলাপগঞ্জ ছাড়া অন্য উপজেলাগুলোতে সফলতা পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। গোলাপগঞ্জ থেকে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার কারণে তার মতামতের উপর নির্ভর করছে এ উপজেলার কমিটি। জেলার নেতারা জানান, উপজেলা ও পৌর সম্মেলনের মাধ্যমে সিলেট আওয়ামী লীগ পরিশোধিত হচ্ছে। বহিরাগত ও আদর্শ বিরোধীদের বর্জন করা হচ্ছে। জেলার সম্মেলনে একই অবস্থা দেখা দেবে। যারা আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ ও ত্যাগী কর্মী তাদের করা হবে মূল্যায়ন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর