ইন্দোর টেস্টের তৃতীয় দিন বিকালেই নীরব হোলকার স্টেডিয়াম। ভারতের জয়ের উল্লাস নিয়ে ফিরে যান স্বাগতিক দর্শকরা। স্টেডিয়ামের ভেতর তখন সব আয়োজন সরিয়ে নেয়ার ব্যস্ততা। কিন্তু নিজেদের দল জিতলেও বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্সে অবাক অনেক ভারতীয়ও। বাংলাদেশি ক্রিকেপ্রেমীদের মনের অবস্থা যে ভালো নয় তা সহজেই অনুমেয়। এমনকি ইন্দোর প্রেসবক্সে উপস্থিত বাংলাদেশি সংবাদকর্মীরাও নীরবে সয়েছেন হারের যন্ত্রণা। মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশনের মিডিয়া ম্যানেজার রাজিব শিরোদকরের হঠাৎ প্রশ্ন- ‘মন খরাপ?’ প্রফেশনাল সংবাদকর্মী তাই জবাবে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছু না বলে শুধু হাসলাম। হাসি দেখে পরক্ষণেই তিনি বললেন, ‘আপনি কি জানেন, ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ এখনো শিশু? আমি বলতে চাইছি টেস্ট ক্রিকেটে এখনো বাংলাদেশের শিশুকাল চলছে।’
নিজের দেশ নিয়ে এমন মন্তব্য শুনলে যে কারোই রাগ হতে পারে।
এই কথার পর তিনিও বুঝলেন হয়তো রাগই হচ্ছে আমার। তাই বলেন, ‘রাগ করার কিছুই নেই, চলেন আসল কারণটা বলি, কেন আমি এমনটা বললাম।’ বাংলাদেশকে টেস্টে এখনো ‘শিশু’ বলার ব্যাখ্যা দিতে শুরু করলেন তিনি। ৩৫ বছর ধরে ভারতের ক্রিকেটের সঙ্গে আছেন রাজিব শিরোদকর। ছিলেন স্কোরার। এখন মিডিয়া ম্যানেজারের পাশাপাশি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) তালিকাভুক্ত আম্পয়ারও। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘ভারতের ১৯৩২ সালে টেস্ট অভিষেক হয়। কিন্তু আমাদের দলের প্রথম টেস্ট জয় আসে ১৯৫২তে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে চেন্নাইয়ে। মানে নিজেদের মাঠে প্রথম জয় পেতে ২০ বছর সময় লেগেছে ভারতের। এখানেই শেষ নয়। বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট সিরিজ জিততে আমাদের সময় লেগেছে ৪০ বছর। ভারত প্রথম টেস্ট সিরিজ জিতেছে ১৯৭১-এ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। বাংলাদেশ টেস্ট খেলা শুরু করেছে ২০০০ সালে। ২০ বছরও হয়নি তাদের টেস্ট ক্রিকেটের। তার মানে ভারতের তুলনায় এখন টাইগারদের টেস্ট ক্রিকেটের শিশুকালই চলছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ কিন্ত ভারতের তুলনায় দ্রুত উন্নতি করেছে। তারা দেশের মাটিতে টেস্ট জিতেছে, আবার বিদেশের মাটিতেও টেস্ট সিরিজও জিতেছে। এমনকি তারা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো দলকে যেকোনো দেশের মাটিতে হারানোর সক্ষমতা রাখে। এই সিরিজে তারা ভারতকে নিজেদের মাটিতে টি-টোয়েন্টিতে হারিয়েছে। সিরিজটাও প্রায় জিতে নিয়েছিল। তাই আমি বলছি তোমাদের অধৈর্য হওয়ার কিছু নেই। আমার বিশ্বাস, টাইগাররা দ্রুতই টেস্টে ক্রিকেটেও বিশ্বের যেকোনো দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। তবে সময় দিতে হবে। কারণ টেস্ট নিয়ন্ত্রণ পেতে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয়, যা ভারতও করেছে।’
শুধু বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াই নয় রাজিব কথা বলেছেন টাইগারদের ক্রিকেটের আরো অনেক কিছু নিয়ে। তার দেয়া সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত আসছে.....।