× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন / আবারও ব্যর্থতার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করল মিয়ানমার

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) নভেম্বর ১৯, ২০১৯, মঙ্গলবার, ১১:২২ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ব্যর্থতার জন্য বরাবরের মতো আবারও বাংলাদেশকে দায়ী করেছে মিয়ানমার। তাদের অভিযোগ, আগের মতো বাংলাদেশ এ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছে না। বাংলাদেশ একটি ভাল প্রতিবেশীসুলভ সহযোগিতা করবে এটা অত্যাবশ্যক। তাদের সহযোগিতা ছাড়া মানবিক সঙ্কটের শুধু আরো অবনতিই হবে। বাংলাদেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। তারা যদি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে না পারে তাহলে এর জন্য দায়ী থাকবে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের বিচার করার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র ইউ জাওয়া হতাই।
তিনি মিডিয়াকে বলেছেন, যতদিন বাংলাদেশ সহযোগিতা না করবে, এই সমস্যা ততদিন অব্যাহত থাকবে। ১৯৯৩ সালে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তখন সহযোগিতা করা হয়েছিল এবং প্রত্যাবর্তন সফল হয়েছিল। কিন্তু এবার সঙ্কট রয়েই গেছে। কারণ, বাংলাদেশ সহযোগিতা করছে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং অবরোধ আরোপের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। তাদের এমন আচরণ করা উচিত হয় নি। দেশটি (বাংলাদেশ) অনুচিত কাজ করেছে।  

এ খবর দিয়েছে মিয়ানমারের অনলাইন দ্য ইরাবতী। এতে বলা হয়, ২০১৭ সালের আগস্টে উগ্রপন্থি আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার জবাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস অভিযান চালায়। এতে বাধ্য হয়ে কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। তারপর থেকে ওইসব রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার জন্য দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু হয় নি। ওদিকে জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম নৃশংসতা, জাতি নিধনের অভিযোগ এনেছে। সম্প্রতি ওআইসির সমর্থনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) আবেদন করেছে গাম্বিয়া। ওদিকে নির্বাসনে থাকা রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী ও লাতিন আমেরিকার মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো আর্জেন্টিনার আদালতে মামলা করেছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার চেয়ে এই মামলা করা হয়েছে। এতে আসামী করা হয়েছে মিয়ানমারের বেসামরিক নেত্রী, স্টেট কাউন্সেল অং সান সুচি, সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং, বর্তমান ও পূর্ববর্তী প্রশাসনের প্রেসিডেন্টদের।

এরই মধ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তদন্তের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এমন অবস্থায় রাজধানী ন্যাপিডতে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাওয়া হতাই। তিনি এতে সব দোষ চাপিয়েছেন বাংলাদেশের কাঁধে। তিনি বলেছেন, আমাদের কাছে বাংলাদেশ বলছে এক কথা। আর মিডিয়ার কাছে বলছে আরেক কথা। এ জন্য আমরা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের অফিস বিষয়ক মন্ত্রী কাইওয়া তিনত সয়ে এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেছি। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে জাতিসংঘ মহাসচিব, চীন ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ইউ কাইওয়া তিনত সয়ে। এ বিষয় উল্লেখ করে জাওয়া হতাই বলেছেন, সেখানে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রত্যাবাসনের একটি তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। ফলে আমরা বিষয়টিকে নিশ্চিত হিসেবে মেনে নিয়ে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু তা শুরুই হয় নি।

ওদিকে সাবেক রাজনৈতিক বন্দি মুসলিম ইউ তুন কাইয়ি’র মতে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা সঙ্কটকে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয় নি। যদি সরকার শরণার্থীদের ফেরত নিতে চায় তাহলে তাদের নিরাপত্তা, নাগরিকত্ব এবং মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করতো। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার সরকার যদি এসব অধিকারের বিষয়কে অবজ্ঞা করতেই থাকে তাহলে আন্তর্জাতিক চাপ শুধু বাড়বেই। শরণার্থীদের চাপে কাবু বাংলাদেশ এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। একজন মুসলিম সাবেক বন্দি এ কথা বললেও মিয়ানমার সরকার দায়ী করছে বাংলাদেশকে।

মিয়ানমারের মুখপাত্রের আরো অভিযোগ, যদিও বাংলাদেশ বলছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরতে রাজি নয়, তথাপি এপ্রিল মাস থেকে ৪১৫ জন শরণার্থী মিয়ানমারে ফিরে গেছেন। এর মধ্যে মাত্র ১১ জন হিন্দু। বাকিরা রোহিঙ্গা মুসলিম। তারা তাদের মূল বাড়িতে ফিরে যান নি। বর্তমানে আত্মীয়দের সঙ্গে বসবাস করছেন। এ বিষয়ে ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন দ্য ইরাবতীর সাংবাদিক। কিন্তু কোনো জবাব পাওয়া যায় নি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর