× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রয়টার্সের রিপোর্ট / বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের না পালানোর আহ্বান

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) নভেম্বর ২০, ২০১৯, বুধবার, ৩:৫৭ পূর্বাহ্ন

উন্নত জীবনের আশায় বাংলাদেশ থেকে পলায়নরত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সতর্কতা দিয়েছেন মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা। এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে অবস্থানকারী কিছু রোহিঙ্গা। তারা বলেছেন, এক সময় তারা উন্নত জীবনের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়ায় গেলেও সেই স্বপ্ন ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে গেছে। এর কারণ, কাজ পাওয়া যায় না। তারা অবৈধ অভিবাসী বলে পুলিশ তাদের হয়রান করে। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতি হলেও বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা শরণার্থী বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনকে এই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, পালিয়ে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেয়া তাদের কেউ কেউ ফিরে আসার কথা চিন্তা করছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।


২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ নৃশংসতা শুরুর চূড়ান্ত সময়ে জীবন বাজি রেখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। ওই সময়ে মোহাম্মদ ইমরান নামের একজন রোহিঙ্গা যুবক উন্নত জীবনের আশায় পাচারকারীদের হাতে তুলে দেন ৪৭২০ ডলার। উদ্দেশ্য তারা তাকে মালয়েশিয়া নিয়ে দেবে। এখানে বলে রাখা ভাল যে, বাংলাদেশের পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয়কারী দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে মালয়েশিয়া। তারা আশ্রয় দিয়েছে কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গাকে। এসব রোহিঙ্গা ঝুঁকিপূর্ণ বোটে করে উত্তাল আন্দামান সাগর পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছেন মালয়েশিয়া। আবার কেউ কেউ ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করেছেন। এ জন্য পাচারকারীদের হাতে তুলে দিতে হয়েছে নগদ অর্থ। মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে অবস্থানকারী মোহাম্মদ ইমরান ও প্রায় দু’ডজন রোহিঙ্গা বলেছেন, তারা সেখানে ভাল নেই। তাই যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ভাবছেন তাদেরকে অনুৎসাহিত করেছেন তারা। ৩০ বছর বয়সী ইমরান বলেন, ভেবেছিলাম মালয়েশিয়ায় এসে একটি ভাল জীবন পাব। কাজ করার স্বাধীনতা এবং চলাফেরায় স্বাধীনতা পাবো। আমাদেরকে পুলিশ হয়রান করবে না। এমন মৌলিক অধিকারের আশা নিয়ে আমরা এসেছিলাম মালয়েশিয়া। কিন্তু তা ঘটছে না। এ বিষয়ে রয়টার্সের অনুসন্ধানীদের কাছে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয় নি মালয়েশিয়ার পুলিশ অথবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রশিতে ঝুলা নিজের কাপড়চোপদের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে মোহাম্মদ ইমরান তার মায়ের সঙ্গে কথোকথনের বিষয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় তিনি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তার মা অবস্থান করছেন সৌদি আরবে। তার মায়ের আশঙ্কা, তিনি আর কোনোদিনই তার ছেলেকে দেখতে পাবেন না। ইমরানের ছোট দুই বোন অবস্থান করছেন বাংলাদেশের আশ্রয়শিবিরে। প্রতি মাসে তাদেরকে টাকা পাঠান ইমরান। নিজের খাদ্য, বাসা ভাড়ার জন্য কিছুই জমা রাখেন না তিনি। ইমরান বলেন, মালয়েশিয়ায় আমাদের ভবিষ্যত অস্পষ্ট। আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশে যারা অবস্থান করছেন তাদের অন্তত পরিবার, বন্ধুবান্ধব আছে চারপাশে। সেখানে সবার কথাবার্তা, ভাষা বুঝতে পারেন সবাই। সেখানে কথা বলার জায়গা আছে। ইমরান কাজ করছেন মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে। এ থেকে তিনি মাসে আয় করছেন ৬০০ ডলার।

উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় প্রবেশের পর অনেক রোহিঙ্গাকেই কয়েক মাস জেলে কাটাতে হয়েছে। এরপর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের অনুরোধে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এখন এসব মানুষ অবৈধ উপায়ে অনেক ছোট ছোট কাজ করছেন। ইউএনএইচসিআরের হিসাব অনুায়ী, মালয়েশিয়ায় অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাত্র এক তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত বয়স্ক কাজে নিয়োজিত। এসব রোহিঙ্গার বেশির ভাগই মানসিক বিশৃংখল, হতাশার শিকার। বিভিন্ন দাতব্য বিষয়ক এজেন্সি এবং রোহিঙ্গারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশে শরণার্থী বিরোধী যে সেন্টিমেন্ট শুরু হয়েছে তাতে তৃতীয় কোনো দেশে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ হাওয়ায় উড়ে গেছে।  
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর