× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পণ্য মজুত ও অতিরিক্ত দামে বিক্রি, আইন কী বলে? /শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন বা ১৪ বছর জেল

এক্সক্লুসিভ

রাশিম মোল্লা
২১ নভেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার

হঠাৎ লবণ সংকট ও ঘাটতির গুজব। মুহূর্তেই এ খবর ছড়িয়ে পড়ে দেশের সর্বত্র। আর এ খবরে মানুষ লবণ সংগ্রহে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আর মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা শুরু করে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ পর্যন্ত ১৩৩ জন ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। এদের মধ্যে বেশ কিছু ক্রেতাও রয়েছে। লবণ গুজবের আগে ব্যবসায়ীরা খোঁড়া অজুহাতে ২০ টাকার পিয়াজ বিক্রি করেছে ২৬০ টাকায়। অবশেষে কমতে শুরু করেছে পিয়াজের মূল্য।
নিত্য প্রয়োজনীয় এই দুই পণ্যে নাজেহাল হচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী জামিউল হক ফয়সাল বলেন, ভোক্তা অধিকার আইনের ৪০ ধারা অনুযায়ী কোন আইন বা বিধির অধীন নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো পণ্য, ওষুধ বা সেবা বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা হলে তার অনূর্ধ্ব এক বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে পণ্যের মজুতদারি নিষিদ্ধ করেছে। কেউ যদি এমনটি করে, তবে এই অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের ২ (ঙ) ধারায় মজুতদারির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘মজুদদারি বলতে বোঝায়, কোনো আইন দ্বারা বা আইনের আওতায় কোনো ব্যক্তি মজুদ বা গুদামজাত করার সর্বোচ্চ পরিমাণের বেশি দ্রব্য মজুদ বা সংরক্ষণ করা। আর আইনের ২৫ (১) ধারার শাস্তির কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ মজুতদারি বা কালোবাজারে লেনদেনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে তার আজীবন কারাদণ্ড বা ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। যদি প্রমাণ হয় যে, মজুতদার কোনো লাভের জন্য পণ্য মজুদ করেনি, তাহলে ৩ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে হবেন।এ ব্যাপারে কনসাস কনজ্যুমার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, আমাদের বাজারে এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। যদি আইনটির প্রয়োগ থাকতো তবে কেউ বাজার অস্থিতিশীল করতে পারতো না। তবে এ ক্ষেত্রে ভোক্তাকেও সচেতন হতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্যে বিক্রি করে, তাদের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। ভোক্তা হিসেবে নির্ধারিত পণ্যে অতিরিক্ত মূল্যে ক্রয়ের মাধ্যমে ক্ষতির শিকার ও কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয়ে প্রতারিত হলে সংক্ষুব্ধ ভোক্তা এই আইনের ৭৬(১) ধারার অধীনে ভোক্তা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আইনের আশ্রয় নিতে পারে । তবে অভিযোগটি পণ্য বা সেবা ক্রয়ের ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে। অভিযোগের সঙ্গে প্রমাণাদি থাকলে যুক্ত করে দিতে হবে। যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেটার প্রদত্ত বিল বা পণ্য সেবার ক্যাশ মেমো এবং যদি দৃশ্যমান জিনিস হয় তার ছবি থাকলে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যেতে পারে। অপরাধটি সম্পর্কে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কিংবা অধিদপ্তরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। এতে আপনার নাম, মা ও বাবার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, ফ্যাক্স ও ই-মেইল (যদি থাকে) উল্লেখ করতে হবে। অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট িি.িফহপৎঢ়.ম.নফ থেকে অভিযোগের ফর্মটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন । প্রিন্ট করে তাতে তথ্য ও বিবরণগুলো লিপিবদ্ধ করুন। যেসব জেলায় অধিদপ্তরের শাখা নেই, সেসব জেলায় এই আইনে মহাপরিচালককে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, তা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর ন্যস্ত থাকবে। অথবা সরাসরি ডাকযোগে পাঠাতে পারবেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। তবে, ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন না করলে অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত অভিযোগকারীকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করা হয়। এ আইনের অধীনে সর্বনিম্ন পঞ্চাশ হাজার টাকা থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। জরিমানা ছাড়াও ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল, ব্যবসায়িক কার্যক্রম সাময়িক বা স্থায়ীভাবে স্থগিতও করতে পারে অধিদপ্তর।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর