× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চিলিতে পুলিশের পেলেটের আঘাতে চোখ হারিয়েছেন শত শত আন্দোলনকারী

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) নভেম্বর ২১, ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:০০ পূর্বাহ্ন

গত কয়েক সপ্তাহে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ দেখে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে চিলির মানুষ। কিন্তু সেখানে নতুন করে একটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা নিয়ে দেশব্যাপী আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শটগান ব্যবহার করেছে। আর এর আঘাতে চোখ হারিয়েছেন শত শত আন্দোলনকারী।
চিলির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত একমাসে চিলিতে কমপক্ষে ২৩০ জন আন্দোলনকারী শটগান পেলেটের আঘাতে চোখ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৫০ জনের কৃত্রিম চোখ লাগাতে হবে। অর্থাৎ তারা শুধু তাদের দেখার ক্ষমতাই হারাবেন না। তারা তাদের সত্যিকারের চোখটিও হারাবেন।
এমনটাই জানিয়েছেন চিলি মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিসিও মেজা। তিনি জানিয়েছেন, চোখ হারানোদের গড় বয়স মাত্র ৩০ বছর। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই সিসা ও রাবারের বুলেট তাদের চোখে আঘাত করেছে। আর এতেই দৃষ্টি হারিয়েছেন তারা। আন্দোলনে সহিংসতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চিলিতে এ ধরনের চোখ হারানোর ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যাকে প্যাট্রিসিও মেজা ‘হেলথ ক্রাইসিস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
গত ১৮ই অক্টোবর চিলিতে সাবওয়ের ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণায় আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর বামপন্থি সংগঠনগুলো এতে যোগ দিয়ে বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দেয়। এতে সাড়া দিয়ে সপ্তাহ শেষে রাজধানী সান্তিয়াগোতে জড়ো হয় ১০ লাখেরও অধিক আন্দোলনকারী। চিলিতে অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে এই গণআন্দোলনে যোগ দেয় মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ মানুষ। সেখান থেকে ডাক আসে বৈষম্যের বিরুদ্ধে। আর এজন্য সরকারকে চাপ দেয়া হয় সংবিধান পরিবর্তনের জন্য। ১৯৮০ সালে সাবেক স্বৈরশাসক পিনোচেটের আমলে প্রণীত হয়েছিলো এ সংবিধান। অবশেষে আন্দোলনে নতি স্বীকার করে চিলি সরকার। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পেনশনের বিষয়ে সংস্কারের বিষয়ে গণভোটের ঘোষণা দেয়। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের প্রথম দিকে।
তবে আন্দোলন থামাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে চিলির শাসক দল। মেজা জানিয়েছেন, আন্দোলনে পেলেটবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা এর আগেও হয়েছে। কিন্তু এবার এগুলো একদম ৯০ ডিগ্রিতে ছোড়া হয়েছে। অর্থাৎ সরাসরি মুখে বিদ্ধ করা হয় পেলেট। এর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা। বলেছে, আন্দোলনকারীদের ওপর এমন নির্বিচারে গুলি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অন্য দেশগুলো পেলেট গান ব্যবহারে বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলে। কিন্তু চিলিতে সপষ্টভাবেই এটি হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত আন্দোলনে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত সাত হাজার। আহত হয়েছেন আরো দেড় হাজার আন্দোলনকারী।
জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও জাতীয় মেডিকেল কলেজ থেকে ইতিমধ্যে পেলেট গান ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানানো হয়েছে। আন্তোফাগাস্তা ও কন্সেপ্সিওন প্রদেশের আদালত মানুষের ক্ষতি করে এমন অস্ত্র আন্দোলনে ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। চিলি পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল মারিও রোজাস দাবি করেন, আন্দোলনে সীমিত মাত্রায় পেলেট গান ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সরজমিন গিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদক অন্যচিত্র দেখতে পেয়েছেন। চিলির জাতীয় মানবাধিকার সংস্থার পরিচালক সার্জিও মিকো বলেন, সকল প্রমাণের ভিত্তিতে এটি নিশ্চিত যে, পুলিশ যা করছে তাতে ভুল রয়েছে।
এ নিয়ে দেশটিতে একটি তদন্ত কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এতে আন্দোলনকারীদের ওপর হওয়া ১০৮৯টি হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ অভিযোগই দেশটির পুলিশের বিরুদ্ধে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর