× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মানবিক গুণাবলীকে প্রাধান্য দেয়া উচিত

দেশ বিদেশ

প্রলয় কুমার চৌধুরী
২১ নভেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার

‘সৎ-চরিত্রই মানুষের ইহকাল ও পরকালের একমাত্র শ্রেষ্ঠ সম্পদ’
‘সকল মানুষকে ভালবাসা’ এর চেয়ে উত্তম পথ মানুষের জন্য আর নেই। পিতা-মাতা, শিক্ষক ও গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী প্রত্যেকের প্রতি এমন আচরণ করতে হবে যাতে কোন লোকই যেন কারো আচরণে অন্তরে ব্যথা না পায়। কারণ দোয়া বা আশীর্বাদ কারো কাছে চেয়ে পাওয়া যায় না। অভিশাপের বেলায়ও তাই। কাজের মধ্য দিয়েই প্রকৃত দোয়া বা আশীর্বাদ লাভ করা সম্ভব। কর্ম অনুসারে ফল লাভ হয়।

শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য মানবীয় গুণাবলী অর্জন করে তা জীবনের সর্বক্ষেত্রে যথাযথ প্রয়োগ করা। মানুষের প্রকৃত পরিচয় তার মনুষ্যত্ব অর্জনের মধ্য দিয়েই প্রতীয়মান হবে। শুধু পুথিগত বিদ্যা বা কৌশলগত জ্ঞানঅর্জন করলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না।
এমনকি শিক্ষাগত যোগ্যতা বা কৌশলগত শিক্ষার উচ্চ মূল্যমানের সার্টিফিকেট গলায় ধারণ করলেই একজন প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না। যদি তার মানবিক গুণাবলি অর্জিত না হয় তবে তাকে বহুমূল্যবান মনি মস্তকে ধারণকৃত বিষধর সর্পের সঙ্গেই তুলনা করা চলে। কারণ তার স্বভাব-‘সুযোগ পেলেই ছোবল মারা’
আমরা সকলেই হয়ত এ কথাটি উপলব্ধি করতে পারছি যে বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি সর্বক্ষেত্রে শিশু কিশোরদের মন আকৃষ্ট করছে। এমনকি বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনও এই স্রোতে ভেসে চলেছে।
আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে, কিন্তু মানবীয় গুণাবলী হারিয়ে নয়। শিশু কিশোরদের মধ্যে সর্বাগ্রে তার গুণাবলী জাগাতে হবে, তবেই তার শিক্ষার মূল্য বাস্তবে কার্যকরী হবে।

বর্তমান প্রজন্মের অনেক ছেলে মেয়ে তাদের পিতামাতা, শিক্ষক, গুরুজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বান্ধবদের প্রতি কিছুটা রুঢ় আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর জন্য দায়ী কে? আমি বলতে চাই কিছুটা হলেও একাধারে শিক্ষা ব্যবস্থা, মুষ্টিমেয় শিক্ষক, পিতামাতা ও সমাজ ব্যবস্থা এর দায়ভার বহন করছে।
তাই শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিকট আমার অনুরোধ নিম্নে বর্ণিত কয়েকটি বিশেষ গুণ যাতে সব শিশুরাই অর্জন করতে পারে সে বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন হবেন। এতে নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে আমাদের সোনার বাংলায় সোনার মানুষে ভরে উঠবে।

১) পিতা-মাতা, শিক্ষক ও গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ।
২) প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাবার সময় পিতা মাতাকে সালাম বা প্রনাম করা।
৩) আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী সকলের সঙ্গেই সৎ ব্যবহার করতে হবে যাতে কারও মনে কখনও আঘাত না লাগে।
৪) নিয়মিতভাবে লেখাপড়া ও খেলাধুলা করা।
৫) প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা।
প্রসঙ্গে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর নিকট আমার আবেদন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বা সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাময়িক ও বার্ষিক পরীক্ষায় অন্তত ১০০ নম্বরের একটি ‘আচরণ’ বিষয় সন্নিবেশিত করার। তাতে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থী তার আচরণে সংযত হবে। এই বয়সটাই তার চরিত্র গঠনের বয়স। তাছাড়া শিক্ষকগণও ছাত্র/ছাত্রীর আচরণ বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং সেইভাবে নম্বর প্রদান করবেন।

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় হাজার হাজার জিপিএ-৫ পাচ্ছে। এতে যে শিক্ষার খুব উন্নতি হচ্ছে তা বলা যাবে না। কারণ মানবিক গুণাবলীতে যদি শত শত জিপিএ-৫ পেত সেটাই দেশের জন্য বেশি গৌরবের হতো। অর্থাৎ প্রকৃত শিক্ষার উন্নতি হতো। একজন শিক্ষার্থী যতই মেধাবী হোক তার মধ্যে যদি মানবিক গুণাবলী না থাকে তবে তার দ্বারা দেশের বা সমাজের কোন মঙ্গল বয়ে আনবে না। আমার মতো শিশু-কিশোরদের মানবিক গুণাবলীতে জিপিএ-৫ পাওয়ার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তবেই দেশে শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আমাদের দেশ প্রকৃত অর্থেই সোনার বাংলা হয়ে উঠবে।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর