আগামী মাসে নির্ধারিত হয়েছে বৃটেনের সাধারণ নির্বাচন। একে সামনে রেখে ইতিমধ্যে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার লেবার পার্টির ইশতেহার ঘোষণা করেছেন বামধারার রাজনীতিক জেরেমি করবিন। অঙ্গীকার করেছেন, নির্বাচনে জয়ী হলে সরকারি সেবাখাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়াবে তার দল। একইসঙ্গে বৃদ্ধি করা হবে যোগাযোগ ও আবাসন খাতের বিভিন্ন সুবিধা। মার্ক্সবাদী হিসেবে পরিচিত করবিন বৃটেনের বার্মিংহাম শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, সম্পদের ওপর ধনী ও বড় কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিয়ে তা সাধারণ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চান তিনি। এর মধ্য দিয়ে বৃটেনের পুঁজিবাদী চরিত্রে পরিবর্তন আনবে তার দল।
এ নিয়ে লেবারদের এবারের নির্বাচনী স্লোগান ‘ইটস টাইম ফর রিয়েল চেঞ্জ’। এর আগে বৃটেনে অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছিল লেবার পার্টি। করবিন জানিয়েছিলেন, বৃটেনের অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি উৎপাদন সবকিছুই অভিবাসী কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল। তাই তার দলের নীতি হবে অভিবাসীবান্ধব। বর্তমানে অভিবাসীদের পরিবার আনার ক্ষেত্রে আয়ের যে শর্ত রয়েছে, সেটি দূর করে নিয়ম শিথিল করার ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, তার আমলে অভিবাসীদের সাবলীল বিচরণ ঘটবে। লেবার পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে রয়েছে জাতীয়করণ, সরকারি ও করপোরেট খাতে বিনিয়োগ ও সংস্কারের অঙ্গীকার।
বৃহস্পতিবার ঘোষিত ইশতেহারে বৃটেনের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহন ও টেলিযোগাযোগকে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে আসার ঘোষণা দেন জেরেমি করবিন। ঘোষণা দেন জাতীয় মজুরি বৃদ্ধিরও। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে বৃটেনের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে ব্রডব্যান্ড সেবার আওতায় নিয়ে আসবেন। আর এ জন্য পুঁজিপতি ধনিক শ্রেণি ও বড় বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোর ওপর কর বৃদ্ধি করবেন তিনি। ধনীদের করের টাকায় সেবামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন করবিন।
তিনি আরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যদি লেবার দল আবারো ক্ষমতায় আসে তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে বৃটেন হবে কার্বন-নিঃসরণমুক্ত রাষ্ট্র। এ জন্য নাগরিকদের ইলেক্ট্রিক গাড়ি কিনতে উৎসাহিত করবে তার সরকার। দেয়া হবে বিশেষ ঋণ সুবিধাও। বৃটেনে ২৫০ বিলিয়ন ডলারের সবুজায়ন তহবিল তৈরির ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। আর এই তহবিলে অর্থ নিশ্চিতে ধনীদের ওপর কর আরোপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ইশতেহার ঘোষণাকালে বামপন্থি এ নেতা বলেন, নির্বাচনী প্রচারে ধনী প্রভাবশালী গোষ্ঠী আপনাদের বলবে, এসব আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন অসম্ভব। কিন্তু আপনি যদি পরিবর্তন না চান, তবে ধনীরা কেন চাইবে? বর্তমান নিয়ম তো তাদের জন্য ভালোই কাজ করছে। ধনিক শ্রেণি জানে আমরা যা বলছি তা বাস্তবায়ন করে ছাড়ব। এ জন্য তারা আমাদের বিজয় ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছে।