× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ধর্ষণ, বিভৎসতা: মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন অগ্নিদগ্ধ ধর্ষিতা

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) ডিসেম্বর ৫, ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ২:৫২ পূর্বাহ্ন

গণধর্ষণের পর বেঁচে ছিলেন ২৩ বছর বয়সী এক যুবতী। এ নিয়ে মামলার শুনানিতে তিনি আদালতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে তার ওপর এবার আরো নৃশংসতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে নরপিশাচরা। ধর্ষিত ওই যুবতী আদালতে হাজিরা দিতে স্থানীয় ট্রেন স্টেশনে যাওয়ার পথে ধর্ষকরা তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় পাশের এক ক্ষেতের ভিতর। এরপর সঙ্গীরা মিলে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ভয়াবহভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন ওই যুবতী। তার শরীরের ৯০ ভাগেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে। তাকে ‘ক্লিনিক্যাল কন্ডিশনে’ রাখা হয়েছে হাসপাতালে।
সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন ওই যুবতী। এ ঘটনা ভারতের উন্নাওয়ের। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া সহ ভারতীয় মিডিয়া ও অনলাইন বিবিসি। আজ বৃহস্পতিবার উন্নাওয়ের ওই যুবতীর ওপর হামলে পড়ে নরপিশাচরা। এখন তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন লক্ষেèৗয়ের এসপিএম সিভিল হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বার্ন ইউনিটে। তাকে নয়া দিল্লির সফদারগঞ্জ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হতে পারে।

দিল্লিতে ২০১২ সালে মেডিকেল পড়–য়া ছাত্রীকে ধর্ষণ, হত্যা, সর্বশেষ তেলাঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে এক যুবতীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ভারতজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র বিতর্ক হয়েছে পার্লামেন্টে। অভিনেত্রী ও সমাজবাদী পার্টির এমপি জয়া বচ্চন ধর্ষকদেরকে আদালতে না নিয়ে জনতার হাতে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ধর্ষকদের পিটিয়ে মেরে ফেলা উচিত। চারদিকে উত্তেজনার মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার আবার ধর্ষিত হওয়া এক যুবতীর গায়ে আগুন দিয়েছে নরপিশাচরা।

সিভিল হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার ডিএস নেগি বলেছেন, ওই যুবতীর সারা শরীরের শতকরা ৯০ ভাগ অংশ পুড়ে গেছে। তার জন্য আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টা অত্যন্ত সঙ্কটজনক সময়। তিনি বাঁচবেন কিনা তা বলা যাবে তার পরেই। তার শরীরে চরম মাত্রায় প্রদাহ হচ্ছে। তাই তিনি অস্থির অবস্থায় আছেন। এলোমেলো কথাবার্তা বলছেন। তাকে বাঁচানোর জন্য সর্বোত্তম চেষ্টা আমরা চালাচ্ছি। ব্যথা কমার জন্য আমরা তাকে এন্টিবায়োটিক দিচ্ছি। সঙ্গে ঘুমের ওষুধ দেয়া হচ্ছে। ডাক্তার প্রদীপ তিওয়ারির অধীনে বর্তমানে রয়েছেন ওই যুবতী। তিনি বলেছেন, তার জন্য এই সময়টা অত্যন্ত সঙ্কটজনক।

ডাক্তার নেগি বলেছেন, যখন ওই যুবতীকে আমাদের কাছে আনা হয়েছে তখন আমি তার কাছে জানতে চেয়েছি তিনি কেমন আছেন। তিনি আমার কথার উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার প্রচন্ড প্রদাহ হচ্ছে। পরে ওষুধ দেয়ার পর তিনি একটু ভাল আছেন বলে জানিয়েছেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, উন্নাওয়ের একটি গ্রাম থেকে এই যুবতীকে ধরে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়া হয়। তারপর আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় তার শরীরে। দ্রুততার সঙ্গে তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় লক্ষ্মৌয়ে। ওই যুবতী পুলিশকে বলেছেন, তাকে এক বছর আগে যারা ধর্ষণ করেছিল তার মধ্যে দু’জন তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ওই দুই ধর্ষক জামিনে বাইরে ছিল। ঘটনার সময় তাদের সঙ্গে আরো তিনজন সহযোগী ছিল।

ওই যুবতী তার পিতামাতার সঙ্গে ভোর চারটার দিকে রায়বেরেলি যাচ্ছিলেন। সেখানে ধর্ষণ মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। যাওয়ার পথে তাদের ওপর হামলা হয়। স্থানীয় মিডিয়াকে উদ্ধৃত করে অনলাইন বিবিসি লিখেছে, এ সময় তারা ট্রেন স্টেশনে যাচ্ছিলেন। তখনই একদল লোক এসে ওই যুবতীকে টেনেহিঁচড়ে পাশের একটি ক্ষেতের ভিতর নিয়ে যায়। সেখানেই তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনা ঘটে উন্নাওয়ে। এই জেলায় সম্প্রতি আরো একটি নৃশংস ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। জুলাইয়ে সেখানে একজন নারী ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। বলেন, ওই এমপি তাকে ধর্ষণ করেছে। এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারাত্মক আহত হওয়ার পর এই নারী অভিযোগ করেন ওই এমপি তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। এ জন্য তার বিরুদ্ধে একটি হত্যার তদন্ত শুরু করেছে ভারতের পুর্লিশ। এই নারীর দু’জন আন্টি নিহত হয়েছেন। তার একজন আইনজীবী আহত হয়েছেন।
ভারতে এমন সব নৃশংস ধর্ষণ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ২৭ শে নভেম্বর হায়দরাবাদে পশুচিকিৎসক ২৭ বছর বয়সী এক যুবতীকে ধর্ষণ শেষে আগুন দিয়ে মারা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর