× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নাটকের গল্পে দর্শকের অসন্তোষ বাড়ছে

বিনোদন

এন আই বুলবুল
৬ ডিসেম্বর ২০১৯, শুক্রবার

দিন দিন নাটকের গল্পে দর্শকের অসন্তোষ বাড়ছে। টেলিভিশন ও ইউটিউব দু’মাধ্যমেই দর্শক এখন নাটক দেখতে পাচ্ছে। টিভি চ্যানেলগুলো নাটক প্রচারের পর তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলেও সেই নাটক প্রকাশ করছে। কিন্তু দর্শক এসব নাটক দেখে কতটা তৃপ্ত সেটা প্রশ্নই থেকে যায়। ইউটিউবের কমেন্টবক্সে দর্শকের নেতিবাচক মন্তব্যই বলে দেয় এ সময়ের নাটকের গল্পে দর্শক সন্তুষ্ট না। একদিকে সস্তা গল্প। অন্যদিকে অনেক নাটকে অশ্লীল সংলাপ জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব গল্পের নাটকে ভিউ হচ্ছে সত্যি।
কিন্তু এগুলো দর্শক সন্তুষ্টিতে জায়গা করে নিতে পারছে না। একটা সময় ‘কোন কাননের ফুল’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘রূপনগর’, ‘বহুব্রীহি’, ‘সংশপ্তক’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘আমাদের নুরুল হুদা’ ‘রঙ্গের মানুষ’ নাটকগুলোর কথা দর্শকের মুখে মুখে থাকতো। নতুন প্রজন্মের দর্শক সেই ধরনের নাটক আর পাচ্ছে না বলেই অনেক সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রী জানান। নতুন প্রজন্মের দর্শক নাটক মানেই মনে করেন গল্পে নায়ক-নায়িকার কিছু সময় আবেগ-অনুভূতি নিয়ে খেলা। শেষে আবার দুজনের এক হয়ে যাওয়া। কারণ তারা এ ধরনের নাটকই এখন বেশি দেখতে পান। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অভিনেতা ও নির্মাতা আবুল হায়াত বলেন, এখন অভিনয় করতে আগের মতো মন টানে না। কি অভিনয় করবো? অভিনয় করার মতো কোনো গল্প ও চরিত্র খুঁজে পাই না। এখন অনেক সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রী নাটকে কাজ করছেন না। কেন তারা নাটকে কাজ করছেন না? সত্যি বলতে সিনিয়র শিল্পীদের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। এখন নাটক মানে শুধু নায়ক-নায়িকার পর্দায় উপস্থিতি। গল্প ও চরিত্র কেমন সেটা দেখার বিষয় না। যেমন তেমন একটা গল্পে জনপ্রিয় দুজন নায়ক-নায়িকা থাকলেই এখন নাটক হয়ে যায়। চলতি সময়ের নির্মাতাদের এমন একটা ধারণা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। অথচ আমাদের অনেক সাহিত্যিক আছেন। তাদের গল্প-উপন্যাস অবলম্বনে অনেক সুন্দর সুন্দর নাটক নির্মাণ করা যায়। নতুন প্রজন্ম সব সময় নতুন কিছু দেখতে চায়। আমাদের পাশের দেশের সিরিয়ালগুলো ও টেলিছবির দিকে তাকালে দেখি তারা গল্পের দিকে কতটা মনোযোগী। আমাদের নির্মাতারা যদি গল্পের দিকে মনোযোগী না হন তাহলে নাটকের ভবিষ্যৎ আরো খারাপ হবে। নির্মাতা শিহাব শাহিন বলেন, দু’একটি মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেই অনেকে নাটক নির্মাণ করছেন আজকাল। এছাড়া টেলিভিশনের বাইরে ইউটিউব চ্যানেলগুলো এখন নাটকের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। যার কারণে অল্প বাজেটে তারা যাকে তাকে নাটক নির্মাণের দায়িত্ব দিচ্ছে। এদের অনেকেই নির্মাণে দুর্বল। একইসঙ্গে গল্পের গুরুত্বও বোঝেনা। যার কারণে আজ আমাদের নাটকের এই খারাপ অবস্থা দেখতে হচ্ছে। অভিনেতা ও নির্মাতা সোহেল আরমান বলেন, নাট্যাঙ্গনে অযোগ্য লোকদের দাপট নাটকের প্রতি দর্শকের অসন্তুষ্টির বড় কারণ। একটা সময়
বাংলাদেশ টেলিভিশনে অডিশন দিয়ে অভিনয় করতে হতো। অডিশন দিয়ে নাটক নির্মাণ করতে হতো। কিন্তু স্যাটেলাইটের এ সময়ে কাউকে কোথাও কোনো অডিশন দিতে হচ্ছেনা। যার খুশি সেই নাটক লিখছে এবং নাটক নির্মাণ করছে। একইসঙ্গে অভিনয় না জানা অনেকেই দিব্যি অভিনয় করছে। তাদের কাছে নাটকের গল্প গুরুত্বপূর্ণ নয়। অভিনয় করতে পারা ও নাটক নির্মাণ করতে পারাই আসল বিষয়। দর্শক কেন এসব মানহীন নাটক দেখে তৃপ্তি মেটাবে? সারা বিশ্ব এখন দর্শকের মুঠোয় বন্দি। বিনোদনের জন্য দর্শকের অনেক পথ খোলা আছে। আমি মনে করি, দর্শকদের দেশীয় নাটকের দিকে ফেরানোর জন্য আমাদের নির্মাতাদের পাশাপাশি শিল্পীদেরও ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু অর্থের জন্য কাজ না করে সংস্কৃতির কথাও তাদের ভাবতে হবে। সস্তা তারকাখ্যাতির জন্য মানহীন গল্পের নাটকে কাজ করা বন্ধ করতে হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর