× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ সংকট / রোগীদের দুর্ভোগ

বাংলারজমিন

খালিদ হোসেন সুমন, নবাবগঞ্জ (ঢাকা) থেকে
৭ ডিসেম্বর ২০১৯, শনিবার

৫০ শয্যাবিশিষ্ট নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দরিদ্র পরিবারের রোগীরা। সরকারের জনকল্যাণমুখী স্বাস্থ্যসেবার এ প্রতিষ্ঠানটিতে সংকট যেন পিছুই ছাড়ছে না। হাসপাতাল সূত্র জানা যায়, সরকারিভাবে ওষুধ ছাড় না পাওয়ায় ওষুধের সরবরাহ্‌ বন্ধ। তাই রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীদের দাবি, সরকারের সংশিষ্ট দপ্তর থেকে হাসপাতালটিতে ৩০ প্রকারের অধিক ওষুধ সরবরাহ্‌ করলেও তারা নামমাত্র কিছু ওষুধ পেয়ে থাকেন। এখন আবার সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। তাছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে পর্যাপ্ত আসন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসকের উপস্থিতি থাকেন না।
তার ওপর ওষুধ ও কর্মচারীর সংকটের কারণে সরকারের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে মনে করছেন এলাকার সচেতন জনসাধারণ। বুধবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা শোল্লার খতিয়া গ্রামের মফসের উদ্দীন (৬৫) বলেন, একশ’ টাকা খরচ করে হাসপাতালে আসছি ভালো সেবা পাবো বলে। কিন্তু আমি হতাশ হয়েছি। হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট জানালেন যা ওষুধ ছিল সকালেই শেষ হয়ে গেছে। ভাড়ার টাকা দিয়ে ওষুধ কিনতে পারতাম। সরকারি ওষুধে ভাল কাজ হয় তাই আসছিলাম। একই সময়ে ফার্মেসিতে ওষুধ নিতে আসা বাহ্রার আলগীচর গ্রামের শাহানা বেগম (৪৫) বলেন, কিছুদিন যাবত হাত-পা সহ শরীরে ব্যাথা হচ্ছিল। হাসপাতালে এসে চিকিৎসককে বলে ব্যবস্থাপত্র নিয়েছি। কিন্তু হাসপাতালের ফার্মেসীতে এসে ওষুধ না পেয়ে ফেরত যাচ্ছি। কাহুরের মিহির লাল সরকার (৫৫) বলেন, শরীরে ব্যাথা নিয়ে পয়সা খরচ করে সরকারি হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তার আমাকে হাসাপাতালের ফার্মেসী থেকে ওষুধ নেয়ার জন্য অ্যান্টাসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এবং নাপা সিরাপের টোকেন দিয়েছেন। ফার্মেসি থেকে জাননো হয়েছে ওষুধ নেই। গতকালও এসেছিলাম একই কথা বলেছেন ‘ওষুধ নেই’। এরকম আরও রোগীদের ওষুধের টোকেন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে ঐ ওষুধ নেই। তারা এ জন্য কর্তৃপক্ষকে দায়ি করেন। হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট মো. মজলিশ জানান, যে সব ওষুধ বেশি প্রয়োজনীয় তা সকালের দিকেই শেষ হয়ে গেছে। তবুও কিছু কিছু করে রোগীদের দিচ্ছি। সরেজমিনে বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা ও জানা যায়, প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার লোকের জন্য উপজেলা পর্যায়ে অবস্থিত একমাত্র সরকারি হাসপাতালটিতে, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা বিপুল সংখ্যক রোগী তাদের প্রয়োজনীয় প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড, হিসটাসিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্সসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। এসব ওষুধের সরবরাহ নেই প্রায় দেড় মাস ধরে। তাই দিতে পারছে না বলে জানান ভূক্তভোগীরা। হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ এবং জরুরি বিভাগে ২শ’ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসকের অভাবে বিপুলসংখ্যক রোগী ভোগান্তিতে পড়ছেন প্রতিদিন।  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শহিদুল ইসলাম ওষুধ সংকটের বিষয় স্বীকার করে বলেন, সরকারিভাবে ওষুধ ছাড় না পাওয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো থেকে কিছু কিছু ওষুধ আনা হচ্ছে। যাতে কিছুটা সংকট কাটানো যায়। ঢাকা জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. বিল্লাল হোসেন’ বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় জটিলতার কারণে ওষুধের সংকট রয়েছে। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে নানা সমস্যা রয়েছে। এবিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর