মজুরি কমিশনসহ ১১ দফা দাবিতে চট্টগ্রামে আমরণ অনশনরত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ আমিন জুট মিল গেটের সামনে ১৬ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরমধ্যে ৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শ্রমিকরা জানান, আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শ্রমিকরা একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিকেল ৫টার মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া ৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও ৭ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নির্ঝর দাশ জানান, অনশনের কারণে অসুস্থ হয়ে পাটকল শ্রমিকরা হাসপাতালে আসছেন। এ পর্যন্ত ৭ জনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অসুস্থ হয়ে আরো শ্রমিক হাসপাতালে আসছে বলে জানান তিনি।
আমিন জুট মিল সিবিএর দপ্তর সমপাদক কামাল উদ্দিন বলেন, মজুরি কমিশনসহ ১১ দফা দাবিতে গত ১০ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল থেকে আমিন জুট মিলের গেটের সামনে ৪ হাজার শ্রমিক আমরণ অনশনে বসেন। চট্টগ্রামের আরো ৯টি পাটকলের সিবিএ, নন সিবিএ শ্রমিক নেতারা অনশনে অংশ নেন। তিন দিন ধরে অনশন অব্যাহত থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নেননি।
তিনি বলেন, সময় যতই যাচ্ছে, নিজেদের ততই অভাগা মনে হচ্ছে। গত চার বছর ধরে নানা ধরনের আন্দোলন করেও ন্যায্য দাবি আদায় করতে পারিনি। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাবি আদায়ের জন্য আমরা অনশনে বসেছি। অনশনে শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু কারো কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পাচ্ছি না। আমাদের বেঁচে থাকা-না থাকাতে যেন কারো কিছুই যায়-আসে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা যে দাবি করছি, তা অন্যায় কিছু নয়। দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিতে দেশে কোনো শ্রমিক নেই। সরকার কেন আমাদের দাবি মানছে না, তা বুঝতে পারছি না। উনারা দাবি মানছেন না, দাবি নিয়ে আমাদের সাথে কোনো আলোচনা করছেন না। আরো বলছেন, আমাদের আন্দোলনে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আন্দোলন বন্ধ করতে। এটা কী সম্ভব! ন্যায্য দাবি আদায় করতে গিয়ে যদি অনশনে মরে যাই তাতেও আপত্তি নেই। আমিন জুট মিলের জেনারেল ম্যানেজার কামরুল হাসান এ প্রসঙ্গে বলেন, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত যে আন্দোলন চলছে, তা নিয়ে আমাদের করার কিছুই নেই। মন্ত্রণালয় থেকে যে রকম আদেশ আসবে আমরা সেটাই অনুসরণ করতে বাধ্য। তাদের এ আন্দোলনে কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হলেও আমরা তাদের জোর করতে পারছি না।