সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বটি দিয়ে এক গৃহবধুর চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রশিদকে ৩দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লাপাড়া মডেল থানার এসআই হাফিজুর রহমান জানান, ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল, আদালত ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। বৃহস্পতিবার উল্লাপাড়া আমলী আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নজরুল ইসলাম রিমান্ড শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে একই আদালতে আব্দুর রশিদ আত্মসমর্পন করার পর বিচারক তাকে জেলহাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। ওই দিনই আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল বলে জানান এসআই হাফিজুর রহমান। এ মামলার অন্য ৪ আসামী এখনও পলাতক রয়েছে।
রোববার এ ঘটনায় কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ১১ই ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উল্লাপাড়া থানাকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওইদিন এক আইনজীবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ তুলে ধরে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আদালত ওই নির্দেশনা দেন।
আদালতের এ নির্দেশনার পর সোমবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান ও থানার ওসি শাহীন শাহ পারভেজ ওই গৃহবধু’র বাড়িতে যান এবং তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নেন।
তাদের নিরাপত্তায় রোববার রাত থেকে বাড়িতে একজন এসআই’র নেতৃত্বে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। ১১ই ডিসেম্বর পুলিশ সিরাজগঞ্জ সুপারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে হাইকোর্টে মামলার অগ্রগতি বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ। গত ২৫ নভেম্বর রাতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় ২ সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে ২ ডিসেম্বর উল্লাপাড়া মডেল থানায় ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও তার চার সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০/৩০ ধারায় একটি মামলা করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, গজাইল গ্রামের মোজাহারের ছেলে মুনসুর (৩৮), বাহের প্রামাণিকের ছেলে আব্দুস সালাম (৪৫), নাসির উদ্দিন (৪০) ও শহিদুল ইসলাম (৩২)।
ওই নারীর অভিযোগ, ২৫শে নভেম্বর সন্ধ্যায় তিনি তার এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের খোঁজে বের হন। পথিমধ্যে একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের বাড়ির পাশে উধুনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ ও তার চার সহযোগী ওই নারীর পথরোধ করেন। এসময় সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তাকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন তারা। এতে গ্রামের লোকজন ছুটে এলে তাদের সামনে তাকে বিবস্ত্র করে মারপিট করা হয়। পরে কয়েকশ লোকের সামনে বটি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে দেয়া হয়।