ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরসহ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের হামলায় জড়িতদের বিচার চেয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য। গতকাল দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ। এসময় ছাত্র ঐক্য চার দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ প্রক্টরকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে, প্রতিটি হলে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে বৈধ সিট প্রদান করতে হবে এবং হলে হলে সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব ও গেস্টরুম-গণরুমের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে, ডাকসু ভবনে হামলাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও বিচার করতে হবে, ক্যাম্পাসে সকল হয়রানি বন্ধ করে সকলের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। লিখিত বক্তব্যে ফয়সাল মাহমুদ বলেন, হলে হলে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব জারি রেখে, ছাত্রদেরকে ভয় দেখিয়ে, ক্যাম্পাসগুলোকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। প্রশাসন সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। ক্যাম্পাসগুলোতে চলছে প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র।
মতপ্রকাশ করা একজন ছাত্রের স্বাভাবিক অধিকার হলেও বুয়েটের আবরার ফাহাদকে স্বাধীন মতপ্রকাশের কারণে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হতে হয়েছে। ডাকসু ভবনে হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, গত ২২শে ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে ঢুকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূরসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা করা হয়েছে। হামলার দিন আমাদের নেতৃবৃন্দ প্রক্টরকে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নৃশংসতা বন্ধ করতে উদ্যোগী হবার কথা বললে উনি যথাসময়ে সেখানে উপস্থিত হন নি বরং উল্টো ঝাড়ি দিয়ে কথা বলেছেন। তাঁর এই আচরণ এটা স্পষ্ট করে যে, তিনি হামলাকারী মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের মদদদাতা এবং সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে। এরকম একজন নিষ্ঠুর অমানবিক এবং দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ ব্যক্তি কোনোভাবেই প্রক্টরের পদে বহাল থাকতে পারেন না। সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সবাই ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের সময় পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের মধ্যে ধর্মীয় সমপ্রীতি রয়েছে, সেহেতু হিন্দু ধর্মীয় ভাইদের অন্যতম উৎসব সরস্বতী পূজা সেদিন হতে পারে, নির্বাচন নয়। আমরা চাইনা পূজার দিনে নির্বাচন হোক। উল্লেখ্য, গত ২২শে ডিসেম্বর ছাত্রলীগের হামলার পর ২৮শে ডিসেম্বর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে প্রগতিশীল ১১টি সংগঠন মিলে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়।