আসন্ন ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের দিন কেবল মাত্র ভোট দেয়ার জন্য প্রাইভেট কার ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য পুলিশকে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. আলমগীর। গতকাল বিকালে ইসি ভবনে কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ইসি সচিব বলেন, সরকারি যান চলবে। অনেকেই আছে এক এলাকায় বসবাস করে কিন্তু ভোটার অন্য এলাকার, তারা তাদের প্রাইভেট কার নিয়ে ভোট দিতে পারবেন। যদি পুলিশ ধরে, বাসার ঠিকনা আর ভোটার আইডি কার্ড দেখিয়ে বলতে হবে যে ভোট দিতে আসছি, তাহলে পারবে। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব মো. ফরহাদ আহাম্মদ খান বলেন, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বন্ধ থাকার বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। প্রাইভেট কার জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে।
তবে এক্ষেত্রে প্রমাণ দেখাতে হবে। ভোট দিতে যেতে পারবে। তাই বলে এমনি ঘুরবে সেটা হবে না। ৩০ হাজার ভোটারের জন্য একটি ক্যাম্প করার বিধান না মানলে কী হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এটা যদি আচরণ বিধিমালার বাইরে হয়, তাহলে রিটার্রিং কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দেখবেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ তারা নিয়েছেন। শাস্তিও দিয়েছেন। বহিরাগতদের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, ঢাকা শহর থেকে বহিরাগতদের বের করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ঢাকা শহরে সারাদেশ থেকে লোকজন আসে। তারপর দিনমজুর, তারা ঢাকার বাইরে থেকে আসেন। তাদের বের করা সম্ভব না। তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র যাদের কাছে, তাদের ধরতে জোরদার পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। খারাপ কোনো পরিস্থিতির রিপোর্ট নেই। খুবই আনন্দ উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচার চালাচ্ছে প্রার্থীরা। যারা আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছেন, তাদের জরিমানা করা হয়েছে। তারপর সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বিধি ভঙ্গ করলে আরও কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। ক্রমান্বয়ে কঠোরতা বাড়ানো হবে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-(ইভিএম) নিয়ে ইসি সচিব বলেন, প্রস্তুতি সন্তোষজনক। কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। ভোটে যারা আছেন তারা কতটা সক্রিয় থাকবে, তার ওপর ভোটার উপস্থিতি নির্ভর করবে। অনেকেই ভোট নয়, পরিচিতি বাড়ানোর জন্য প্রার্থী হয়। কেউ সরে গেলে কী করার আছে। এর আগে ভোটের তারিখ পরিবর্তন নিয়ে দুপুরে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সচিব বলেন, মহামান্য আদালত যে আদেশ দিয়েছেন বুঝে শুনেই দিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশনও বুঝে শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরস্বতী পূজার কারণে ভোটের তারিখ পরিবর্তন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যে রায় আসবে কমিশন তা অবশ্যই মেনে নেবে।
শিক্ষার্থীরা আদালতের রায়ের পরে আন্দোলন করছে- এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্ররা আন্দোলন কেন করছেন, কারা এটিকে সংগঠিত করছেন, সেটা আমাদের কাছে তথ্য নেই। হয়ত কেউ পেছন থেকে তাদের ভুল বুঝাচ্ছেন যে পূজার দিনে ভোট হচ্ছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা ভুল বুঝতেই পারেন কারণ তাদের তো বয়স কম। আমার ধারনা তাদের এই ভুলটা কেটে যাবে, এবং তারা বিষয়টি বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ এসএসসি পরীক্ষা, মার্চে স্বাধীনতার মাস, তারপর বঙ্গববন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকি পালনের নানা রকম প্রোগ্রাম আছে। এরপর এপ্রিলে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা, মে মাসে নির্বাচনের যে তারিখ আছে তা কোন ভাবেই করা সম্ভব না। শিডিউল এমনভাবে দিতে হবে যে প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থীরা কমপক্ষে ১৫ দিন প্রচারের জন্য সময় পায়। এ ক্ষেত্রে একদিন কম করে ১৪ দিন সময় দিলে প্রার্থীরা আবার আদালতে যেতে পারবে। আদালতও আইনের পক্ষে রায় দেবে। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই কমিশন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গভাবে ৩০শে জানুয়ারি ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।