× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সুনামগঞ্জে বাঁধ নির্মাণে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প

বাংলারজমিন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
২০ জানুয়ারি ২০২০, সোমবার

সুনামগঞ্জে হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত প্রকল্প হাতে নেয়ায় সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় এবং দুর্নীতির আশঙ্কা করেছেন হাওর পাড়ের মানুষজন। সময়মতো বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হবে কি না, এ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিরা। কোনো কারণ ছাড়াই অধিকাংশ উপজেলায় প্রতিযোগিতা করে বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের সংখ্যা (পিআইসি)।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে ধর্মপাশা উপজেলায়। এই উপজেলায় প্রাক্কলিত প্রকল্পের অর্ধেকই অপ্রয়োজনীয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ ক্ষেত্রে এর পরের অবস্থানে আছে সুুনামগঞ্জ সদর।
গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেশি প্রকল্প নেয়া হয়েছে এই উপজেলায়, যার বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয়। এ ছাড়া শাল্লা, জামালগঞ্জ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলায় অনেক অপ্রয়োজনীয় স্থানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত অর্থ বছরে ৫৭২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ৫৪১ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বাঁধ নির্মাণের জন্য ৮০ কোটি ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। চলতি অর্থ বছরে জেলার ১১টি উপজেলায় ৬৩৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ৭৪৪টি পিআইসি গঠন করা হয়। এর জন্য ১৩২ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠায় পাউবো। প্রথম ধাপে ৬৭৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। যেখানে গত বছরের চেয়ে দেড়শ প্রকল্প বেশি। বরাদ্দের পরিমাণও চাওয়া হয়েছে দ্বিগুণ।
সূত্র মতে, ধর্মপাশা উপজেলায় গত বছর ছিল ৮৯টি পিআইসি। এ বছর ১৭৪টি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় গত বছর বাঁধ নির্মাণে ৯টি পিআইসি’ ছিল এ বছর ৩ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭টি প্রকল্প। শাল্লা উপজেলায় এ বছর ২২টি প্রকল্প বাড়িয়ে ১৩৭টি করা হয়েছে। একইভাবে জামালগঞ্জ উপজেলায় ৬৯টি প্রকল্প, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ২৬টি প্রকল্প, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ৫০টি প্রকল্প, তাহিরপুর উপজেলায় ৭০টি প্রকল্প এবং ছাতক উপজেলায় ১১টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের দায়িত্বশীলদের অভিযোগ, এ বছর জেলায় প্রকল্প বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে বরাদ্দের পরিমাণ। বোরো ধানের সঙ্গে সম্পর্কহীন স্থানে প্রকল্প গ্রহণ, বাঁধের টাকায় গ্রামের রাস্তা নির্মাণসহ গত বছরের ভালো বেড়িবাঁধে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এভাবে বিভিন্ন হাওরে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয়ের পাশাপাশি অনেকেই বরাদ্দের টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে হজম করার পাঁয়তারা করেন বলে অভিযোগ তাদের। যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়েছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, গত বছরে সাড়ে ৫শ প্রকল্পের মাধ্যমে সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল রক্ষা হলেও এবার এবার অহেতুক প্রকল্পের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, উপজেলা কমিটি যাচাই-বাছাই করে পিআইসির তালিকা অনুমোদনের জন্য জেলা কমিটির কাছে পাঠায়। পরবর্তীতে জেলা কমিটি ৬৭৮টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। কিছু পিআইসি নিয়ে অভিযোগ আছে। জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রকল্প যাচাই কমিটি গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প যাচাই করে রিপোর্ট দিলে প্রকল্প কার্যকর হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর