× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নিখোঁজ হাজারো মানুষ মৃত প্রথমবার স্বীকার শ্রীলঙ্কার

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) জানুয়ারি ২১, ২০২০, মঙ্গলবার, ৩:৩৮ পূর্বাহ্ন

প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে স্বীকার করলেন তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের সময় কমপক্ষে ২০,০০০ মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। সেসব মানুষ বেঁচে নেই। তারা মৃত। রাজধানী কলম্বোতে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী হানা সিঙ্গারের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেন প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া, যিনি ওই গৃহযুদ্ধের সময় ছিলেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। অভিযোগ আছে, গৃহযুদ্ধকালীন নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা অকাতরে হত্যা করেছে তামিলদের। পাল্টা অভিযোগ আছে তামিলদের বিরুদ্ধে। এ জন্য উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ওঠে। তামিলদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞে মূল ভূমিকায় গোটাবাইয়া ছিলেন বলে দাবি করা হয়।
সেনাবাহিনী ও তামিল টাইগারদের হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত করার জন্য একটি যুদ্ধাপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রীলঙ্কা সরকারের ওপর জাতিসংঘ ও অন্যান্য অধিকার বিষয়ক গ্রুপের প্রচ- চাপ রয়েছে। কিন্তু দেশটিতে পর্যায়ক্রমিক সরকারগুলো সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, এটা তাদের আভ্যন্তরীণ ইস্যু। এসব অভিযোগের তদন্ত হবে আভ্যন্তরীণভাবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

জাতিসংঘের দূতের সঙ্গে বৈঠকের পর গোটাবাইয়ার অফিস থেকে দেয়া হয়েছে একটি বিবৃতি। তাতে বলা হয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের নামে ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু সনদ ইস্যু করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু প্রিয়জন কোথায় এমন প্রশ্নকে সামনে রেখে হাজার হাজার পরিবার র‌্যালি করেছে। তাদের অনেকের হাতে হারিয়ে যাওয়া স্বজনের ছবি। তারা জানেন না, এসব প্রিয়জন বেঁচে আছেন না মারা গেছেন। কারণ, তাদেরকে ধরে নিয়েছিল নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। তবে সরকার এ কথা অস্বীকার করে। সরকারের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে এসব পরিবার নিত্যদিন বিক্ষোভ করেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রিয়জনের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের পর ২০০৯ সালের মে মাসে বিদ্রোহী তামিল টাইগারদের পরাজিত করে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী। এই যুদ্ধে জাতিগতভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। একদিকে অবস্থান নেয় সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সিনহলিরা। তাদের আধিপত্যের সরকার দেশ চালাতে থাকে। অন্যদিকে একটি স্বাধীন তামিল রাজ্যের দাবিতে যুদ্ধে লিপ্ত থাকে তামিলরা। ওই যুদ্ধে কমপক্ষে এক লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রায় ২০০০০ মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। যুদ্ধ শেষে বিশেষ করে যুদ্ধের শেষ দিকটায় উভয় পক্ষকে দায়ী করে জাতিসংঘ। আত্মসমর্পণের চেষ্টা করা অসংখ্য তামিলকে গুলি করে হত্যা করা হয় অথবা তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপত্তা হেফাজতে।

এসব হত্যাকান্ডের ভিডিও প্রমাণ হাজির করা সত্ত্বেও সরকার কঠোরভাবে অভিযোগ অস্বীকার করে যেতে থাকে। ওই সময় ক্ষমতায় ছিলেন গোটাবাইয়া রাজাপাকসের ভাই মাহিন্দ রাজাপাকসে। যুদ্ধের পর তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে থাকেন ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের। তারা সরকারের বিরোধিতা করার মধ্য দিয়ে জোরপূর্বক গুমের ঘটনা প্রকাশ পেতে থাকে। গুমের ঘটনায়ও রাজাপাকসে সরকার তাদের ভূমিকার কথা প্রত্যাখ্যান করতে থাকে। এ বছর শুরুতে বিবিসিকে গোটাবাইয়া রাজাপাকসে বলেন, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী হানা সিঙ্গারের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসের বৈঠক সম্পর্কে দেয়া বিবৃতিতে সরকার বলেছে, ওই যুদ্ধের সময় যেসব নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে তা করেছে লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল এলম (এলটিটিই)। এতে আরো বলা হয়, নিখোঁজ ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে জোরালো পরিকল্পনা নিয়েছেন। এর সঙ্গে যুক্ত করতে বলা হয়েছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের তথ্য। এসব পরিবার জানেন না তাদের প্রিয়জনের কি হয়েছে। তারা যেন নিখোঁজদের সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারেন। শ্রীলঙ্কার আইন অনুযায়ী, যদি কারো মৃত্যু সনদ না থাকে, তাহলে মৃত ব্যক্তির পরিবার তার রেখে যাওয়া সহায় সম্পদ, ব্যাংক একাউন্টের টাকা পয়সা দাবি করতে পারেন না। উত্তরাধিকারী হতে পারেন না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর