শীতে নাকাল হয়ে পড়েছে দিনাজপুরসহ উত্তরের জনপদ। বেলা বাড়ার সাথে মেঘলুপ্ত সূর্যের লুকোচুরি আর ভোর ও রাতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। শীত ও শৈত্যপ্রবাহে ছন্দপতন হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে শীতজনিত নানা রোগ। গতকাল জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের প্রথম ভাগ ঢাকা ধাকছে ঘন কুয়াশায়। কোথাও কোথাও কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের মুখ দেখা গেলেও নিমিষেই ঘন কুয়াশায় তা ঢেকে যায় । তাই হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে দিনের বেলায়।
কনকনে ঠাণ্ডায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না খেটে খাওয়া মানুষ। এর পরও প্রয়োজনের তাগিদে তাদের বের হতে হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার দিনাজপুর জেলার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো বলে জানিয়েছেন, আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন। তিনি জানান, সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই শৈতপ্রবাহ আরো ২/৩ দিন চলবে। এদিকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে শীতের তীব্রতা আরো বাড়বে। তাপমাত্রা আরো নিচে নেমে আসতে পারে বলে তিনি জানান। এদিকে ডায়রিয়া,আমাশয়সহ নানা শীতজনিত রোগে কাহিল হয়ে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধমানুষরা। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিসহ নানা শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জেন ডা. আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন,যে সকল শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ শ্বাসকষ্টজনিত এবং ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের চিকিৎসা চলছে। জেলার ১৩ উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সদর হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে। সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অপরদিকে ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবহের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কৃষকের আলু ক্ষেত ও বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন শাকসব্জি। বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। আলুর খেতে দেখা দিয়েছে লেটব্রাইটসহ বিভিন্ন রোগ।এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তৌহিদুল ইকবাল জানান,বোরো বীজতলা রক্ষা ও রোপনে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। শীতে গবাদী পশু ও হাঁস-মুরগির নানা রোগ দেখা দিয়েছে। গবাদী পশু ও হাঁস-মুরগি পালনকারীরা এ নিয়ে পড়েছে বিপাকে। তারা পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি গবাদী পশু ও হাঁস-মুরগির শীত নিবারণের যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো.মাহমুদুল আলম জানিয়েছে,শীতের প্রকোপ থেকে জেলার মানুষকে রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। আরো বিতরণ করা হচ্ছে শীতবস্ত্র।