রংপুরে বদরগঞ্জে ঘনকুয়াশায় গভীর রাতে ট্রেন লাইনচ্যুত করতে রেলসেতুর মুখে পিলার দিয়ে ভয়াবহ নাশকতার চেষ্টা চালানো হয়েছে। একদল দুর্বৃত্ত রেলসেতুর মুখে রেললাইনের দুটি মাইলেজ পিলার উপড়ে পার্বতীপুর-রংপুর রেললাইনের মাঝে বদরগঞ্জ এলাকায় নাশকতার চেষ্টা চালায়। এতে মাত্র দশ হাত দূরত্বে যমুনেশ্বরী নদীর ওপর রেলসেতু ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ছিল। পথচারীর টর্চলাইটের আলোয় ঘটনাটি ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে রেললাইনের মাঝ থেকে পিলার দুটি সরিয়ে নেয়া হয়। ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বদরগঞ্জ রেললাইনের পাকের মাথা রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায়। এলাকাবাসী ও রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার গভীর রাতে রেললাইনের পাশে স্থাপন করা দুটি মাইলেজ পিলার উপড়ে ফেলে একদল দুর্বৃত্ত। সিমেন্টের তৈরি পিলারগুলোর একেকটির ওজন ছিল প্রায় দেড়শ’ কেজি। দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে পার্বতীপুর-রংপুর রেললাইনের বদরগঞ্জ উপজেলার পাকের মাথা রেলসেতুর কাছে দুই লাইনের ওপর একেকটি পিলার রেখে দেয়।
এতে পার্বতীপুর ও রংপুর থেকে ছেড়ে আসা যেকোনো ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে বড়ধরনের দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু ওই সময় রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় লাইনের ওপর বিশাল আকৃতির পর পর দুটি সিমেন্টের পিলার (খুঁটি) দেখতে পান আবদুর রাজ্জাক নামের এক পথচারী। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে হেঁটে গিয়ে খবর দেন স্টেশন মাস্টার আবদুল মাজেদকে। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে স্থানীয় লোকজন নিয়ে লাইনের ওপর থেকে পিলার দুটি সরিয়ে নেয়া হয়।
স্টেশন মাস্টার আবদুল মাজেদ বলেন, বড়ধরনের নাশকতা করতে কে বা কারা লাইনের ওপর দুটি পিলার দিয়ে রাখে। ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এতে পার্বতীপুর থেকে কুড়িগ্রামের রমনা বাজারগামী ৪২২ ডাউন ট্রেনের শত শত যাত্রী অন্তত একশ’ ফুট গভীরে পড়ে যেত। কিন্তু একজন পথচারী বিষয়টি দেখলে মহাবিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে রেলওয়ের লালমনিরহাট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বদরগঞ্জ থানা পুলিশকেও জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘অল্পের জন্য ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। যারা এ নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনাকারী তাদের শনাক্ত করতে তথ্যানুসন্ধান চালানো হচ্ছে।’