সুন্দরবনের গহীন অরণ্যে জল সীমান্তে অবস্থিত ভাসমান বিওপি পরিদর্শন করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। গতকাল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিজিবি’র খুলনা সেক্টরের নীলডুমুর ব্যাটালিয়ন, সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন, রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানির অধীনস্থ আঠারবেকি ও কাঁচিকাটা ভাসমান বিওপি এবং কৈখালী বিওপি পরিদর্শন করেছেন তিনি।
এসময় বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেন, ভাসমান বিওপি এবং জনবল না থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবনের গহীন অরণ্যের জল সীমান্তে যথাযথ নজরদারি ও অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। তাই জলসীমায় বিজিবি’র সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে আরো দু’টি ভাসমান বিওপি স্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৪,৪২৭ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্ত এলাকার মধ্যে ২৪৩ কিলোমিটার জলসীমা রয়েছে। যার মধ্যে ১৮০ কিলোমিটার জলসীমা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অবস্থিত। সীমান্তে বিজিবি’র কঠোর নজরদারির ফলে চোরাকারবারীরা প্রতিনিয়ত রুট পরিবর্তন করে জলসীমা বা নৌ-পথকে বেছে নিচ্ছে। তাছাড়া বনদস্যু ও জলদস্যুরা সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জল সীমান্তে নানা ধরণের অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে।
সীমান্তের এই ভাসমান বিওপিসমূহে যাতায়াতের কোন সড়ক যোগাযোগ না থাকায় সৈনিকদের খাবার পানি, খাদ্য সামগ্রী, রেশন ও প্রয়োজনীয় রসদ জলযানের মাধ্যমে পাঠাতে হয়।
জল সীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সুন্দরবন ও সেন্টমার্টিনসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আগ্রাসন রোধে নজরদারী বৃদ্ধি, নিজস্ব জল সীমানায় আধিপত্য বিস্তার ও অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিজিবির সাংগাঠনিক কাঠামোতে চারটি হাইস্পীড ইঞ্জিন বোট, দুটি ফাস্ট ক্রাফট ও একটি লজিস্টিক শীপ ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে বিওপিসমূহের অপারেশনাল দক্ষতা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান বিজিবি’র এয়ার উইং করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি হেলিকপ্টার ক্রয় করা হয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে।
পরিদর্শনকালে মহাপরিচালক সেখানে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি বিজিবি সদস্যদের অভিনন্দন জানান। সেইসঙ্গে তাদেরকে দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা, সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে সীমান্ত রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মো. আরশাদুজ্জামান খান, পিবিজিএম সহ বিজিবি’র অন্যান্য কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকবৃন্দ।