সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠ নামছে বাংলাদেশ দল। নিরাপত্তা, ভয়, শঙ্কা- সব পেছনে ফেলে এখন শুধু মাঠের লড়াইয়ের অপেক্ষা। তবুও প্রশ্ন পিছু ছাড়ছে না, এত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যা অনেকটা বন্দিদশার মতো, সেখানে কেমন করবে বাংলাদেশ দল? এমন পরিবেশ কি কোনো প্রভাব ফেলবে দলের ওপর? অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অবশ্য স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, বিমানে উঠে সব চিন্তা তিনি রেখে এসেছেন বাংলাদেশে। এবার শুধু ব্যাট-বল নিয়ে পরিকল্পনা। তিনি বলেন, ‘না, একদমই না। আমরা এটা (নিরাপত্তা শঙ্কা) বাংলাদেশেই রেখে এসেছি, যখন আমরা প্লেনে উঠেছি। আমরা পাকিস্তানে মাঠের ক্রিকেটে ভালো করার চিন্তা করছি। আমরা ভালো একটা শো উপহার দিতে চাই।’
একে তো পাকিস্তানের মাটিতে এক দশকেরও বেশি সময় পর খেলতে গেছে বাংলাদেশ দল।
তার ওপর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখন পাকিস্তান আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে সেরা দল। তবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এ সব নিয়ে ভাবতে চান না। তিনি বলেন, ‘যদি আপনি র?্যাঙ্কিং, রেটিং নিয়ে ভাবেন সেটা আপনার খেলাকে প্রভাবিত করতে পারে। আমরা এটা নিয়ে ভাবছি না। আমরা জানি পাকিস্তান খুবই ভালো দল এবং টি-টোয়েন্টিতে তারা খুবই ধারাবাহিক। সেটাই র্যাঙ্কিংয়ে প্রতিফলিত হয়েছে। আপনি যদি আমাদের টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের গ্রাফ দেখেন তাহলে দেখবেন এটা উর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিক সিরিজে আমরা যেমন ভালো করেছি সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে, আশা করছি ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারবো।’
সাকিব আল হাসান নেই আগে থেকেই। এবার পাকিস্তান সফরে থাকছেন না টাইগারদের আরেক ব্যাটিং ভরসা মুশফিকুর রহীম। তাদের অভাব থাকলেও তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছেন রিয়াদ। টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আপনি যদি বিপিএল’র পারফরম্যান্স দেখেন তরুণ ক্রিকেটাররা ভালো করেছে। আমাদের দলে বেশ কিছু তরুণ ক্রিকেটার আছে। এই সিরিজেও তরুণদের ভালো নৈপুণ্য দেখতে চাইবো। আর অভিজ্ঞতার কথা যদি বলেন- আমি, সৌম্য, তামিম, মোস্তাফিজ, আল আমিন, রুবেল, শফিউল সবাই দীর্ঘদিন ধরে খেলছি। আমাদের দলে তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেল রয়েছে। যেমনটা বললাম ভালো পারফর্ম করতে আমাদের ব্যক্তিগত ও দলীয় পারফরম্যান্সে নজর দিতে হবে।’
রিয়াদ সর্বশেষ পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন ২০০৮-এ। তবে তার পাকিস্তানে খেলার স্মৃতি খুব পুরানো হয়নি। কারণ তার সুযোগ হয়েছিল ২০১৭তে পাকিস্তানের ঘরোয়া আসর পিএসএল খেলে যাওয়ার। তবে এবার এখানে জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে তার ভিন্ন অনুভূতি। রিয়াদ বলেন, ‘ভালো লাগছে পাকিস্তানে। আমার মনে হয় এখানে ক্রিকেট খেলার পরিবেশ খুবই ভালো। আমরা এখানে ভালো ক্রিকেট খেলতে মুখিয়ে আছি।’
তবে সংবাদ সম্মেলনে ঘুরেফিরে আসে কঠোর নিরাপত্তায় বন্দিদশার কথা। কিন্তু টাইগার অধিনায়ক এমন বন্দিদশাতে ইতিবাচক দিকও খুঁজে পেয়েছেন। যেমনটা পেয়েছেন টাইগারদের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও। তিনি বলেন, ‘আমি যেটা প্রথমে বললাম, যখন আমরা প্লেনে উঠি, তারপর থেকে আমরা পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করছি না। আমরা মনে হয় দলের প্রতিটা খেলোয়াড় ওভাবেই চিন্তা করছে। আমরা শুধুমাত্র এখানে ভালো পারফরম্যান্স করার জন্য এসেছি, এবং ভালো খেলার জন্য সবাই মুখিয়ে আছি।’ এ বছরই অস্ট্রেলিয়ায় টি-টেয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাই এই সফরটা টাইগার অধিনায়কের কাছে অন্যরকম গুরুত্ব পাচ্ছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে, জয়ের ধারায় থাকতে হবে এবং সিরিজগুলো জিততে হবে।
আমার মনে হয় এটা আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় সুযোগ দীর্ঘ সময় পর পাকিন্তানে সিরিজ জেতা। আমরা এই সিরিজ নিয়ে সেভাবেই চিন্তা করছি।’