চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মোরশেদ আলম (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। তবে, কোন হতাহতের কথা জানায়নি র্যাব। র্যাবের দাবি, মোরশেদের বিরুদ্ধে কুতুবদিয়ায় সাগরে ডাকাতির সময় ৩১ জেলেকে পানিতে ফেলে দেয়া এবং হত্যা মামলাসহ দুই ডজনের অধিক মামলা রয়েছে। তার পরিবারের দাবি, মোরশেদ আলম কোন সময় ডাকাত ছিল না। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মাহমুদুল হাসান মামুন জানান, রোববার ভোর রাতে বাঁশখালী উপজেলার বাণীগ্রাম লটমনি পাহাড় এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে মোরশেদ আলম নিহত হয়। নিহত মোরশেদ আলম বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল এলাকার ছিদ্দিক আহমেদের ছেলে।
মাহমুদুল হাসান মামুন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লটমণি পাহাড়ে অভিযানে গেলে মোরশেদ বাহিনীর সঙ্গে র্যাবের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে তার মৃতদেহের পাশাপাশি একটি বিদেশি পিস্তল, একটি থ্রি কোয়ার্টার গান, দুইটি ওয়ান শ্যূটার গান, ১৯ রাউন্ড গুলি ও ৩টি রামদা জব্দ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, মোরশদে আলমের বিরুদ্ধে কুতুবদিয়া এলাকায় সাগরে ডাকাতির সময় ৩১ জেলেকে পানিতে ফেলে হত্যা মামলাসহ দুই ডজনের অধিক মামলা রয়েছে। ২০১৩ সালের ২০শে জুলাই বাঁশখালীর চাম্বল বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি বুজুরুছ মেহের চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে মোরশেদ বাহিনী। বুজুরুছ মেহের খুনের পর মোরশেদ আলমকে পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ৪
বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন থানায় অর্ধশতাধিক জিডিও আছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মামুন।
নিহত মোরশেদ আলমের ছোট ভাই মিজানের উদ্ধৃতি দিয়ে আমাদের বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা সম্পূর্ণ কথিত। মূলত মোরশেদ আলমকে গত ২৪শে জানুয়ারি দিবাগত রাত ভোর ৪টার দিকে সিভিল পোশাকে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে বাঁশখালী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও তাদের কোন রিসিভ কপি দেয়া হয়নি। র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা মোরশেদ আলমের কোন সন্ধান দেননি পরিবারের সদস্যদের। বরং সংবাদ সম্মেলন করার পরামর্শ দেন। সংবাদ সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এরমধ্যে রোববার ভোররাতে শুনতে পান বন্দুকযুদ্ধে মোরশেদ আলম নিহত হয়েছে। মিজান অভিযোগ করে বলেন, তার ভাই মোরশেদ আলম জলদস্যু বা ডাকাত ছিল না। স্থানীয় একটি মসজিদের ওয়াকফ এস্টেটের জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে কুতুবদিয়ার সাগরে ডাকাতির মামলায় ফাঁসিয়েছেন। বুজরুছ মেহের হত্যাকান্ডের সময় মোরশেদ জেলে ছিলো। এরপরও মোরশেদের বিরুদ্ধে মারামারিসহ বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিলেন তারা। তাদের চক্রান্তে মোরশেদ আলমকে হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এদিকে, জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মিথ্যা মামলায় হয়রানি থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে মোরশেদ আলম চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের বরাবরে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ১০৩৩৮/২রা, গত ১৮ই অক্টোবর স্মারকমূলে তদন্ত প্রতিবেদনে বাঁশখালী থানার তৎকালীন এসআই ফারুক উদ্দীন প্রতিপক্ষগণকে খারাপ চরিত্রের লোক বলে উল্লেখ করেন এবং মসজিদের দখল নিয়ে বিরোধের কথা উল্লেখ করেন।