ধামরাইয়ে চতুর্থ শ্রেণির সেই স্কুল ছাত্রী এখন ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। চরম অভাব অনটনে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। মঙ্গলবার সকালে ওই বাড়িতে গেলে তার বাবা ও মা মেয়ের এমন অবস্থার কথা ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বলেন, ধর্ষকের কঠিন বিচার দেখবো বলে গোপনে টাকার বিনিময়ে আপস করিনি। এখন তো দেখি মেয়েকেও বাঁচানো কষ্ট হচ্ছে। সময় মতো তিন বেলা খাবারও দিতে পারছেন না তারা। আর গ্রামবাসীর তো ছিঃ ছিঃ আছেই। পড়ালেখার শখ থাকলেও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় লজ্জায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে তার মেয়ে।
ঘটনাটি চৌহাট ইউনিয়নের মুন্সীচর গ্রামের।
জানা গেছে, ওই গ্রামের নিকলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী পাশের বাড়ির মোকছেদ আলী (৫৫)-এর বাড়িতে টেলিভিশন দেখতে যেতো। বাড়িতে কেউ না থাকার সুয়োগে মোকছেদ আলী ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে তাকে। এভাবে হুমকির মুখে একাধিকবার ধর্ষণ করায় স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে কয়েকজন মাতাব্বরের মাধ্যমে ধর্ষিতার পরিবারের সঙ্গে আপসের চেষ্টা চালায় চার সন্তানের জনক ধর্ষক মোকছেদ। মাতব্বররা কয়েক দফায় ধর্ষিতা ও তার বাবাকে আটকও করে রাখে। ধামরাইয়ে আমতা ইউনিয়নের নান্দেশ্বরী গ্রামের বাস চালক চানমিয়ার বাড়িতে ১২ ঘণ্টা আটকে রেখে ২ লাখ টাকা প্রদানের বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনা আপস করা হলো মর্মে ধর্ষিতার বাবার কাছ থেকে সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। এসময় মাতব্বর চৌহাট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন, বালিয়াটি ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আল আমীন, মুন্সিরচর গ্রামের মরণ আলী, ধর্ষক ও তার ভাই দরবার আলীসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে ধামরাই থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি দ্বিপক চন্দ্র সাহা তাৎক্ষণিক ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে ধামরাই থানায় মামলা নেন এবং ধর্ষক মোকছেদ তার ও কয়েকজন মাতববরকে গ্রেপ্তার করেন। বর্তমানে ধর্ষক জেল হাজতে থাকলেও মাতব্বরা জামিনে আছেন।
স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, তার মেয়ে এখন ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। চরম অভাব তাদের সংসারে। ধামরাই থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি দ্বিপক চন্দ্র সাহা জানান, এ মামলায় শুধু ধর্ষক নয় ধর্ষণের সহযোগিতা করায় তার স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।