জুনিয়রের কাছে হেনস্থার শিকার হয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সিনিয়র এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে নীল দিঘী পাড়ে হেনস্থার এ ঘটনা ঘটে।
পরে বিকালে ভুক্তভোগী ওই ছাত্র ঘুমের ওষধ খেয়ে আত্মাহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তার সহপাঠীরা অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে রাত ১১টার পর তার জ্ঞান ফিরে।
হেনস্থার শিকার ওই ছাত্রের নাম সাব মিয়া সোহেল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, গত ৮ই ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক একটি ফেসবুক গ্রুপে ফলিত গণিত বিভাগ ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান দূর্জয় ও ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক যুগলের পেছন থেকে তোলা ছবি পোস্ট করে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সোহেলকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে নীল দিঘী পাড়ে আসতে বলে দুর্জয় ও তার সহপাঠীরা।
এ সময় সোহেল তার সেই পোস্টের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেও দূর্জয় ও তার সহপাঠী সোহান (সমাজকর্ম ২০১৮-১৯ বর্ষ), বাংলা বিভাগের তানভীর মাহতাব সামিসহ (বাংলা, ২০১৮-১৯ বর্ষ) ৮-১০ জন তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাকিব মোশাররফ ধ্রুব এর অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ সময় ওই ছাত্রীও সোহেলকে কান ধরিয়ে হাঁটায় এবং চরমভাবে লাঞ্ছনা করে বলেও জানা যায়।
এদিকে এ ঘটনার পর মাইজদী বিশ্বনাথের মেসে গিয়ে সোহেল আত্মহত্যার চেষ্টা করলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সহপাঠীরা তাকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সাকিবুল হাসান দূর্জয় বলেন, ওরা কয়েকজনে মিলে ছবিগুলো তুলেছিলো। পরে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করে সোহেল। বিষয়টি ক্যাম্পাসের সবাই জেনে যায় এবং এমনকি ওই ছাত্রীর পরিবারও জেনে যায়। ফলে তার পরিবারের পক্ষ থেকেও পড়ালেখা বন্ধের হুমকি আসে এবং ক্যাম্পাসে সেটি একটি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় সে ভেঙ্গে পড়েছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য সকাল ১১টায় কয়েকজন মিলে সোহেলের সাথে দেখা করেছি। এসময় তাকে কোন ধরণের মারধর কিংবা লাঞ্ছনা করা হয়নি বলে জানান দূর্জয়।
হামলার বিষয় নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, এ হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।