× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রোহিঙ্গা শিবিরে হামলা এবং...

বিশ্বজমিন

ব্রাড এডামস
(৪ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০, শনিবার, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে ২৭শে জানুয়ারি সকালে নিজেদের বাসস্থানে থাকা রোহিঙ্গা পাস্তুর তাহের ও তার ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে অপহরণ করা হয়। এর আগের রাতে কক্সবাজারে কুতুপালং ২ নম্বর শিবিরে বসবাসরত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ২২টি পরিবারের ওপর হামলা চালায় বেশ কিছু মানুষ। এতে বসবাসরত মানুষজনকে প্রহার করে তারা। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। রোহিঙ্গাদের বিস্তৃত এই শিবির থেকে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ লুট করে নেয়। এতে কমপক্ষে ১২ জন রোহিঙ্গা খ্রিস্টান শরণার্থী আহত হয়ে পরে হাসপাতালে ভর্তি হন। অস্থায়ী ভিত্তিতে তৈরি খ্রিস্টানদের একটি চার্চ ও স্কুলও ভাঙচুর করা হয়। এই হামলার পর পরিবারগুলো জাতিসংঘের অন্তর্বর্তী একটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে।
তারা ৫৯ জন হামলাকারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে পুলিশের কাছে।

বেনার নিউজ এজেন্সি এবং রেডিও ফ্রি এশিয়া রিপোর্ট করেছে যে, শিবিরে বসবাসকারীরা বিশ্বাস করেন এই হামলাকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’র (আরসা)। আরসা হলো রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর একটি সশস্ত্র গ্রুপ। তবে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে খ্রিস্টানদের ওপর হামলার নিন্দা করেছেন আরসার একজন প্রতিনিধি। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অধিকারের পক্ষে লড়াই করছে আরসা। এই গ্রুপটির ক্ষতি করছে হামলাকারীরা।

তাহেরের স্ত্রী রশিদার আশঙ্কা তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে এবং মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। তিনি হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছেন, কেউই আমাকে এ বিষয়ে কোনো পরিষ্কার তথ্য দিচ্ছে না। তবে আমার আত্মীয়স্বজন বলেছেন, আমার মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তরিত করে মুসলিম বানানো হয়েছে এবং বিয়ে করতে বাধ্য করেছে।

২০১৭ সালে জাতি নিধন অভিযানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংসতা চালায়। এর ফলে কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এর বেশির ভাগই মুসলিম রোহিঙ্গা। তাদের সঙ্গে রয়েছেন প্রায় ১৫০০ রোহিঙ্গা খ্রিস্টান।

তবে সর্বশেষ হামলার শিকার ব্যক্তিরা বলছেন, ওই হামলাকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সাধারণ আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছে। তাদের দাবি এটা খ্রিস্টানদের উদ্দেশ্য করে হামলা নয়। তবে ভিকটিমদের অভিযোগ, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে রক্ষায় যথেষ্ট করছে না অথবা তাহের ও তার মেয়েকে উদ্ধারে যথেষ্ট করছে না। একজন বলেছেন, আশ্রয়শিবিরের কর্মকর্তারা আমাদের প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আরেকজন বলেছেন, কক্সবাজারের একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে বলেছেন, যদি ভিকটিমরা নিরাপদে থাকতে চান তাহলে তাদের উচিত চাঁদে চলে যাওয়া।

রোহিঙ্গা খ্রিস্টানরা এর আগেও আশ্রয় শিবিরে হুমকি ও সহিংসতার মুখোমুখি বলে রিপোর্ট হয়েছে। খ্রিস্টান রোহিঙ্গা শরণার্থী, যারা শত্রুতা ও সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছেন তাদের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিউর ইয়াংহি লি। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের জরুরি ভিত্তিতে তাহের ও তার মেয়েকে খুঁজে বের করা উচিত এবং এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। আশ্রয় শিবিরে অবস্থানকারী ধর্মীয় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা খ্রিস্টান সহ ঝুঁকিতে থাকা সব গ্রুপকে অবিলম্বে সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া উচিত বাংলাদেশ সরকারের।

(লেখক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক। এ লেখাটি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তার লেখার অনুবাদ)  
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর