শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা বা অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের তিনি আমন্ত্রণ জানাননি। পরিবর্তে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দিল্লির আপামর জনগণকে। রোববার সকালেই এক টুইট বার্তায় তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার আগে দিল্লির মানুষকে তাদের সন্তানকে আশীর্বাদ জানাতে ঐতিহাসিক লাল কেল্লার বাইরে রামলীলা ময়দানে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাঠিয়েছিলেন কয়েকশ’ শিক্ষক-শিক্ষিকা, ডাক্তার, গবেষক, ছাত্র থেকে শুরু করে এম্বুলেন্স চালক, সাফাইকর্মীদের। কেজরিওয়ালের ভাষায়, রাজনীতিকরা আসবেন, যাবেন। কিন্তু দিল্লির উন্নয়নের কাজ করার জন্য এরা থাকবেন। এরাই দিল্লির নির্মাতা। তার মতে, দিল্লির মানুষ দেশের রাজনীতির সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছেন।
এদিন ৬ মন্ত্রী সহ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, কে, কাকে ভোট দিয়েছেন জানার প্রয়োজন নেই। বিজেপি, কংগ্রেস নির্বিশেষে সকলের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। তিনি বলেছেন, গত পাঁচ বছর শুধু কাজ করে গিয়েছি। কাজের ক্ষেত্রে কোনো ভেদাভেদ করিনি। কেউ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে তার কাজ করবো না বলিনি।
সবার জন্য কাজ করেছি। ২ কোটি দিল্লিবাসীর কাছে আবেদন জানিয়ে কেজরিওয়াল বলেছেন, নির্বাচন শেষ। যাকেই ভোট দিয়ে থাকুন না কেন, আজ থেকে আপনারা সকলে আমার পরিবার।
যেকোনো রকম প্রয়োজনই হোক না কেন, নির্দ্বিধায় আমার কাছে চলে আসবেন। কে কোন পার্টির, কে কোন ধর্মের, কে কোন জাতের দেখবো না আমি। নির্বাচনী প্রচারে তাকে নিয়ে বিজেপি নেতারা যেসব মন্তব্য করেছেন সে সব তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। বলেছেন,ওদের কাছে অনুরোধ, রাজনীতিতে যা হয়েছে সব ভুলে যান। সকলের সঙ্গে মিলে দিল্লির উন্নতি করতে চাই আমি। এ প্রসঙ্গেই তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার কথা বলেছেন। দিল্লিকে এক নম্বর শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশীর্বাদও। বিনামূল্যে মানুষের কাছে নানা পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন বলেই কেজরিওয়াল ভোটে জিতেছেন বলে গত কয়েক দিন ধরে?ই সরব হয়েছে বিরোধীরা। এ দিন তাদেরও একহাত নিয়ে কেজরিওয়াল বলেছেন, পৃথিবীতে যা কিছু অমূল্য, তা বিনামূল্যেই দিয়েছেন ভগবান। সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা নেবো কেন? হাসপাতালে কেন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবে না মানুষ? কেজরিওয়াল দিল্লিকে ভালোবাসেন, দিল্লিবাসীও কেজরিওয়ালকে ভালোবাসেন, এই ভালোবাসার কোনো মূল্য হয় না। এদিন কেজরিওয়াল ছাড়াও শপথ নিয়েছেন মনীশ সিসোদিয়া, সুরেন্দ্র জৈন, গোপাল রাই, কৈলাশ গেহলট, ইমরান হোসেন এবং রাজেন্দ্র গৌতম। এরা প্রত্যেকেই আগের মন্ত্রিসভাতেও ছিলেন।