× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

১৫ রঙের ফুল এখন গাজীপুরের গবেষণা মাঠে / লিলিয়াম চাষে নতুন সম্ভাবনা

এক্সক্লুসিভ

ইকবাল আহমদ সরকার, গাজীপুর থেকে
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার

অপরূপ সৌন্দর্য, নজরকাড়া রঙ আর ঘ্রাণের কারণে বিশ্বজুড়ে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে লিলিয়াম ফুল। আন্তর্জাতিকভাবে ফুল বাণিজ্যের দিক দিয়ে লিলিয়াম ৪র্থ স্থানে অবস্থান করছে। শীত প্রধান দেশে উৎপাদিত এই ফুল আমাদের দেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় তা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। কিন্তু  এখন আর তা আমদানির জন্য আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে না। দেশেই বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা সম্ভব হবে জনপ্রিয় এই ফুল। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের সফলতায় গবেষণা মাঠে এখন ঝলমল করছে ১৫ রঙের লিলিয়াম ফুল। এতে উচ্ছ্বসিত সবাই। বিজ্ঞানীদের গবেষণা শেষে ফুল চাষিদের মধ্যে এর চাষ প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হচ্ছে।
বাহারি জনপ্রিয় লিলিয়াম ফুল ব্যাপকভাবে চাষ করে এগিয়ে যেতে পারে ফুল চাষিদের পাশাপাশি আমাদের দেশ।
ফুল গবেষণা কেন্দ্রের বিভাগীয় প্রধান ড. কবিতা আনজু মান আরা ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফারজানা নাসরীন খান জানান, প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ফুল নিয়ে গবেষণা করছে। তার মধ্যে নতুন সংযোজন হচ্ছে এই লিলিয়াম। এর বর্ণ বৈচিত্র্য ও ফুলদানিতে এর স্থায়িত্বকাল বিবেচনায় আমাদের দেশে এই লিলি ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর এই চাহিদার ওপর ভিত্তি করেই আমাদের দেশে লিলি ফুল বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। আর এই চাহিদার কথা চিন্তা করেই কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০১৫ সাল থেকে এর ওপর গবেষণা শুরু করি এবং এর মধ্যে আমরা ব্যাপক সফলতা পেয়েছি উৎপাদন ও প্রযুক্তিগত বিষয়ের ওপর। এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- এই ফুলের বংশ বিস্তারে এর ভালো মানের কন্দ কীভাবে উৎপাদন করা যায় এবং বিদেশ থেকে আমদানি কমিয়ে নিজস্ব উৎপাদিত কন্দ দিয়ে যাতে ফুল ফোটাতে পারি। গোলাপি, হলুদ, বেগুনি, সাদাসহ ১৫ রঙের লিলিয়াম ফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছেন। এতে আনন্দের পাশাপাশি ব্যাপক সম্ভাবনার দিকে হাঁটছেন বারির বিজ্ঞানী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা কন্দ সংগ্রহ, রোগবালই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রতিরোধসহ প্রযুক্তিগত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণায় সফল হয়েছেন। সাধারণত কন্দ লাগানোর ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে লিলিয়াম ফুল ফুটতে শুরু করে। সঠিক সময়ে সংগ্রহ করা গেলে এই ফুল ১৪-১৫ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে। আমাদের দেশে প্রতিটি লিলি ফুল ২৫০ টাকা থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়। উজ্জ্বল আকর্ষণীয় রং এবং দীর্ঘস্থায়িত্বের কারণে বাংলাদেশের ফুল প্রেমীদের কাছে লিলিয়াম ব্যাপক সমাদৃত। চাহিদার কারণে আমাদের দেশে প্রতিবছর প্রচুর লিলিয়াম আমদানি করতে হয়। দেশ ভেদে এ ফুলের চাহিদাও ভিন্ন। সাধারণত শীতপ্রধান দেশ নেদারল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা, আমেরিকা ও চীনে এই ফুল পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ফুল ফোটাতে যারা এখানে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন, তাদের মনেও রয়েছে আনন্দের বন্যা। কেউ কেউ মুগ্ধ হয়ে চাকরি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ফুলের মাঠেই কাজ করতে চান। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আবুল ওহাব জানান, গবেষণা মাঠে লাগানো কন্দ পূর্ণাঙ্গ গাছে পরিণত হওয়ার পর জানুয়ারির শেষের দিকে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এর পুরো সফলতায় ব্যাপকভাবে লিলিয়াম ফুলের চাষ নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও রাখবে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাগণ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর