× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বুধবার

চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন নিয়ে দলের ভেতরে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনির আত্মীয়ের সঙ্গে আমার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও অপরাজনীতি করা হয়েছে। যা না করে আমাকে বললে মেয়র পদ এমনিতেই ছেড়ে দিতাম। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এমন মন্তব্য করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। মেয়র বলেন, মেয়র পদে মনোনয়ন আটকে দেয়ার জন্য এ ধরনের ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়া খুবই দুঃখজনক। এ রকম অপপ্রচার কিছুতেই কাম্য নয়। যার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সমপৃক্ততা নেই।

ছবি প্রসঙ্গে নাছির বলেন, তিনদিন আগে আমাকে একটা ছবি দেখানো হল। সেখানে দেখলাম, একটা ছবিতে গোল চিহ্ন করা হয়েছে, পাশে একরাম খান নামে একটা ছেলে।
সে ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিল। ছাত্রলীগের শাহজাহান-কলিম কমিটির এক নম্বর সহ-সভাপতি ছিল। সে এখন তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় একটি কলেজের অধ্যক্ষ। সেখানে থানা আওয়ামী লীগের মেম্বার এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি। আমি তাকে চিনি আমার চরম দুঃসময়ে একজন ব্যাংকারের মাধ্যমে, যিনি তার সঙ্গে একই কমিটিতে ছিলেন। দুঃসময়ে একদিন রাতে একরামের বাড়িতে গিয়ে একনাগাড়ে প্রায় দেড়-দুই মাস একটা কক্ষে ছিলাম, সূর্যের আলোও দেখিনি। কক্ষটিতে সবসময় তালা মারা থাকতো। শুধু ভাত-নাস্তার সময় সেটা দিয়ে যেত। সেভাবেই যোগাযোগ। ছবি তোলার নেপথ্যের ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে একরামের একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। একদিন আমাকে এসে বলল, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটা আপনি একটু উদ্বোধন করে দেন। আমি জাস্ট ওকে চিনি সে হিসেবেই। নগরীর অক্সিজেনের ওখানে গিয়ে একটা কেক কেটে চলে এসেছি। আমার পাশে কে দাঁড়িয়েছে, না দাঁড়িয়েছে আমি দেখিওনি। ছবিতে আরেকটা যেটা বলা হচ্ছে শাহরিয়ার রশীদ খানের ভাই, তাকে আমি চিনিও না, জীবনে কোনোদিন দেখিওনি। সেই লোকের পাশে দাঁড়ানোর ছবি কিভাবে এসেছে, সেটা যারা ছড়িয়েছেন, তারাই বলতে পারবেন। আমি শুধু এতটুকু বলতে পারি, তার সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র কোনো সমপর্ক, যোগাযোগ, দেখা-সাক্ষাৎ নেই।

এই অপরাজনীতি কষ্ট দিয়েছে উল্লেখ করে নাছির নিজের চোখ মুছেন। এরপর বলেন, যেখানে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে আমি সংগ্রাম করেছি, আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করছি, ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই, রাজনীতিকে আমি এবাদত হিসেবে নিয়েছি, এখনও পর্যন্ত আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করছি, সেই জায়গায় ছোট্ট একটা মেয়র পদের জন্য এতকিছু করা হলো। আমার কাছে মেয়র পদটা তো বড় না, রাজনীতিটাই আমার কাছে বড়। কেউ যদি আমার কাছে এসে বলত, ভাই আমার মেয়রের পদ দরকার আছে, তুমি সরে যাও, আমি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিতাম। গতবার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি যথারীতি মনোনয়ন দলের কাছে চেয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছেন। আমি তো কোনো লবিং করিনি। তাহলে এত মিথ্যাচার, অপপ্রচার, অপরাজনীতির তো প্রয়োজন ছিল না। এগুলো করতে গিয়ে কি হবে? দলই তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা তো দুঃসময়ের পরীক্ষিত কর্মী। আমাদের তো নতুন করে পরিচিত হওয়ার সুযোগ নেই। সেজন্যই বলছি, মনোনয়ন না পেয়ে কষ্ট যদি পেয়ে থাকি এই জায়গায় কষ্ট পেয়েছি। শতভাগ একটা মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার তো কোনো মানে হতে পারে না।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৮শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির এম মনজুর আলমকে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সমপাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। এবার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯শে মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। এবার নাছিরের বদলে মেয়র পদে মনোনয়ন পেয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সমপাদক রেজাউল করিম চৌধুরী। মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও নাছির বলেন, মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি হতাশ নন। রেজাউল করিমকে জেতাতে তিনি জীবন বাজি রেখে কাজ করবেন।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস। বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সমপাদক ম. শামশুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সমপাদক চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর