× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চুড়িহাট্টায় এখনো কান্না থামেনি

প্রথম পাতা

শুভ্র দেব
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বৃহস্পতিবার

বুধবার দুপুর দেড়টা। পুরান ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টা মোড়ের ওয়াহেদ ম্যানশনের দিকে অপলক তাকিয়ে আছেন আশি ছুঁই ছুঁই বয়সের এক বৃদ্ধ। কোলে চার মাস বয়সী এক শিশু। বৃদ্ধের চোখ গড়িয়ে জল পড়ছিলো। ছোট্ট শিশুটিও ফ্যাল ফ্যাল করে তাকাচ্ছিলো বৃদ্ধের দিকে। বৃদ্ধ লোকটি ভবনটির দিকে তাকিয়ে কি যেন খোঁজার চেষ্টা করছিলেন। কাছে যেতেই বললেন,  এখানেই আমার সব শেষ হয়ে গেছে। কলিজার টুকরো পরিবারের উপার্জনক্ষম দুই ছেলেকে এখানে হারিয়েছি।
আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছিলো আমার দুই সন্তান। এই আগুন আমার সন্তানদের পুড়ায়নি। পুড়িয়েছে আমার কলিজাটাকে। তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে এখন মরার মত বেঁচে আছি। আমি এই শোক আর সইতে পারছি না। বাসায় গেলেও শান্তি পাই না আবার এখানে আসলেও কান্না ধরে রাখতে পারি না। একসঙ্গে দুই সন্তান হারানোর কষ্ট যে কতটা যন্ত্রণাদায়ক সেটি উপলব্ধি করছি প্রতিটা ক্ষণে ক্ষণে।এ বৃদ্ধ চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনের এম আর টেলিকমের ব্যবসায়ী মো. মাসুদ রানা ও মো. মাহবুবুর রহমান রাজুর বাবা সাহেব উল্ল্যাহ।
চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের আজ এক বছর। ভয়াল ওই অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নারী পুরুষের প্রাণহানী হয়েছিলো। বছর ঘুরে এলেও ক্ষত শুকায়নি স্বজনহারাদের। স্বজনরা এখনও ভুলতে পারেননি সেই দিনের বিভিষিকাময় স্মৃতি। ঘুমের মধ্যে এখনও আঁতকে উঠেন কেউ কেউ। খুঁজে বেড়ান আগুনে শেষ হয়ে যাওয়া প্রিয় মুখগুলো। প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে তারা মরার মত বেঁচে আছেন। একটি বছর পেরিয়ে গেলেও স্বজনহারাদের পরিবারে নেই সেই আগের মত চাঞ্চল্য, হাসি-আনন্দ। ভয়াল আগুনের লেলিহান শিখা শুধু ওইদিন ৭১ জন মানুষকে পুড়ায়নি। পুড়ে গেছে ৭১টি পরিবারের বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটুকু। এসব পরিবারের অনেকেই এখন খেয়ে না খেয়ে আছেন। আবার নতুন করে শুরু করার চেষ্টা করেও যেন পারছেন না।
এদিকে বছর ঘুরে এলেও বদলায়নি সেই এলাকার দৃশ্যপট। এখনও অনেকটা আগের মতই আছে চুড়িহাট্টা ও তার আশেপাশের অলিগলি। আগুনের তাপে ক্ষয় হওয়া ভবনগুলো আগের মত দাঁড়িয়ে আছে। বিপদজ্জনক হওয়ার পরও টুকটাক মেরামত করে আবার ভাড়া দেয়া হচ্ছে। যেসকল দাহ্য পদার্থের জন্য ওইদিনের আগুনের ভয়াবহতা বেড়েছিলো সেগুলো এখনও আছে সেখানে। বেশকিছু দোকানে প্লাস্টিকের দানা, কেমিক্যাল বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ভবনের বেইজমেন্ট নিচতলা ভাড়া নিয়ে ব্যবসায়ীরা ইথানল, বিউটক্সিইথানল, বিউটেন ও আইসোবিউটেন কেমিক্যালে মজুত করেছেন। এসব কেমিক্যাল থেকে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনার পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, শিল্প মন্ত্রনালয়, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি) পৃথকভাবে ঘটনার  তদন্ত করছে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে এসব প্রতিষ্ঠান অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও প্রতিকারের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ করে। এরমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি ২৫টি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কমিটি ৩১টি সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশের কোনটিই এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া ৭১ জনের প্রাণহানীর ঘটনায় করা মামলার কোনো অগ্রগতি নাই। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য পুলিশ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারছে না। এ নিয়ে পুলিশ ও ফরেনসিক চিকিৎসকরা একে অপরকে দায়ী করছেন। এতে করে স্বজনাহারাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের ভাষ্যমতে, এত বড় ধরনের একটি ঘটনার তদন্ত নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কোনো তৎপরতা নাই। এ বছরেও মামলার লক্ষণীয় কোনো অগ্রগতি নেই।  মামলার বাদী বলছেন তদন্ত কর্মকর্তা তার সঙ্গে সর্বশেষ কবে যোগাযোগ করেছিলেন সেটি তার মনে নাই। মামলার এজাহার পুলিশের মনমত হওয়াতে মুল অভিযুক্তরা বেঁচে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই মামলায় গ্রেপ্তার ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের দুই ছেলে ছয় মাসের জামিন শেষে এখন আরও এক বছরের জামিন বাড়িয়েছেন উচ্চ আদালত থেকে। গতকাল সরজমিন চুড়িহাট্টায় গিয়ে দেখা যায়, এক বছরের মাথায় ওই এলাকায় লক্ষণীয় কোনো পরিবর্তন নাই। আগুনে বিধ্বস্ত ভবনগুলো সেই আগের মতই আছে। পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো মেরামত করে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা শুরু করেছেন। আগুনের সূত্রপাত যে ভবন থেকে হয়েছিলো সেই ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচতলা মেরামত করে প্লাস্টিকের দানার এক ব্যবসায়ীকে ভাড়া দেয়া হয়েছে। চারতলা এই ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় তাকালে সেদিনের ধ্বংস লীলার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভবনের পাশের রাজমহল রেস্তোরায় আবার আগের মতই জমজমাট ব্যবসা শুরু করেছে। তার উল্টোপাশের মোল্লা বিরিয়ানির দোকানও চালু হয়েছে। ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনের আরেকটি ভবনের নিচতলায় ফল বিক্রির বেশ কিছু দোকান দেখা গেছে। এছাড়া কমিউনিটি সেন্টার রোডে যেখানে ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলা থেকে প্রথম দেওয়াল ভেঙ্গে পড়েছিলো তার আশেপাশের দোকানগুলো চালু করা হয়েছে। তবে এখানকার মদিনা ডেন্টাল ফার্মেসিটি বন্ধ হয়ে গেছে। আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচার জন্য ওই ফার্মেসিতে গিয়ে কয়েকজন আশ্রয় নিয়েছিলেন। ফার্মেসির মালিকসহ সবাই একসঙ্গে পুড়ে মারা যান। এখন এই ফার্মেসীকে দোতলা ভবন করে একটি ফাস্টফুডের দোকান করা হয়েছে। এছাড়া উর্দুরোড, নবদত্ত রোডের দোকানগুলো আবার চালু করা হয়েছে। চুড়িহাট্টা মোড়ের চুড়িহাট্টা মসজিদের বিধ্বস্ত অংশগুলো মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে গতকাল সকাল থেকে চুড়িহাট্টায় এসে ভীড় করছিলেন স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা। বুকে নিহত স্বজনদের ছবি, চোখে জল নিয়ে এক আবেগি অপেক্ষা। চুড়িহাট্টার রাস্তায়, পুড়ে যাওয়া ভবনের মাটিতে যেন এখনও তারা হারানো স্বজনদের অস্তিত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছেন। অগ্নিকাণ্ডের এক বছরপূর্তিতে অনেকেই ঢাকার বাইরে থেকে সেখানে এসেছিলেন। ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে বাবার ছবি হাতে নিয়ে দাড়িয়েছিলেন নোয়াখালীর নাটেশ্বরের মো. আহসান উল্লাহ ও তার ছোট ভাই মো. হাসান উল্লাহ। অগ্নিকাণ্ডে তারা তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা মো. সিদ্দিক উল্লাহকে (৪৫) হারিয়েছেন।  হাসান উল্লাহ মানবজমিনকে বলেন, আমার বাবা একটি দোকানে প্যাকেটিংয়ের কাজ করতেন। ওইদিন বাবা ডিউটি শেষ করে গ্রামের বাড়ি যাবার উদ্দেশে চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আগুনের প্রথম ধাক্কাটাই তার গায়ে লাগে। বাঁচার জন্য তিনি ওয়াহেদ ম্যানশনে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে একসঙ্গে উদ্ধার করা হয় ২৬ জনের মরদেহ। সেখানে আমাদের বাবাও ছিলেন। তার আয়েই আমাদের চার ভাই, এক বোন ও মায়ের সংসার চলতো। এখন আমাদের এত বড় পরিবার খুব অর্থকষ্টে কাটছে। আমি একটি চাকরি করে অনেক কষ্ট করে পরিবারের খরচ চালাই। তার মৃত্যুর পরে মরদেহ নেয়ার সময় ২০ হাজার টাকা ও প্লাস্টিক ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে আরও কিছু টাকা পেয়েছিলাম। এছাড়া আর কোনো অনুদান পাইনি। একইভাবে ভাগ্নে আহসান উল্লাহর (৩২) ছবি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তার আব্দুল মান্নান। ভয়াল সেই আগুনে আহসান উল্লাহ পুড়ে মারা যান। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের সরু মিয়া ও বিবি বেলবা বেগমের সন্তান। একটি লেডিস ব্যাগ তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। আহসান উল্লাহর পরিবারে স্ত্রী কুলসুম ছাড়াও পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী সন্তান এখন খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছেন। সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত কুলসুমা। মামা আব্দুল মান্নান বলেন, চুড়িহাট্টা মোড়েই আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। ঘটনার দিন আমি ছিলাম না। তবে আগুনে আমার দোকান পুড়ে যায়। এখন লোন করে টাকা নিয়ে আবার ব্যবসা শুরু করেছি। কিন্তু আমার বোনের ছেলের মৃত্যুতে তার পরিবার পুরো অসহায় হয়ে পড়েছে। শোক নিয়ে এখনও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন নিহত পারভেজের (১৮) বাবা মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ছেলেটা সারাদিন ব্যবসা করে রাতে খাবার খাওয়ার জন্য বাসায় যাচ্ছিলো। কথা ছিল সে আসার পর আমি বাসায় যাবো। কিন্তু হঠাৎ করে বিকট শব্দ হওয়ার পরপরই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে যায়। আমার ছেলেটা ওই আগুনেই শেষ হয়ে গেল। ওই দিনের স্মৃতিচারণ করে আলমগীর বলেন, আমি তখন দোকানে ক্রেতা সামলাচ্ছিলাম। ঠিক তখনই এক বিকট শব্দ হলো। তারপর একের পর এক বিকট শব্দ। মূহুর্তের মধ্যেই ধ্বংসলীলা। চিৎকার চেচামেছি আর বাঁচাও বাঁচাও শব্দ। কে বাঁচাবে কাকে। সবাই নিজের প্রাণ বাঁচাতে মরিহা। সেদিন আমিও আগুনে পুড়ে মারা যেতাম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছি আমার দোকানে পানির একটি ড্রাম ছিল। আগুন থেকে বাঁচতে আমি পানির ড্রামে ঢুকে পড়েছিলাম। ড্রামে বসে বসে চিন্তা করছিলাম আর বাঁচার কোনো উপায় নাই। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার অবস্থা ছিল না। পরে ফায়ারসার্ভিসের গাড়ি এসে পানি ছিটানোর পর আমি বাইরে বের হয়ে আসি। কখনওই ভাবিনি আমার ছেলেটা এভাবে মরে যাবে। তিনি বলেন, আশেপাশের দোকানগুলোতে ক্যামিকেল থাকায় আগুনের ভয়াবহতা বেড়ে গিয়েছিলো। চাচা মুজিবর হাওলাদারের (৫০) সঙ্গে প্লাস্টিক দানার দোকানে চাকরি করতেন আসলাম হাওলাদার। ওইদিন গাড়ি থেকে প্লাস্টিক দানার বস্তা আনলোড করার কাজ করছিলেন দুজনেই। ঘটনাস্থল থেকে আসলাম একটু দুরে থাকলেও চুড়িহাট্টা মোড়েই অবস্থান করছিলেন মুজিবর। ভাতিজা আসলাম বলেন, ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয়তলা থেকে হঠাৎ বিকট শব্দে আগুনের ফুলকি এসে মসজিদের দিকে ছড়িয়ে যায়। পারফিউমের কোটাগুলো যেন মুড়ির মত উড়ছিলো। ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলা থেকে দেয়াল ভেঙ্গে পড়ছে। মানুষের বাঁচার আকুতি। এসব দৃশ্য এখনও ভুলতে পারছি না। ঘটনার পর থেকে চাচার মোবাইলে ফোন দিচ্ছিলাম। কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ। তখনই ভেবে নিয়েছি চাচা আর নাই। অন্যান্য মরদেহের সঙ্গেই আমার চাচার মরদেহ পাই। প্রথমে মরদেহ দেখে চিনতে পারছিলাম না। এতটাই পুড়ে বিকৃত হয়ে যায় তার দেহ। তার পায়ের একটি কাটা চিহ্ন দেখে আমি মরদেহ শনাক্ত করেছি। আসলাম বলেন, তিন ছেলে, দুই মেয়ে ও চাচীকে নিয়েই চাচার সংসার। তার আয়েই পরিবার চলতো। পরিবারে কাজ করার মত কেউ নাই। বড় ছেলে এইচএসসি পরীক্ষা দিবে। বাকীরাও লেখাপড়া করছে। টাকার অভাবে তাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত খাবারও জুটছে না। লাশের সঙ্গে ২০ হাজার ও প্লাস্টিক মালিক সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা ছাড়া আর কোনো অনুদান পায়নি তারা। অসহায়ভাবে দিন পার করছে এই পরিবারটি। ওয়াহেদ ম্যানশনের পাশ্ববর্তী লামিয়া স্টোরের ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ লিটন বলেন, ওইদিন ১০ মিনিট আগে যে দোকান থেকে মোবাইল ঠিক করে এনেছিলাম ওই দোকানের মালিক দুইভাই পুড়ে মারা যায়। মদিনা ডেকোরেটার্সের মালিকও পুড়ে যান। যেসব মানুষকে সবসময় দেখতাম, কথা বলতাম মানুষগুলো আর নাই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর