রাউজানে শীতকাল এলেই অতিথি পাখির আসর বসে ঐতিহ্যবাহী লস্কর উজিরদিঘীতে। ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশাল দিঘীর স্বচ্ছ জলের উপর হাজার হাজার অতিথি পাখির কলতান শোনা যায়। কুয়াশার ছোঁয়ায় পাখিগুলো মেতে ওঠে অনাবিল আনন্দে। এ যেন অন্যরকম অনুভূতি। উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের লস্কর উজিরদিঘীতে এলেই দেখা মিলবে অতিথির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। যার কারণে বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে নানা বয়সীর মানুষ। মনের আনন্দে সময় কাটান সেখানে। অনেকে আবার ফেসবুকে ছবি শেয়ার করার জন্যে নানা ভঙ্গিতে ছবি তোলে থাকে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনশ’ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এই লস্কর উজিরদিঘীর নামের সাথে জড়িয়ে আছে এক দীর্ঘ ইতিহাস। মোগল আমলের প্রভাবশালী লস্কর জমিদারের নামেই এই দিঘীর নামকরণ করা হয়েছে। প্রায় ৬০ একর জায়গার উপর সুবিশাল দিঘীটি অবস্থিত। এর চারপাশে রয়েছে সবুজ বৃক্ষরাজি। দিঘীর পশ্চিম পাড়ে হযরত মো. মিয়া শাহ্ রহ: নামে এক আউলিয়ার মাজার রয়েছে। পূর্বপাড়ে রয়েছে একটি মসজিদ।
স্থানীয়রা আরও জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার অতিথি পাখি এসে ভিড় করে এই দিঘীতে। পাখিগুলোর কিচির-মিচির শব্দ যেন পরিবেশের রূপ-বৈচিত্র্য বদলে যায়।
গবেষণায় জানা গেছে, পৃথিবীতে প্রায় ৫ লাখ প্রজাতির পাখি রয়েছে। শুধু ইউরোপ আর এশিয়ায় আছে প্রায় ৬শ’ প্রজাতির পাখি। কিছু কিছু পাখি তাই প্রতিবছর ২২ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে অনায়াসে চলে যায় দূরদেশে। বরফ শুভ্র হিমালয় এবং হিমালয়ের ওপাশ থেকেই বেশির ভাগ অতিথির পাখির আগমন ঘটে। এসব পাখি হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তিব্বতের লাদাখ থেকে ফ্লাইওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে। এছাড়া ইউরোপ ও সাইবেরিয়া থেকেও এসব পাখি আসে। কিছুদিন সময় কাটানোর পর আবার নিজ দেশে ফিরে যায়। এসব পাখির মধ্যে অতি পরিচিত কিছু পাখি হচ্ছে, নর্দার্ন পিনটেইল, খয়রা চখাচখি, কার্লিউ, হেরন, নিশাচর, রাজসরালি, পাতিকুট, গ্যাডওয়াল, পিনটেইল, নরদাম সুবেদার ইত্যাদি।