× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ডিপ টিউবওয়েলের টাকা নিয়ে বসানো হলো রিং টিউবওয়েল

বাংলারজমিন

মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, সোমবার

 মীরসরাইয়ে গভীর নলকূপের কথা বলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জরিনা বেগম নামে এক মহিলা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জরিনা বেগমের বিরুদ্ধে মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ১২নং খৈইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদে। তবে জরিনা বেগম দাবি করেন তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের জন্য টাকাগুলো নিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, উপজেলার খৈইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১,২,৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের জন্য সরকারিভাবে ১২টি টিউবওয়েল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রত্যেক টিউবওয়েল বাবদ ফি ধরা হয় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। কিন্তু ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার গভীর নলকূপ দেয়ার কথা বলে প্রত্যেক পরিবার থেকে ১৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে। এ ছাড়া নলকূপ বসানোর একাধিক শ্রমিকের খাওয়া খরচও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু গভীর নলকূপের টাকা নিয়ে বসানো হয় রিং নলকূপ।
বসানো ১২টি নলকূপের বেশিভাগের পানি খাবার অযোগ্য। পরে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন তদন্তের দায়িত্ব দেন তার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলতাফ হোসেনকে।
সরজমিন গেলে উত্তর আমবাড়ীয়া গ্রামের মকসুদ আহমদের স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, বেশ কয়েক মাস আগে আমাদের এলাকার জরিনা মেম্বার এসে বলেন এই এলাকার জন্য বেশ কিছু গভীর নলকূপ বরাদ্দ হয়েছে। গভীর নলকূপ বসানো হলে আর্সেনিক, আয়রন, দুর্গন্ধমুক্ত সুপেয় পানি পাওয়া যাবে। এতে করে খরচ হবে ১৫ হাজার টাকা। সুপেয় পানি পাওয়ার আশায় জরিনা মেম্বারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে তার হাতে প্রত্যেক গভীর নলকূপের জন্য ১৫ হাজার টাকা করে তুলে দেই। নলকূপ বসানোর সময় মিস্ত্রী ও শ্রমিকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও করতে বলেন জরিনা বেগম। সুপেয় পানির আশায় আমরা কষ্ট হলেও মেম্বারের প্রস্তাব মেনে নিই। শ্রমিকদের থাকা খাওয়া বাবদ আরো ৫-৬ হাজার টাকা করে খরচ হয় প্রত্যেকের। পুরোপুরি কাজ শেষ হলে আমরা বুঝতে পারি জরিনা বেগমের কথার সঙ্গে নলকূপের মিল নেই। আমরা জানতে পারি গভীর নলকূপ নয় এখানে বসানো হয়েছে রিং টিউবওয়েল। সরকারিভাবে যার খরচ হওয়ার কথা সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। একই রকম অভিযোগ করেন উত্তর আমবাড়ীয়া গ্রামের কালাম সর্দারের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মর্জিনা বেগম।
এ প্রসঙ্গে খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মেম্বার জরিনা বেগম বলেন, সবার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেয়া হয়নি। ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। টাকাগুলো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের আফছার উদ্দিনকে  (মেকানিক) দেয়া হয়েছে।
মীরসরাই উপজেলার জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের মেকানিক আফছার উদ্দিন বলেন, প্রত্যেক নলকূপের জন্য সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। টাকাগুলো নিয়ে অফিসের বড় কর্তাকে দেয়া হয়েছে। ১৫ হাজার টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা সরকারি ফি, কেন সাড়ে ৫ হাজার নিলেন এর উত্তরে তিনি বলেন অফিস খরচের জন্য বাড়তি টাকা নেয়া হয়েছে।
মীরসরাইয়ের উপজেলা উপ-সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কারণ ওই বরাদ্দ আমি আসার আগে হয়েছিল।
মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, গভীর নলকূপের জন্য টাকা নেয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য আমার অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলতাফ হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি এখনো তদন্ত রিপোর্ট দেননি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর