× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পাল্টে যাচ্ছে বারিধারার পার্ক রোডের নাম

শেষের পাতা

মিজানুর রহমান
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার

পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর বারিধারার ‘পার্ক রোড’-এর নাম। কূটনৈতিক জোনের পরিচিত ওই সড়কের নতুন নামকরণ করা হয়েছে কম্বোডিয়ার স্থপতি প্রয়াত রাজা ‘নরোদম সিহানুক’-এর নামে। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত মতে কাল নবনামাঙ্কিত
 ‘কিং নরোদম সিহানুক রোড’-এর অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। এতে অংশ নিতে ঢাকা আসছেন, কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী মিজ ইট সোফিয়া। কম্বোডিয়ার মন্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম সড়কটির নামফলক উন্মোচন করবেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি এবং আমন্ত্রিত কূটনীতিকরা উদ্বোধনীতে উপস্থিত থাকছেন। সেগুনবাগিচা জানিয়েছে, স্মরণকালের সবচেয়ে বড় কম্বোডিয়ান প্রতিনিধি দল কাল ঢাকা আসছে। এতে দেশটির পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, পরিকল্পনা, পোস্টাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন, কৃষি, বন ও মৎস শিকার, সংস্কৃতি, ট্যুরিজম, শ্রম ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ও বেসামিরিক বিমান মন্ত্রণালয় এবং নমপেন ক্যাপিটাল হলের প্রতিনিধি মিলে ২৬ সদস্য রয়েছেন।
‘কিং ফাদার অব কম্বোডিয়া’র নামে নামঙ্কিত সড়কের উদ্বোধন ছাড়াও বাংলাদেশ-কম্বোডিয়ার প্রথম জয়েন্ট কনসালটেশন মিটিং বা যৌথ পরামর্শ সভায় নেতৃত্ব দেবেন প্রতিনিধি দলের নেতা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিজ সোফিয়া। সূত্র মতে, প্রায় আড়াই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কম্বোডিয়া সফরে দেশটির রাজধানী নমপেনের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং ঢাকার কূটনৈতিক এলাকার পার্ক রোড রাজা নরোদম সিহানুকের নামে করার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৪ সালে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের ফিরতি সফর হিসাবে ’১৭ সালে বাংলাদেশের সরকার প্রধান নমপেন সফর করেন। ওই সফরে দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে ১১ চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়। যার মধ্যে ছিল যৌথ বাণিজ্যিক কাউন্সিল গঠন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে পরস্পরিক সহযোগিতা, শ্রম ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা, পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা, যুদ্ধের ইতিহাস, স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণে পারস্পরিক সহযোগিতা, মৎস্য ও অ্যাকুয়াকালচার এবং বিনিয়োগ প্রসার। এছাড়া দুই দেশের শীর্ষ বাণিজ্যিক সংগঠনের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ এবং রয়্যাল একাডেমি অব কম্বোডিয়ার মধ্যে একাডেমিক পর্যায়ে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা হয়েছিল সেই সফরে। মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশি বৌদ্ধ প্রধান কম্বোডিয়ার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছিলো। যেখানে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সরকার প্রধানের নমপেন সফরে বাংলাদেশ-কম্বোডিয়া সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। সেই সময়ে যেসব বিষয়ে সমঝোতা বা সিদ্ধান্ত হয়েছিলো, কাল প্রথম জয়েন্ট কনসালটেশনের বৈঠকে তা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হবে। আর এ জন্যই কম্বোডিয়ার বিভিন্ন সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা ঢাকা আসছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সব কিছু ঠিক থাকলে এপ্রিলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নমপেনের প্রধান সড়কটির (৩৩৭ নম্বর) নামকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে এবং এপ্রিলের মাঝামাঝিতে এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
কম্বোডিয়ার ইতিহাস পাল্টে দেয়া রাজা সিহানুক: কম্বোডিয়ার ইতিহাস পাল্টে দেয়া রাজা সিহানুক রাজা নরোদম সুরামারিত ও রানী কোসামাকের বড় সন্তান। ১৯৪১ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি প্রথম সিংহাসনে আরোহণ করেন। পরবর্তী ঝাক্কি ঝামেলা সামলে তিনি রাজনীতিতে টিকে ছিলেন। ১৯৬০ সালে সিহানুকের বাবা নরোদম সুরামারিত কম্বোডিয়ার রাজা হন। পিতার মৃত্যুর পর অনেকটা পরিণত সিহানুকই সিংহাসনে অধিষ্টিত হন। কিন্তু সেখানে বাধা আসতে থাকে। মার্কিনপন্থি কম্বোডিয়ার জেনারেল লন নোলের সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়ে অনেক দিন চীনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। কিন্তু নির্বাসিত জীবনে থেকেও তিনি স্বদেশের স্বাধীনতায় খেমাররুজ গেরিলাদের সঙ্গে গভীরভাবে নিজকে সম্পৃক্ত রাখেন। ১৯৭৫ সালে গেরিলারা রাজধানী নমপেন দখল করলে সিহানুক চীন থেকে ফিরে নতুন রূপে রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু সেটিও তার জন্য বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কয়েক মাসের মাথায় তিনি রাজধানীতে ‘প্রাসাদবন্দি’ হয়ে পড়েন। বন্দি অবস্থায় চলতে থাকে তার স্বাধীনতার সংগ্রাম। ১৯৮৯ সালে নমপেন থেকে ভিয়েতনামের সেনা প্রত্যাহার হলে তিনি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ১৯৯১ সালে স্বদেশের রাজধানী নমপেনে ফিরে আসেন। ’৯৩ সালের নির্বাচনে তার ‘রাজ পরিবারপন্থি দল’ নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়। এরপর তিনি  আবারও সিংহাসনে আরোহণ করেন। ২০১২ সালে বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালে রাজা সিহানুক শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর