সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওরের স্লুইসগেটের ভিতরে পানি নিষ্কাশনের খালের মুখ মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে হাওরের জলমহালের ইজারাদারদের বিরুদ্ধে। হাওরে পানি নিষ্কাশনের মুখে মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়ার কারণে উমেদপুর গ্রামের প্রায় তিনশত একর রোপণ করা বোরো জমি হাওরের জমাট বাঁধা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। রোববার উমেদপুর গ্রামের আলীনূর, শাহ্জামাল, রুস্তম আলী, মাফিক, মতি রহমান সহ ২৫ জন কৃষক তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের পর পরই তাহিরপুর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হজরত আলীকে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী। উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হজরত আলী জানান, মাটিয়ান হাওরে সরজমিন গিয়ে খালের মুখে বাঁধ দেয়ার বিষয়টির সত্যতা পেয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশনা চেয়ে ইউএনও’র নিকট প্রতিবেদন দাখিল করবেন তিনি।
মাটিয়ান হাওরপাড়ের উমেদপুর গ্রামের কৃষক নিজাম, সফিকুল ও আবদুল হেকিম বলেন, হাওরপাড়ের কৃষকরা জীবনেও দেখেননি ইজারাদাররা গাঙের মুখে বাঁধ দিতে। লোক মুখে বাঁধ দেয়ার সংবাদ পেয়ে তারা গাঙের মুখে গিয়ে ইজারাদার দীপক বাবুকে বাধা দিলে তিনি তাদেরকে গালমন্দ করেন এবং লুটপাটের মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবেন বলে হুমকি দেন। একপর্যায়ে জোরপূর্বক গাঙের মুখে বাঁধ দেন ইজারাদাররা।
তারা আরো জানান, বাঁধ দেয়ার ফলে তাদের জমির পানি নিষ্কাশন হতে না পারায় বর্তমানে পানি ফুলে-ফেঁপে তাদের কষ্টার্জিত রোপণ করা বোর ফসল পাকার আগেই পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাটিয়ান হাওর পাড়ের কৃষক শাহিনূর তালুকদার বলেন, মাটিয়ান হাওরে অতীতে কখনও কোনো ইজারাদার হাওরের পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ করেনি। বর্তমান ইজারাদার দীপক বাবু যদি বন্ধ করে থাকে তাহলে তিনি জলমহালের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন। নীতিমালা অনুযায়ী ইজারা বাতিল করার জন্য দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী বলেন, উমেদপুর গ্রামের কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হজরত আলীকে পাঠিয়েছেন। সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।