ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানে আন্দোলনকারীদের মধ্যে রোববার থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। যা একপর্যায়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নেয়। এ মুহূর্তে পুরো থমথমে পরিস্থিতি গোটা উত্তর-পূর্ব দিল্লিজুড়ে। অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। কেউ কেউ রয়ে গেছেন। বসত ভিটার মায়া ত্যাগ করে যাননি। যারা যাননি তাদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে আবারো হামলার আশঙ্কায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বিবিসি বাংলা’কে এসব কথা বলেছেন।
এক বাসিন্দা বলেন, আমরা গতকালই চলে যেতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু প্রতিবেশীরা আশ্বস্ত করলো আমাদের কোনো বিপদ হবে না। তাই এলাকা ছেড়ে যাইনি। আমরা কি করবো বলুন? জানি না প্রশাসন কিছু করবে কিনা। ক্ষয়ক্ষতি তো আমাদেরই সামলাতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও বাস করেন। তারা বলছেন, হামলাকারীদের বেশিরভাগই বাইরে থেকে আসা। স্থানীয়রা যদি তাদের থামানোর চেষ্টা করতেন তাহলে আক্রমণ তাদেরও করা হতো।
হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন বলেন, এত লোক ছিল সেখানে। একটা একা মানুষ এতজনের সঙ্গে কিভাবে পারবে? আমরা কি করতে পারতাম? আমরা ভয় পাচ্ছিলাম যদি আমাদের বাচ্চাদের গায়ে আগুন ধরে যায়? তখন আমরা কি করতে পারতাম!
সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে মুসলমান ও হিন্দু, দুই ধর্মের মানুষই আছেন। তবে বেশিরভাগ ঘটনায় মুসলমানদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার খবর পাওয়া গেছে। খোদ দিল্লি পুলিশ হামলায় সহযোগিতা করছে এমন অভিযোগও রয়েছে।
আরেক বাসিন্দা বলেন, আমি ওই দরজা দিয়ে দেখছিলাম। দেখলাম পুলিশ ও হামলাকারীরা একসঙ্গে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। আমি দেখলাম ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক তারেও আগুন ধরে গেলো। আমাদের বাড়িঘরে সমস্ত বৈদ্যুতিক জিনিস বন্ধ হয়ে গেল। দোকানপাট বাড়িঘর বাঁচানোর আশাটা তখনই শেষ। আমি পরিবার প্রতিবেশী সবাইকে বললাম ভাগো। আমরা ছাদে উঠে ওপাশে গিয়ে কোনোমতে জীবন রক্ষা করেছি।
এদিকে, হামলাকারীদের সহযোগিতা করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ।