× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

স্যানিটাইজার, মাস্ক, সাবান সব একাই কিনলেন, এতে কি আপনি নিরাপদ- ডা. আব্দুন নূর তুষার

ফেসবুক ডায়েরি

অনলাইন ডেস্ক
৯ মার্চ ২০২০, সোমবার

আপনি সব স্যানিটাইজার একাই কিনলেন। সব মাস্ক, সব সাবানও আপনি কিনে নিলেন। এতে করে আপনি বেশী নিরাপদে বাঁচবেন না। বরং আপনার চারপাশে সবার হাতে ভাইরাস থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনটাই লিখেছেন টিভি উপস্থাপক ও নাগরিক টিভির প্রধান নির্বাহী ডা. আব্দুন নূর তুষার।

ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসটিতে তিনি লেখেন,


১. আপনি সব স্যানিটাইজার একাই কিনলেন। সব মাস্ক , সব সাবানও আপনি কিনে নিলেন। এতে করে আপনি বেশী নিরাপদে বাঁচবেন না। বরং আপনার চারপাশে সবার হাতে ভাইরাস থাকবে।
কারন তাদের স্যানিটাইজার নাই। সাবান নাই। তখন আরো বেশী করে ভাইরাসে আপনার আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়বে। তাই স্যানিটাইজার, মাস্ক, টয়লেট পেপার বা সাবান মজুদ করলে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমান বেশী।

২. মনে করেন আপনি একাই সুস্থ আছেন। তাতে আপনার মরার সম্ভাবনা বাড়বে। কারন সবার শেষে একদিন আপনি যখন অসুস্থ হবেন তখন আপনাকে সেবা করার লোক নাই।

৩.সকলেই ভালো থাকতে চায়, সুস্থ থাকতে চায়। কিন্তু স্বার্থপরের মতো একা বাঁচতে গেলে আপনার বিপদের সম্ভাবনা বেশী হবে।

৪. এভাবে মজুদ করলে লোকে একদিকে যেমন আপনাকে স্বার্থপর মনে করবে তেমনি চোর ডাকাতের লক্ষ্যবস্তুতেও আপনি পরিনত হবেন। সব স্যানিটাইজার আপনার কাছে, এটা জানলে আপনি করোনা তে আক্রান্ত না হয়ে, মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।

৫. বেশী বেশী করে সাবান ঘষলে বা স্যানিটাইজার ঢেলে দিলেই জীবানু বেশী মরে না। বরং এসব সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা জরুরী। ইউটিউবে ভিডিও আছে। স্বাস্থ্য সংস্থা, এনজিও এমনকি সাবান প্রস্তুতকারকেদের ওয়েব সাইটে বিশদ বর্ণনা পাবেন।

৬. ভিটামিন সি অতিরিক্ত খেলে কোন লাভ নাই। এটা যতোটুকু প্রয়োজন ততটুকু রেখে শরীর বাকিটা বের করে দেয়। এটা শরীর জমা করে রাখে না। সারাদিনে একটা লেবু বা অর্ধেকটা পেয়ারা বা একটা আমলকি যথেষ্ট। তাই বেশী বেশী ভিটামিন সি খেলে ভাইরাস আপনাকে আক্রমন করে অসুখ তৈরী করবে না, কথাটা ঠিক না। বেশী খাওয়ার দরকার নাই, যতোটুকু দরকার ততোটুকুই যথেষ্ট। সারাদিনে ৫০০ মিলিগ্রাম এর দুটো ভিটামিন সি অনেক।

৭. পানি খান পরিমান ও পিপাসা অনুযায়ী। পানি খেলে ভাইরাস পেটে চলে যাবে এটা মিথ্যা।

৮. সুস্থ লোকের মাস্ক পরার কোন দরকার নাই। যার হাঁচি কাশি আছে তিনি মাস্ক পরবেন। মাস্ক সঠিক জায়গাতে ফেলবেন। যেমন কোন বদ্ধ কনটেইনার, বিন বা মাটির গর্তে।

৯. যেখানে সেখানে থুথু ফেলা, হাঁচি কাশি দেয়া ঠিক না। নিয়ম মেনে নাক মুখ কনুই দিয়ে ঢেকে হাঁচি দিন। পরিচ্ছন্নতা মেনে চলেন। হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ করা , নাক খোঁচানো , এসব ঠিক না।

১০. ঢাকায় কোটি কোটি মশা। সবার কি ডেংগু হয়েছে? সেরকম সবার এই অসুখও হবে না। ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে চলুন।

১১. যাদের হৃদরোগ, কিডনী রোগ, হাঁপানী, ফুসফুসের রোগ , এসব আছে তারা সেসব রোগের জরুরী ঔষধ কাছে রাখুন ও বেশী সাবধানতা অবলম্বন করুন।

১২. হাবি জাবি , গুজব শেয়ার দিয়ে লোকজনকে বিভ্রান্ত না করে নিজে জানুন ও যাচাই করে শেয়ার করুন।

১১. করোনা ভাইরাসের বিষয়ে হটলাইন নম্বরগুলি হাতের কাছে লিখে রাখুন। ০১৯৩৭১১০০১১ , ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫.

১২. বছরে প্রায় তিন থেকে ছয় লাখ মানুষ প্রচলিত ইনফ্লুয়েঞ্জা তে মারা যায়। ৫০ লাখের বেশী লোক সিরিয়াস কেস হয়ে হাসপাতালে যায় বা বিশেষায়িত চিকিৎসা নেয়। তাই আপনার পাশে কেউ হাঁচি কাশি দিলেই তাকে করোনা রোগী ভাবা ঠিক না। এটা সাধারন ফ্লূও হতে পারে।

১৩.জ্বর ও শ্বাস কষ্ট হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা লক্ষন, যেটা হলেই হাসপাতালে যান বা ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সর্দি কাশি হলে বা জ্বর হলে নিজেই নিজেকে বাসায় বন্দী করুন। করোনার পরীক্ষা করিয়ে নিন। সেরে না ওঠা পর্যন্ত বাইরে বের হবেন না।

১৪. সবচেয়ে বেশী ভয় ডাক্তার ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের। তারা কিন্তু সাহসের সাথে সারা দুনিয়াতে চিকিৎসা করছেন। যেভাবে সবাই ভয় পাচ্ছেন, তাতে চীনে কিন্তু এতদিনে সব ডাক্তার নার্স মরে যাওয়ার কথা। সেটা কিন্তু হয় নাই।

তাদের দেখে সাহসী হোন। আপনার ঝুঁকি যেকোন ডাক্তার বা নার্সের চেয়ে বহুগূন কম।

ভয় নয়, আতংক নয়, বরং আত্মবিশ্বাসের সাথে এই ভাইরাসের বিষয়ে জানুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর