× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

লকডাউনে গেলে যা করবেন

ফেসবুক ডায়েরি

ডা. কবীর উদ্দীন
২৩ মার্চ ২০২০, সোমবার

চীন ফেরত চিকিৎসক ডা. কবীর উদ্দীন। যিনি ভারতে কোয়ারেন্টিন শেষে বাংলাদেশের এসেছেন। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে লকডাউন হলে করণীয় সম্বন্ধে লিখেছেন ফেসবুকে।
তিনি লেখেন,-জ্বর আসলেই এন্টিবায়োটিক চালু করে দিবেন না এই সময়। এটি খুবই সংবেদশীল সময়, তাই এইসময় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক চালু করে দিবেন না। আরো জেনে রাখুন যে, ভাইরাল ফিভার হলে এন্টিবায়োটিক চালু করলে হিতে বিপরীত হবে। জ্বরের সাথে শুধু গায়ে ব্যথা হলে আতংকিত হবেন না, বুঝবেন আপনি সিজনাল ফ্লুতে আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে ২/৩ বেলা প্যারাসিটামল খেলেই হবে।

* এসব উপসর্গের সাথে শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা থাকলে- অবশ্যই সতর্ক হতে হবে এবং নিকটবর্তী হাসপাতাল কিংবা সম্ভব হলে IEDCR যোগাযোগ করতে হবে।***

- আপনার যদি অতিরিক্ত এক্সপোজারের ইতিহাস থাকে যেমন রেল/বাস স্ট্যান্ডে যাওয়া, বাজার, হাসপাতালে কাজ করছেন, সেক্ষেত্রে অল্প জ্বরে নিকটবর্তী হাসপাতালে CBC করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিবেন আপনার জ্বরটি ভাইরাল না ব্যাকটেরিয়া জনিত, এরপর দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

- যারা এজমা/হাঁপানি রোগী, তাদের উচিত ইনহেলার, এক্যুহেলার এখন সংগ্রহ করে রাখা। বাসায় বয়স্ক কেউ শ্বাসকষ্টে ভুগছে, তাদের জন্য একটি নেব্যুলাইজার মেশিন কিনে বাসায় রাখা ভাল।
লকডাউনের সময় হাসপাতাল যতদূর পারা যায়, এড়িয়ে চলতে হবে।

-করোনা মহামারী খুব বেড়ে গেলে মুরগীর মাংস কিনবেন না, কারণ মনে রাখবেন করোনা ভাইরাসটি কিন্তু পাখী জাতীয় প্রানী যেমন হাঁস, মুরগী, কোয়েল ইত্যাদি প্রানীকেও আক্রমণ করে। হাঁস, মুরগী, কোয়েল এর মাংস ও ডিম- দুটোই এড়িয়ে চলা ভাল। এসব খাওয়ার ইচ্ছে বেশী থাকলে এখনই কিনুন ও খান বেশী করে। মহামারী শুরু হলে হাঁস, মুরগী, কোয়েলের মাংস খাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। তখন খাসী ও গরু মাংস খাওয়া যেতে পারে।

- লকডাউনের শাকসবজী ও গরম স্যুপ বেশী করে খাওয়া ভাল। ঠান্ডা যে কিছু খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। সকালে চা, কফি খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন। রাতে চা, কফি এড়িয়ে চলা ভাল, এতে ঘুমের ব্যঘাত ঘটতে পারে। রাতে প্রয়োজনে গরম পানি খান।

- টক জাতীয় ফল খান বেশী করে।

- বাইরের মানুষ আনাগোনা এখনই বন্ধ করে দিন। মেনমানদারী করা বাঙালীদের ঐতিহ্য, তবে এই ঐতিহ্য এখন বিসর্জন দেওয়া অবশ্যক। ভাড়াটিয়াদের বলেন, বাইরের মেহমান না আনতে। আর আপনি নিজেই ভাড়াটিয়ে হলে বাড়িওলাকে অনুরোধ করবেন, বাইরের মানুষ যতদূর সম্ভব কম যেন ঢোকানো হয়ে এপার্টমেন্টে।

- বাইরে থেকে আসা কোন বুয়া থাকলে, তাকে ছুটি দিন আগামী একমাসের জন্য (তবে পেইড লিভ দিলে ভাল হয়, এসময় এই মানবতাটুকু দেখাবেন প্লিজ, তাহলে সেই বুয়াও আর কাজে বের হবে না এই মহামারীর সময়ে)।

- নিতান্তই দরকার না হলে বাজারে যাবেন না কারণ বাজার থেকে করোনা বেশী ছড়াবে। আর গেলে ভীড়ের সময় যাবেন না, ভীড় কম থাকলেই বাজারে প্রবেশ করবেন। আবারো বলছি, লকডাউনের হাসপাতাল ও বাজার - এই দুটি জায়গা যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

- কাগজের টাকা ধরার পর অবশ্যই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন। সবচেয়ে ভাল হয় কাগজের নোট ব্যবহার পরিহার করা। বিকাশ কিংবা রকেটে টাকা লেনদেন করুন।

- প্রয়োজনমতন কিছু ওষুধ আগাম কিনে রাখেন, যেমন খাবার স্যালাইন, গ্যাসের ওষুধ (anti-ulcerant), পেট ব্যথার ওষুধ, ঘুম ও মাথা ব্যথা এবং অবশ্যই প্যারাসিটামল। অবশ্য ওষুধের দোকান খোলা থাকবে লকডাউনের সময়, সুতরাং বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে প্রয়োনজনীয় কিছু ওষুধ কিনে রাখা যেতে পারে তবে ওষুধ নিয়ে দুশ্চিতার কারণ দেখছি না।

- বাসার কল, গ্যাসের চুলা কিংবা অন্যান্য জিনিস নষ্ট থাকলে এখনই সারিয়ে নিন। লকডাউনে সারাতে ঝামেলা হবে।

- মোবাইলে বেশী টাকা রিজার্চ করে রাখুন।

-যাদের বাসায় কার্পেট রাখা আছে, সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলুন কারণ ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার উর্বরভূমি হলো এসব কার্পেট।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর