দীর্ঘ ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে ভারত। করোনা ভাইরাসের বিস্তার থামাতে মানুষকে বাড়িতে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু দেশটির মানুষের একটি বড় অংশ দিন আনে দিন খায়। তারা বলছেন, লকডাউন করে তাদের বাঁচানো যাবে না। করোনায় মারা যাক বা না যাক কিন্তু লকডাউনের কারণে না খেয়ে মারা যাওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন তারা।
লকডাউন ঘোষণার পরও দিল্লির রাস্তায় অনেক শ্রমিককে বসে থাকতে দেখা গেছে। তারা বলছেন, কেউ তাদেরকে আজ কাজ দেবে না জেনেও কোনো আশা যদি থাকে সে জন্য বসে আছেন। বিবিসিকে রমেস্বর নামের এক শ্রমিক বলেন, আমি দিনে ৬০০ রুপি আয় করি এবং এ দিয়ে পরিবারের ৫ সদস্যের মুখে খাবার তুলে দেই।
আমি জানি করোনা ভাইরাস বিপজ্জনক কিন্তু আমার সন্তানদের আমি ক্ষুধার্ত দেখতে চাই না।
দেশটির আরো কয়েক কোটি মানুষের অবস্থা এই একইরকম। মঙ্গলবার লকডাউন ঘোষণা করা হয় ভারতজুড়ে। কিন্তু এরফলে দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের রাস্তা সমপূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। তারা বলছেন, অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই জমানো খাবার শেষ হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত ভারতে ৫০০ জনের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১০ জন।
এদিকে দেশটির উত্তরপ্রদেশ, কেরালা ও দিল্লির স্থানীয় সরকার ঘোষণা করেছে যে, তারা শ্রমিক শ্রেণির মানুষকে অর্থ সাহায্য প্রদান করবে। প্রধানমন্ত্রী মোদিও একই আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখানেও সমস্যা রয়েছে। ভারতের শ্রমিক শ্রেণির মানুষদের ৯০ ভাগেরই নির্দিষ্ট কোনো কর্মক্ষেত্র নেই। তাদের কোনো ইন্স্যুরেন্স নেই। কাজ না করলে তারা কোনো অর্থও পাবে না। ফলে তারা কাজের জন্য এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হবে। ফলে লকডাউনের আসল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়ে যাবে।