× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ইতালি, স্পেনে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি, ফ্রান্স প্রবাসীরা আতঙ্কিত

করোনা আপডেট

আব্দুল মোমিত( রোমেল), ফ্রান্সে থেকে
৩১ মার্চ ২০২০, মঙ্গলবার

কভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাসে ইতালি ও স্পেনের পর ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সেও মৃত্যুর মিছিল  বাড়তে শুরু হয়েছে । ইউরোপে ইতিমধ্যেই কয়েক লাখ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে শুধু ইতালিতেই মারা গেছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর স্পেনে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে সাত হাজারের মতো ।  এতে প্রবাসীরা আতঙ্কিত হচ্ছেন। ফ্রান্সে আনুমানিক  প্রায় ৫০হাজার বাংলাদেশির বসবাস রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। কিন্তু এখনো কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি ।  ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে এখন পর্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ কোন তথ্য নেই কতজন প্রবাসী বাংলাদেশী এখানে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ জন আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ প্রতিনিধির   সাথে টেলিফোনে সরাসরি কথা হয় একজন ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশির,  যিনি ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নাম প্রকাশ না করার  শর্তে তিনি বললেন যে, হাসপাতালের ডাক্তাররা চেষ্টা করছেন অনেক রোগীকে সুস্থ করতে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। লাশের মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। তিনি সেটা হাসপাতালে থেকে অনুভব করছেন এবং নিজে যে বেঁচে ফিরে আসবেন তা তিনি মোটেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। ফ্রান্স প্রবাসী আলী হোসেন বলেন, এতদিন ভয় পাইনি কিন্তু চারপাশে এত মৃত্যু, লাশের খবর প্রতিনিয়ত পাচ্ছি, এখন নিজেই আক্রান্ত হয়ে যাবো এই ভয় এবং শঙ্কার মধ্যে গৃহবন্দি হয়ে আছি।  ফ্রান্সে বিসিএফ নামের একটি সংগঠনের পরিচালক এমডি নূর জানান, তার পরিচিত এক  প্রবাসী ভাই কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালে রাখে নি। এ অবস্থায় তাকে বাসায় আইসোলেশনে  থাকার জন্য বলে দিয়েছে। কিন্তু তিনি যে মেসে থাকতেন সেই মেস তাকে এখন গ্রহণ করছে না । পরবর্তীতে একটি  হোটেল রুম ভাড়া করে তাকে আপাতত রাখা হয়েছে  ।  এতে তিনিও আতঙ্কিত পরিবার সহ গৃহবন্দি হয়ে আছেন।                

 এ দিকে আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারস ডট ইনফো'র হিসাব অনুযায়ী- করোনায় ফ্রান্সে মোট ৩ হাজার ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার  ৫৫০ জন। এ সময় ৭ হাজার ৯২৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এ দিকে গত শনিবার ফ্রান্সের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে দেশজুড়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। করোনা মোকাবেলায় সরকারের কৌশল সংক্রান্ত রূপরেখা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড ফিলিপ্পে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি খোলাসা করে কিছু বিষয় বলতে চাই।এই লড়াইয়ের সবেমাত্র শুরু।এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিন আরও কঠিন হবে।পরের ১৫ দিনে তা কমতে শুরু করবে।’

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে গোটাবিশ্ব। এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের সঠিক কোনো টীকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে এ ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বের গবেষক ও চিকিৎসকরা।এদিকে দক্ষিণ ফ্রান্সের মার্সাই শহরের একদল গবেষক এক মাস থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ওপর ম্যালেরিয়া রোগের ওষুধ (ক্লোরোকুইন) প্রয়োগ করে সফল হন।

 এ গবেষক দলের প্রধান সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর দিদিয়ার রাউলত জানান, ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করেছিলেন আর তাতে আশ্চর্যজনক ফল পেয়েছেন। ফ্রান্সের মেডিকেল সংক্রান্ত সর্বোচ্চ কমিশন বলেছে, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে এ চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে।ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলিভিয়ার ভেরন বলেছেন, এ ওষুধ কেবল গুরুতর রোগীদের জন্য প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।তবে কোনো ফার্মেসি কভিড-১৯ এর জন্য এ ওষুধ বিক্রয় করতে পারবে না।   মানবজমিন-এর এ প্রতিনিধি ফ্রান্সের একটি হাসপাতালে সর্দি এবং গলা ব্যথার জন্য চিকিৎসা নিতে গিয়ে সুযোগ করে  সরাসরি কথা বলেন  ফ্রান্সের  একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে। তিনিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে যে ঔষধ আবিষ্কার হয়েছে তা এখনো প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি এবং এটা প্রক্রিয়াধীন আরো সময় লাগবে। ফ্রান্সে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেরই গলা ব্যথা কাশি জ্বর। কিন্তু ভয়ে অনেকে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন না ।এই বিষয়ে পরামর্শ চাইলে তিনি বলেন, এই উপসর্গ যাদের আছে অবশ্যই ইমার্জেন্সি হসপিটাল আছে আমাদের দেশে। সেখানে গিয়ে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়া উচিত ।সবারই উপসর্গ থাকলে হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত তার টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ না আসবে।তিনি পরামর্শ দেন সবাইকে সেল্ফ আইসোলেশনে  থাকার জন্য।

 

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর