× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিজনেস টুডে’র রিপোর্ট / গার্মেন্ট খাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে ৬০০ কোটি ডলার

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ১, ২০২০, বুধবার, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন

বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করার ফলে ৬০০ কোটি ডলার ক্ষতি হবে বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্পের। তৈরি পোশাক ও নিটওয়্যার প্রস্তুতকারকদের দুটি গ্রুপই বলছে, দিনের পর দিন অর্ডার বাতিল বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ, করোনা ভাইরাসের ফলে বিশ^জুড়ে লকডাউন অব্যাহত। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার এই গরিব দেশটিতে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারতের অনলাইন বিজনেস টুডে’র এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, চীনের পর বিশে^র দ্বিতীয় বৃহৎ তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী বাংলাদেশ। তারা বর্তমান অর্থবছরে প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হারাচ্ছে।

বিশে^র সবচেয়ে বড় বড় ব্রান্ড এবং খুচরা ক্রেতারা দিনের পর দিন অর্ডার বাতিল করে দিচ্ছে।
শ্রমিকদের কম বেতনের কারণে বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্প গড়ে উঠতে সহায়ক হয়েছে। এখানে রয়েছে প্রায় ৪০০০ কারখানা। তাতে কাজ করেন প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। গার্মেন্ট রপ্তানি থেকে ২০১৯ সালের ৩০ শে জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে আয় হয়েছে মোট ৩৪১২ কোটি ডলার। বাংলাদেশে মোট রপ্তানি হয়েছে এ সময়ে ৪০৩৩ কোটি ডলারের পণ্য। ফলে গার্মেন্ট খাত থেকে মোট রপ্তানির শতকরা ৮৪ ভাগ আয় হয়েছে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, করোনা নিয়ে সঙ্কটের কারণে আমরা কমপক্ষে ৩০০ কোটি ডলার হারিয়েছি। জুলাই পর্যন্ত আমাদের কাছে যেসব অর্ডার ছিল, তা হয়তো বাতিল করা হয়েছে না হয় স্থগিত করা হয়েছে। কার্যত স্থগিত করা অর্ডারও বাতিল হয়ে যাবে। এসব অর্ডার দেয়া হয়েছিল গ্রীষ্মকালের জন্য। এসব অর্ডার ডেলিভারি দিতে তিন মাস সময় লাগে। তারা যদি এসব সরবরাহ এখন না নেন, তাহলে গ্রীষ্ম পেরিয়ে যাওয়ার পর তো তারা এগুলো নেবেন না। ক্রেতারা এখন ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ নীতি গ্রহণ করেছে। তারা নতুন অর্ডার দেয়া থেকে বিরত রয়েছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।

এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র বলেছেন, যেসব ব্রান্ড অর্ডার বাতিল করেছে তার মধ্যে রয়েছে গ্যাপ, জারা ও প্রাইমার্কের মতো ব্রান্ড। এ বিষয়ে বিজনেস টুডে ইমেইল মারফত গ্যাপ এবং জারা’র সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব দেয় নি। অন্যদিকে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করেছে প্রাইমার্ক। তারা একটি বিবৃতিতে বলেছে, বিশ^জুড়ে প্রাইমার্কের সব স্টোর বন্ধ রয়েছে। এই ব্রান্ডটি মাসে ৮০ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার ডলার লোকসান দিচ্ছে। কারণ, তাদের পণ্য বিক্রি বন্ধ রয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের স্টোর, গুদামে এবং ট্রানজিটে এখনও পর্যাপ্ত সংখ্যক পণ্য মজুদ আছে। এগুলোর মূল্য দিতে হবে। যদি আমরা ক্রয় আদেশ বাতিল না করতাম, তাহলে আমাদেরকে সরবরাহ নিতে হতো, কিন্তু আমরা তা বিক্রি করতে পারতাম না।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর প্রেসিডেন্ট রুবানা হকও বিকেএমইএ’র মতো একই কথা বলেন। তিনি বলেছেন, বিজিএমইএর অধীনে থাকা ১০৪৮টি কারখানা থেকে রিপোর্ট এসেছে, ২৯০ কোটি ডলারের ৯০ কোটি গার্মেন্ট বা তৈরি পোশাকের অর্ডার বাতিল করা হয়েছে অথবা স্থগিত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অর্ডার বাতিল করার ফলে তৈরি পোশাক বা গার্মেন্ট খাতের প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

ওদিকে সম্প্রতি দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই রপ্তানি খাতে ৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলারের একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শ্রমিকদের অর্থ পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছেন কোম্পানিগুলোর প্রতি। তবে বিজিএইএর পরিচালক রেজওয়ান সেলিম বলেছেন, এটা যথেষ্ট নয়। দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতকে রক্ষা করতে আরো বড় প্রণোদনা দেয়া উচিত সরকারের। এইচঅ্যান্ডএম, ওয়ালমার্ট সহ শীর্ষ স্থানীয় ব্রান্ডের কাছে পোশাক রপ্তানি করেন সিদ্দিকুর রহমান। তিনি পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, আমরা এক অপ্রত্যাশিত সময়ের মুখোমুখি। কেউ জানে না কতদিন এই অবস্থা চলবে। কারখানা বন্ধ না করার জন্য আমরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কতদিন এই অবস্থা ধরে রাখতে পারবো?
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর