× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনায় তরুণ মার্কিনিরা কি বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে?

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) এপ্রিল ২, ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৫:২০ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রাথমিক পর্যায়ে চীনের ক্ষেত্রে বৃদ্ধ ও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ব্যক্তিরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন বলেই প্রতীয়মান হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোয় দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে বিশাল সংখ্যার তরুণরা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) অনুসারে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪০ শতাংশ মার্কিনির বয়স ৫৫ বছরের নিচে। ২০ শতাংশের বয়স ২০ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায়, প্রশ্ন উঠেছে, ভাইরাসটিতে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণরা কি অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে? বৃটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তিন জন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে।
তরুণরা কী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ধারণার চেয়ে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে?

ডা. টিমোথি ব্রিওয়ার: এ তথ্যটা বেশকিছু দেশেই দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে, মানুষজন মৃত্যুর হারের দিকে বেশি নজর দিয়েছিল। তরুণ-প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মৃত্যুর হার সবজায়গাতেই কম।
আমার মনে হয় মানুষ এটা এমনভাবে ভেবে নিয়েছে যে, এই গোষ্ঠীটি আক্রান্ত হচ্ছে না ও গুরুতরভাবে অসুস্থ হচ্ছে না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও আক্রান্তদের নিয়ে যত বেশি তথ্য বের হচ্ছে, ততই দেখা যাচ্ছে যে, আদতে ব্যাপারটা তেমন নয়।

চীনের শেনজেন থেকে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তরুণরা বৃদ্ধদের মতো একই হারে আক্রান্ত হতে পারে। এখন আমরা যেহেতু, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের নিয়ে আরো বেশি তথ্য পাচ্ছি, আমরা দেখছি যে, তরুণ প্রাপ্তবয়স্করাও গুরুতরভাবে অসুস্থ হচ্ছে। তাদের ও বেশি বয়স্কদের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে তরুণদের মধ্যে মৃত্যুহার কম।

ডা. এডিথ ব্রাচো-সাঞ্চেজ: প্রাপ্তবয়স্ক ও জটিল রোগে আক্রান্তরা নিশ্চিতভাবেই সবচেয়ে গুরুতরভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু মোটের উপর, বিস্তৃত পরিসরে আমেরিকান জনগণের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিচের দিকে। দেশটির প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্ররায় দুই জন শিশুর মধ্যে স্থূলতা বিদ্যমান। তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার প্রতি চার জন। এটা কেবল, আমেরিকান জনগণের একেবারে তলানির স্বাস্থ্য অবস্থার পরিমাপ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমেরিকায় সকলের স্বাস্থ্য ভালো অবস্থায় নেই।

ডা. ক্রিস্টোফার জে এল মুরে: আক্রান্তদের নিয়ে প্রকাশিত তথ্য ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এটা মূলত কার পরীক্ষা হচ্ছে, সেটার ব্যাপার। কিছু জায়গায়, যেমন যুক্তরাষ্ট্রে মূলত বৃদ্ধদের পরীক্ষা বেশি হচ্ছে। আমরা মূলত মৃত্যু সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো বেশি দেখছি। আমরা যা জানি সেটা হচ্ছে, ৮০ বছর ও তার বেশি বয়স্কদের তুলনায় ৫০ বছর বা তার কম বয়স্কদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম।

তথ্যে এখনো অনেক ফাঁকফোকর আছে। আমাদের কাছে নিশ্চিত আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার নিয়ে ভালো তথ্য রয়েছে, কিন্তু বয়স ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের নিয়ে এখনো সুস্পষ্ট তথ্য নেই।

দ্য গার্ডিয়ান: ভ্যাপিং বা স্থূলতার মতো স্বাস্থ্যজনিত সমস্যাগুলো কোনো আক্রান্তের অবস্থা গুরুতর করে তুলতে কতটুকু ভূমিকা রাখে?
মুরে: আমরা জানি না। এজন্য আমাদের আরো সুনির্দিষ্ট তথ্য লাগবে।

দ্য গার্ডিয়ান: স্বাস্থ্যব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় কর্মী, সরঞ্জামের ঘাটতি এবং চিকিৎসকরা তরুণদের ক্ষেত্রে বেশি নজর দেয়ার কারণে কী তাদের মধ্যে মৃত্যুহার কম?
ব্রিওয়ার: দেশ ভিত্তিতে মৃত্যুহারে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুহার ১.৫ শতাংশের মতো। ইতালিতে ৯ শতাংশের মতো, দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ শতাংশেরও নিচে ও জার্মানিতে ০.৫ শতাংশ। এক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উপর চাপ, জনসংখ্যার বিন্যাসসহ বেশকিছু ব্যাপার কাজ করে। ইতালির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বা দক্ষিণ কোরিয়ার তুলনায় বয়স্কদের সংখ্যা বেশি।

দ্য গার্ডিয়ান: শিশুদের মধ্যে গুরুতর করোনা সংক্রমণ দেখেছেন?
ব্রাচো-সাঞ্চেজ: হ্যা, আমি বেশকিছু শিশুকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তথ্য যেমনটা দেখাচ্ছে, ওই শিশুরা আগ থেকেই জটিল রোগে ভুগছিল। এটা সত্য যে, বেশিরভাগ শিশুর ক্ষেত্রেই আক্রান্ত হওয়ার পর হালকা অসুস্থতা দেখা যায়, তবে কিছু শিশু ও তরুণ প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থতাও দেখা যাবে।

দ্য গার্ডিয়ান: সুস্থ হয়ে উঠা ও গুরুতর আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে সম্ভাব্য প্রভাব কী হতে পারে?
ব্রিওয়ার: এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে আমরা যেমনটা ভেবেছিলাম তার চেয়ে অনেক বেশি সময় লাগে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদে এটা দেখতে হবে। তবে যক্ষ্মার ক্ষেত্রে আমরা একটা বিষয় আমরা জানতে পেরেছি। সেটা হচ্ছে, যক্ষায় আক্রান্তরা সুস্থ হয়ে উঠলেও রোগটি ফুসফুসে অনেকের বড় ধরনের ক্ষতি করে। অবশ্য করোনা ভাইরাস ও যক্ষ্মার প্যাথোজেন সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু করোনার ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপারটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে আমরা ভবিষ্যতে জানতে পারবো।

বিশেষজ্ঞরা: ডা. এডিথ ব্রাচো-সাঞ্চেজ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি-নিউ ইয়র্ক প্রেসবাইটেরিয়ান মরগান স্ট্যানলি চিলড্রেন’স হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক টেলিমেডিসিন বিভাগের পরিচালক ও শিশুরোগ বিষয়ক অধ্যাপক।
ডা. টিমোথি ব্রিওয়ার ইউসিএলএ ফিল্ডিং স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর একজন মহামারী বিষয়ক অধ্যাপক। এছাড়া, তিনি ইউসিএলের ডেভিড গেফেন স্কুল অব মেডিসিনের সংক্রামক রোগ বিভাগের সদস্য।
ডা. ক্রিস্টোফার জে এল মুরে ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশশনের প্রাতিষ্ঠানিক পরিচালক। এছাড়া, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের অধ্যাপক ও  স্বাস্থ্য মেট্রিক্স বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর