বরগুনার আমতলী থানা হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি’র বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পুলিশ। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন- ২০১৩ এর ১৫ ধারায় এ মামলা নেওয়া হয়েছে।
আমতলী থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার (১ এপ্রিল) রাতে বরগুনার পুলিশ সুপারের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের দায়ের করা অভিযোগটি থানায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগ দায়েরকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান মুঠোফোনে বলেন, গত ২৬ মার্চ সকালে আমতলী থানা পুলিশ হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামী শানু হাওলাদারের মৃত্যুর চার দিন অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। এ কারণে দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি লিখিতভাবে পুলিশ সুপারের কাছে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন- ২০১৩ এর ৬ ও ৭ ধারায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আজ বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকালে বরগুনার পুলিশ সুপার তার সরকারি ইমেইল থেকে আমাকে মামলা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ শাহআলম মুঠোফোনে মামলা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান যে অভিযোগ দায়ের করেছেন পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা তা নথিভুক্ত করেছি। মামলাটি বরগুনা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) উপর তদন্তভার দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ বরগুনার আমতলী থানা থেকে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারের (৫৫) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করার ঘটনায় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও এএসআই আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন (পিপিএম)। এ ঘটনার পরের দিন পরিদর্শক মোঃ আবুল বাশারকেও থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
ওই দিন ময়না তদন্ত শেষে রাত ১১টার দিকে শানু হাওলাদারের মরদেহ তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছিল। সেই টাকা না পেয়ে শানুকে নির্যাতন করে মেরে পরিদর্শক (তদন্ত) রুমের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। পুলিশের দাবি, শানু হাওলাদার আত্মহত্যা করেছেন।
বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন (পিপিএম) এ ঘটনা তদন্ত করতে বরগুনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) তোফায়েল আহম্মেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।