করোনাভাইরাস আক্রান্তের চিকিৎসায় ভারত ভরসা রেখেছে ম্যালেরিয়ার ওষুধে। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এক নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এ যাঁরা গুরুতরভাবে ভুগছেন, যাঁদের আইসিইউয়ে রেখে চিকিৎসা করতে হচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়া-রোধী ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনিন এবং অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মিলিত প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে ১২ বছরের কম বয়স হলে এর প্রয়োগ না-করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারই স্বাস্থ্যমন্ত্রক আগে দেওয়া ‘ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট অব কোভিড-১৯’ নামে তাদের নির্দেশিকাটি সংশোধন করেছে। আগের নির্দেশিকায় লোপিনাভির ও রিটোনাভির নামে এইচআইভি-প্রতিরোধী দু’টি ওষুধের মিলিত প্রয়োগের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু নতুন নির্দেশিকায় তা বাদ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, এখনও নোভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট কোনও ওষুধ পাওয়া যায়নি। তবে, নানা ক্ষেত্রে যে সব ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেই সব তথ্যের সর্বশেষ বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এইচআইভি-বিরোধী ওই দু’টি ওষুধ তেমন উল্লেখযোগ্য ফল দিতে পারছে না।
বরং ম্যালেরিয়ার ওই দুই ওষুধের মিলিত প্রয়োগ কার্যকর হচ্ছে। বিশেষ করে আইসিইউয়ে থাকা গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে। সংশোধিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রোগীর অসুস্থতার মাত্রা সামান্য, মাঝারি বা গুরুতর হতে পারে। প্রবল নিউমোনিয়া, তীব্র শ্বাসকষ্ট (এআরডিএস), সেপসিস (যাতে বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হতে থাকে) বা সেপটিক শক (রক্তচাপ মারাত্মক কমে গিয়ে যাতে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে) দেখা দিতে পারে। এমন উপসর্গ যথাসম্ভব আগে চিহ্নিত করে অবিলম্বে ‘সাপোর্টিভ কেয়ার ট্রিটমেন্ট’ ও ‘আইসিএউ’-এ নিতে হবে। আগে থেকে অন্য ক্রনিক অসুখ থাকলে, কোনটির থেরাপি চালাতে বা থামাতে হবে, সে ব্যাপারে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে চিকিৎসকদের। সেইসঙ্গে বলা হয়েছে,
রোগীর অবস্থা, চিকিৎসা কোন পথে চলছে ও কী পর্যায়ে আছে, এই সব তথ্য তাঁর স্বজনদের অবশ্যই স্পষ্ট করে জানাতে হবে। সুস্থ থাকার জন্য পরিজনদেরও কী করণীয়, সে বিষয়েও তাঁদের সচেতন করে যেতে হবে নিরন্তর। ‘লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম’-এ নিতে হলে রোগীর মতামত ও পছন্দকেও বুঝতে হবে চিকিৎসকদের।